ঋদ্ধি-সৌরভ ও স্ক্রিনশট কেলেঙ্কারি
গুঞ্জন ছিলো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ভারতের স্কোয়াডে থাকবেন না ঋদ্ধিমান সাহা। অবশ্য সেই গুঞ্জনই অবশেষে সত্যি হলো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের ঘোষিত স্কোয়াডে নেই সাহার নাম। সাহার জায়গায় দলে জায়গা পেয়েছেন শ্রীকর ভরত। অবশ্য সাহা নিজেও জানতেন তিনি সুযোগ পাবেন না, তাই রঞ্জি ট্রফি থেকেও সরিয়ে নিয়েছিলেন নিজের নাম। তবে সাহার জায়গা না পাওয়ার চেয়েও এখন আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে সাহার পোস্ট করা সেই স্ক্রিনশট!
গুঞ্জন ছিলো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ভারতের স্কোয়াডে থাকবেন না ঋদ্ধিমান সাহা। অবশ্য সেই গুঞ্জনই অবশেষে সত্যি হলো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের ঘোষিত স্কোয়াডে নেই সাহার নাম। সাহার জায়গায় দলে জায়গা পেয়েছেন শ্রীকর ভরত। অবশ্য সাহা নিজেও জানতেন তিনি সুযোগ পাবেন না, তাই রঞ্জি ট্রফি থেকেও সরিয়ে নিয়েছিলেন নিজের নাম। তবে সাহার জায়গা না পাওয়ার চেয়েও এখন আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে সাহার পোস্ট করা সেই স্ক্রিনশট!
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের স্কোয়াডে জায়গা না পাওয়ার পর বিভিন্ন মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দেন সাহা। সেখানে তিনি জানান বর্তমান হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড় তাঁকে অবসরের চিন্তা ভাবনা করতে বলেছেন! সাহার এমন মন্তব্যের সমর্থন দিয়ে দ্রাবিড়ের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়েছেন অনেক বাঙালি সমর্থকরা। সাহার ভাষ্যমতে রাহুল তাঁকে বলেছেন, ‘তুমি অবসর নিয়ে ভাবো। আসন্ন সিরিজগুলোতে তোমাকে বিবেচনা করা হবেনা।’
একই সাথে সাহা এও বলেন বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি তাকে আশ্বস্থ করেছেন জায়গা নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই!
সবশেষ ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে নিজের ভেরিফাইড টুইটার আইডি থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের স্ক্রিনশট শেয়ার করেন সাহা। সেই স্ক্রিনশটটি একজন ক্রীড়া সাংবাদিকের খুদে বার্তার। আর সেই সাংবাদিক নাকি বেশ জনপ্রিয় একজন।
সেখানে লিখা ছিলো, ‘আপনি আমাকে একবার সাক্ষাৎকার দিন। এটা আপনার জন্য ভালো হবে। আমি আপনাকে জোর করবো না। ওরা একজন উইকেটকিপারকে নিয়েছে, যে সেরা উইকেটকিপার। আপনি ১১জন সাংবাদিককে বেছে নেওয়ার চেষ্টা করছেন, যারা আমার মতে সেরা নন। এমন একজনকে বাছাই করুন যে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে।’
এরপর ওই সাংবাদিক সাহাকে ফোন করলেও সেটি ধরেননি তিনি। তখন ক্ষোভে ওই সাংবাদিক পুনরায় মেসেজ দিয়ে সাহাকে বলেন, ‘আপনি কল করলেন না। আমি কখনোই আর আপনার সাক্ষাৎকার নিবো না। আমি অপমান সইতে পারিনা আর আমি এটা মনে রাখবো। এই কাজটা করা আপনার উচিত হয়নি।’
এই কথোপকথনের স্ক্রিনশট নিজের আইডি থেকে শেয়ার করে সাহা লিখেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটে আমার এতো অবদানের পরেও….. একজন তথকথিত সম্মানিত সাংবাদিকের কাছে আমি যা পেলাম। এটাকে নাকি সাংবাদিকতা বলে।’
এই পোস্টের বিপরীতে সাহাকে সমর্থন জানিয়ে টুইট করেন সাবেক তারকা ওপেনার বীরেন্দ্র শেবাগ। তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক। এনাকে সম্মান করা যায় না। ইনি সাংবাদিক নিন, শুধু চামচাগিরি করেন। তোমার সাথে আছি ঋদ্ধি।’
যদিও সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করেননি ঋদ্ধি। তবে ইতিমধ্যেই রাহুল দ্রাবিড়ের এমন মন্তব্য ও ক্রীড়া সাংবাদিকের এমন বক্তব্যে ক্ষোভ ঝেড়েছেন অনেকেই!
সবশেষ গেলো বছর ২০২১ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ঋদ্ধিমান সাহা। নিয়মিত মুখ ঋষাভ পান্ত বিশ্রামে থাকায় অবশ্য সুযোগ পান তিনি। ৩৭ বছর বয়সী এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার ক্যারিয়ারের একদম শেষ দিকেই আছেন। হয়তো ক্যারিয়ারের শেষও দেখে ফেলেছেন!
কোচের বিবেচনাতেই যে তিনি নেই! সাথে সাথে বোর্ড প্রেসিডেন্টের আশ্বাসও ভেস্তে গেলো। সব মিলিয়ে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়েই যাচ্ছেন এই বাঙালি ক্রিকেটার। তরুণ প্রতিভাবানদের ভীড়ে আপাতত জাতীয় দলের স্বপ্নটা ভুলতে পারাই যেন তাঁর জন্য শ্রেয়!
নির্বাচক প্যানেলের প্রধান চেতন শর্মা ৩৭ বছর বয়সী ঋদ্ধিমানকে বাদ দেওয়ার পেছনে কোনো কারণ খোলাসা না করলেও এটুকু স্পষ্ট যে, তারুণ্যের পথেই হাঁটছে ভারত। তিনি বলেন, ‘কারণটা ঠিক স্পষ্ট করে বলা কঠিন। এটা শুধুই নির্বাচকদের ব্যাপার। তবে, তাকে (ঋদ্ধিমান সাহা) আগে থেকেই জানানো হয়েছিল। বয়স এখানে বড় ব্যাপার না। তবে, তরুণদের সুযোগ তো দিতেই হবে।’
ঋদ্ধিমানের আঙুল অবশ্য বোর্ডের দিকেই। আরো স্পষ্ট করে বললে স্বয়ং সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির দিকে। তিনি বলেন, ‘গেল নভেম্বরে যখন নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে কানপুরে পেইনকিলার খেয়ে ৬১ রানের ইনিংস খেললাম, তখন দাদি (সৌরভ গাঙ্গুলি) আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন যে, তিনি যতদিন বোর্ডের ক্ষমতায় আছেন, আমার কোনো সমস্যা হবে না। শুনে আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল আমার। এখন সময় বদলে গেছে, কিভাবে কি হল, জানি না। সারাজীবন তো কেউ খেলবে না।তবে, কাউকে বিদায় জানানোর একটা রীতি আছে। আর আমি তো তাড়িয়ে দেওয়ার মত পারফরম করিনি।’