উঠতি শক্তি ওমান

বছরখানেক আগেও কেউ ভাবতে পেরেছিলো ওমান নামের একটা উঠতি অ্যাসোসিয়েট দেশ, যারা দশবছর আগেও কোনো পাত্তা পেতো না বিশ্বক্রিকেটের নিরিখে তারা ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাবে? সম্ভবত ওমানের ক্রিকেটাররাও ভাবেননি।

ভারতে করোনা পরিস্থিতির অবনতি না হলে যদিও সেই সুযোগ আসতো না। কিন্তু ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলার পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনা এই সুযোগ পেয়ে এবার কী নতুন কোনো রূপকথার রংমশাল জ্বালাতে পারে মধ্যপ্রাচ্চের এই দেশটা?

টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ে ১৮ নম্বরে থাকা দেশটির শেষ চার বছরে ২৪ ম্যাচে ১৩ জয়ের পারফরমেন্স দেখলে খানিকটা আশা অন্তত করতেই পারেন ওমান সমর্থকরা। গতবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে অসাধারণ জয় তুলে নিয়েছিলেন জিশান মাকসুদরা। এবারেও আবার নতুন কোনো চমক কী দিতে পারে ওমান? দেখে নেওয়া যাক।

  • শক্তি

ওমান দলের শক্তি তাদের বেশ ভালো বোলিং অ্যাটাক, বাঁহাতি পেসার বিলাল খান অ্যাসোসিয়েট ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার, গত বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ারে ২০টা উইকেট তুলে নেওয়া বিলাল ঘরের মাঠ আল আমিরাত স্টেডিয়ামেও ভয়ঙ্কর হওয়ার ক্ষমতা রাখেন।

এছাড়া অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার জিশান মাকসুদ ব্যাট ও বল হাতে দলের অন্যতম স্তম্ভ, হাতে বড় শট থাকা মকসুদ কিন্তু নিজের দিনে খেলা ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। মিডল অর্ডারে আকিব ইলিয়াস ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত যতীন্দর সিং এর ফর্ম এই বিশ্বকাপে ওমানের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।

টি-টোয়েন্টিতে অলরাউন্ডার দের বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে চার নম্বরে থাকা খাওয়ার আলী তাঁর ভরসার ব্যাট এবং লেগ স্পিন দিয়ে দলের অন্যতম বড় ভরসা। ওমান দলের একটা সুবিধের জায়গা হলো ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি দলের অনেকেই কাজ চালানোর মত বোলিং টাও করে দিতে পারেন, যা এই ছোট ফরম্যাটে ভীষণ উপযোগী।

দুর্বলতা : ওমান দলের ব্যাটিং চলনসই হলেও জিশান, যতিন্দর বা আকিব ইলিয়াসরা ছাড়া অভিজ্ঞতার অভাব স্পষ্ট। ফলত বড় রান বোর্ডে সাজাতে এঁদের ওপরেই তাকিয়ে থাকতে হবে। লোয়ার মিডল অর্ডারে ভালো ফিনিশারের অভাব সবচেয়ে ভোগাতে পারে ওমানকে। এছাড়া বছর কয়েক আগে স্পিনশক্তি ওমানের যথেষ্টই ভালো ছিল।

নবাগত আয়ান খান, অধিনায়ক জিশান বা খাওয়ার আলী ছাড়া উইকেট টেকিং দারুন কোনো স্পিনার না থাকাও সমস্যা হতে পারে ওমানের। এছাড়া একমাত্র দল যারা এই বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে খেলার সুযোগ পাচ্ছে, এই ঘরের মাঠে খেলার জন্য খানিকটা প্রত্যাশার চাপ এরকম অনভিজ্ঞ দলের কাছে অসুবিধার হয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশ বা স্কটল্যান্ডের মত দলের বিরুদ্ধে চাপের মুখে বরাবরের মত ব্যাটিং ফেল করলে রূপকথার ফানুস চুপসে যেতে পারে ওমানের।

  • ওমান দল ও তাদের সম্ভাবনা

অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশ্রনে তৈরী ওমান দল অভিজ্ঞ আমির কলিম বা অজয় লালচেতাদের মত পোড়খাওয়া ক্রিকেটারদের অভাব অনুভব করতে পারে। খাওয়ার আলী, জিশান মাকসুদ, যতিন্দর সিং বা বিলাল খানরা জ্বলে উঠলে অনেক চমক অপেক্ষা করবে বাকি দলগুলোর জন্য।

এছাড়া মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান খুররাম নাওয়াজ, যিনি গত ৩ বছরে দলের শক্তি অনেকটাই বাড়িয়েছেন, তাঁর দিকেও নজর থাকবে। ওমানকে ভালো ফল করতে হলে খুরামের ফর্ম খুব জরুরি। পাপুয়া নিউ গিনি ও স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় তুলে নিতে পারলে পরের রাউন্ডে গিয়ে নতুন রূপকথা আবার লিখতেই পারে ‘রেড হট’ ওমান ব্রিগেড।

  • ওমান স্কোয়াড

জিশান মাকসুদ (অধিনায়ক), খাওয়ার আলী, যতিন্দর সিং, খুররাম নওয়াজ, সন্দীপ গৌড়, সুরাজ কুমার, ফাইয়াজ বাট, নাসিম খুশি, কলিমুল্লাহ, আকিব ইলিয়াস, বিলাল খান, সুফিয়ান মেহমুদ, মোহাম্মদ নাদিম, আয়ান খান, নেস্টর ধাম্বা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link