গ্র্যান্ড ফিনালের চোখের তারা, নজরকাড়া

মহামঞ্চ প্রস্তুত। চার বছরের জন্যে নির্ধারিত হবে ওয়ানডে ক্রিকেটের চ্যাম্পিয়ন। অস্ট্রেলিয়া দাঁড়িয়ে নিজেদের ষষ্ঠ শিরোপার সামনে। ভারতের মিশন তৃতীয় শিরোপা জয়। একদিকে অপ্রতিরোধ্য রোহিত শর্মার দল। অন্যদিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে দারুণ দৃপ্ততায় ফাইনালে উঠেছে প্যাট কামিন্স শিবির।

জম্পেশ এক লড়াইয়ের আভাস ভেসে বেড়াচ্ছে আহমেদাবাদ থেকে ক্যানবেরা অবধি। একটি ম্যাচ, একটি শেষ লড়াই। দুই দলের সেরা খেলোয়াড়দের শেষ নয় তবুও শেষ সুযোগ। আগামী চার বছর ফাইনালের সেরাদেরই বলা হবে চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার।

তাইতো সব খেলোয়াড়ই মুখিয়ে থাকবে দলকে আরও একটি শিরোপা জেতাতে। দর্শকদেরও চোখও অন্বেষণ করে যাবে ‘এক্স ফ্যাক্টর’। ভারত দলে প্রথমের নজরে থাকবেন বিরাট কোহলি। বিশ্বকাপের সময়টা দারুণ কাটাচ্ছেন ‘কিং কোহলি’। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫০ তম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন এবারের বিশ্বকাপেই।

ব্যাট হাতে তিন খানা সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। সর্বোচ্চ রান তার নামের পাশে। আর একটিবার তিনি গগন পানে হাত উঁচু করে ধরবেন সেটাই তো প্রত্যাশিত। আর বিরাটের ব্যাটের কালিতেই লেখা হবে ভারতে বিশ্বজয়ের চিত্রনাট্য। তাইতো বিরাটের কাছ থেকে বাড়তি চাহিদা থাকছেই সকলের।

তার সাথে যুক্ত হবেন মোহাম্মদ সামি। ছয় ম্যাচে যার ঝুলিতে যুক্ত হয়েছে ২৩টি উইকেট। তিনিও রয়েছেন শীর্ষে। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার তিনি। বলটা একটু ধুলোমাটিতে গড়াগড়ি খাওয়ার পরই খুঁজে নেয় সামির হাত। এরপরই তিনি দেখাতে শুরু করেন ভেল্কি। প্রতিপক্ষকে গুড়িয়ে দেন। আবার দলকে কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু এনে দিতেও দেখাচ্ছেন মুন্সিয়ানা।

তবে এদের ভিড়ে একজন একটু আড়ালে থাকছেন। তিনি অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ভারতের এই দলটার এমন দুরন্ত যাত্রার উড়ন্ত সূচনা হয়েছে তার হাত ধরেই। ব্যাটিং ইনিংসের শুরুতেই আগ্রাসনের এক ঝড় তুলে দিচ্ছেন তিনি। তাতে করে ভারতের পরের দিকের ব্যাটাররা স্বচ্ছন্দে ব্যাট চালিয়ে কখনো রান তাড়া করেছেন, কখনো আবার প্রতিপক্ষের হাত থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়েছেন প্রথম ইনিংসেই।

ফাইনালেও তাই তার উড়ন্ত সূচনার দিকেই থাকবে সকলের নজর। এছাড়াও অধিনায়ক হিসেবে অনন্য হওয়ার এই তো সুযোগ। রোহিতের মত অস্ট্রেলিয়ারও প্রয়োজন হবে এক উড়ন্ত সূচনার। সেই দায়িত্বটা ট্রাভিস হেডের হাতেই থাকবে ন্যাস্ত।

এই ওপেনার ইনজুরির কারণে টুর্নামেন্টের অধিকাংশ ম্যাচেই ছিলেন অনুপস্থিত। তবে ফিরেই দাপটের সাথে সেঞ্চুরির পথে হেটেছেন। প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই দলকে দারুণ শুরু এনে দিয়েছেন। হেডের গড়া ভীতের উপর দাঁড়িয়ে থেকে ম্যাচ জেতা সহজ হয়েছে অজিদের।

তাছাড়া সেমিফাইনালে হাত ঘুরিয়ে দলকে ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছেন। আহমেদাবাদের উইকেটে স্পিন ধরার সম্ভাবনাও একেবারেই উড়িয়ে দেওয়ার উপায় নেই। সে বিবেচনায় অস্ট্রেলিয়ার তুরুপের তাস হতে পারেন অ্যাডাম জাম্পা। বিশ্বকাপের শুরুর দিকে একেবারেই ছন্দহীন জাম্পা পরবর্তীতে নিজের স্বরুপে ফিরেছেন।

১০ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে তিনি সামির পেছনেই অবস্থান করছেন। ভারতকে এখনও পর্যন্ত ভরকে দিতে পারেনি কেউ। সেই কাজটা ফাইনালের দিনে নিশ্চিতরুপেই করতে চাইবেন জাম্পা। অন্যদিকে ভারকে বিপাকে ফেলতে পারেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে একাহাতে তিনি ম্যাচ জিতিয়েছিলেন অজিদের। ক্র্যাম্প নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে বাউন্ডারি মেরেছেন পেশির সমস্ত শক্তি ব্যবহার করে। নিজের দিনে ঠিক কতটা বিধ্বংসী হতে পারেন তিনি, সেটা আর নতুন করে বলবার নয়। তাইতো ম্যাক্সওয়েলের দিকেও থাকবে বাড়তি নজর।

এই ছয় ক্রিকেটার কেড়ে নিতে পারেন ফাইনালের সব আলো। নতুন কেউ এসে নিজ দলের শিরোপা জয়ের নায়ক হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এখন স্রেফ অপেক্ষা, ফাইনাল মাঠে গড়ানোর। ওই বাইশ গজই নির্ধারণ করে দেবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ভাগ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link