ছয় ছক্কায় জয়

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ব্যাটসম্যানদের খেলা সেটা সত্য।

তাই বলে ছয় ছক্কা? ছয় ছক্কা শুনলেই আমাদের মনে পড়ে যুবরাজ সিং এর কথা। এক ওভারে ছয় ছক্কার সেটাই সবচেয়ে বিখ্যাত নজীর। ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের যতই রাজত্ব চলুক তাই বলে ছয়টি বলই সীমানা পার করা তো আর মুখের কথা নয়। তাও সেটা যদি হয় শেষ ওভারে দলকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছয় ছক্কা মারার রেকর্ড আছে দুইবার। ক্লাব ক্রিকেটেও হয়তো কখনো কখনো এমন কীর্তি দেখা যায়। তবে এই পর্যায়ের নাটকীয়তা ছড়ায়নি কখনোই। আইরিশ ক্লাব ক্রিকেটার জন গ্লাস যা করেছেন তা রীতিমত অবিশ্বাস্য।

গল্পটা একটা শুরু থেকে বলা যাক। আয়ারল্যান্ডের একটি ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগ এলভিস টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হয় ব্যালিমেনা ও ক্রেগাহ। ফাইনাল ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের বেশ চাপে রাখতে পেরেছিল দুই দলের বোলাররা। তবে শেষটা যে নিজের নামে লিখেছেন ব্যালিমেনার অধিনায়ক জন গ্লাস।

ক্রেগাহ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বোর্ডে জমা করেছিল ১৪৭ রান। জন গ্লাসের বড় ভাই স্যাম হ্যাটট্রিকও করেন ব্যালিমেনার হয়ে। তবে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা ভালো অবস্থায় ছিল না ব্যালিমেনা। নিয়মিত উইকেট যেতে থাকে একপাশ থেকে। তবে অধিনায়ক জন গ্লাস এক প্রান্তে অটুট থাকেন। তবে ১৯ ওভার শেষে ব্যালিমেনার স্কোর দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১১৩ রান। অর্থাৎ শেষ ৬ বলে দলটির দরকার ৩৫ রান।

শেষ ছয় বলে ছয় ছক্কার মারার রেকর্ড বোধহয় ক্রিকেট ইতিহাসে আর নেই। এছাড়া ব্যালিমেনার সাত উইকেট পড়ে যাওয়ার বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিল ক্রেগাহ। সবাই ধরে নিয়েছিল এই টি-টোয়েন্টি আসরের চ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছে কেগাহই। তবে শেষ ছয়টা বল ছিল শুধু জন গ্লাসের। যেনো ক্রিকেট বিধাতা এই দিনটা তাঁর নামেই লিখে দিয়েছেন। তিনি যাই করবেন তাতেই সোনা ফলবে।

৫১ রানে অপরাজিত অধিনায়ক শেষ ছয়টি বল খেলার জন্য প্রস্তুত হলেন। সবাই যেখানে ফল ক্রেগাহর পক্ষে দিয়ে দিয়েছে তিনি তখনো নিজের উপর আস্থা রেখেছেন। গুনে গুনে ছয়টি বলই সীমানার ওপারে ফেললেন। শেষ ছয় বলের ছয় ছক্কায় খেললেন ৮৭ রানের অপরাজিত এক ইনিংস। দলকেও এনে দিলেন শিরোপা।

ম্যাচ শেষে গনমাধ্যমকে জন গ্লাস বলেন, ‘আমি প্রথম বলে ছয় মারার পর আমার ভাই বলছিল আর মাত্র পাঁচটা বাকি। তারপর আমি প্রতি বলে শুধু চেষ্টা করে গেছি। আমি শট খেলার পর তাকিয়েও দেখিনি সেটা কোথায় গেলো। আমি পরের বলের জন্য প্রস্তুত হয়েছি। এভাবেই ছয়টি বল হয়ে গেলো।’

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link