জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরে আসছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই সিরিজ দিয়েই দীর্ঘ দিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবে বাংলাদেশ। এই সিরিজ দিয়েই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন সাকিব আল হাসানও।
জানুয়ারির প্রথম দিকেই দল ঘোষণা করা হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের জন্য। সদ্য শেষ হওয়া বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে অভিজ্ঞদের সাথে সমান তালে পারফর্ম করেছে তরুণ ক্রিকেটাররা। তাই সবারই আগ্রহ ওয়েস্ট ইন্ডিস সিরিজে কেমন হবে স্কোয়াড। দলে কি তরুণদের দেখা যাবে?
ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর সাথে দল ঘোষণা নিয়ে তরুণদের পারফর্ম ও সুযোগ দেওয়া নিয়ে কথা বলেছেন বিসিবির প্রধাণ নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, এইচপির কোচ টবি রেডফোর্ড ও টাইগারদের হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। তরুণদের নিয়ে সবার কন্ঠেই শোনা গেছে একই সুর। তরুণদের পারফর্মে সবাই মুগ্ধ হলেও তাদের প্রতিভা বিকাশে আরো সুযোগ দেওয়ার পক্ষে সবাই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের স্কোয়াড ঘোষণা নিয়ে প্রধাণ নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন বলেছেন, ‘জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকার কারণে স্কোয়াডে অতিরিক্ত দুজন ক্রিকেটার রাখা হবে। জিম্বাবুয়ে সিরিজে ধারাবাহিকতার কারণে আমরা নতুন মুখ আনতে চাচ্ছি না। তবে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপকে তাৎক্ষণিক সামনে রেখে আমরা কিছু তরুণ ক্রিকেটারকে যাচাই করবো।’
সদ্য শেষ হওয়া বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপে কিছু তরুণের পারফর্মে মুগ্ধ হয়েছেন মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। যাদের অনেকেই ২০২০ সালে এইচপির ক্যাম্পেও ছিলেন। তবে এই সিরিজেই তাদের সুযোগ হবে কিনা এই বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তারা যে পরিকল্পনায় আছে সেটা জানিয়েছেন নান্নু।
মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, ‘জানুয়ারির প্রথম দিকে অনুশীলন শুরু হওয়ার পরই আমরা দল ঘোষণা করবো। করোনার বিষয় মাথায় রেখে আমরা ১৭ সদস্যের দল ঘোষণা করবো। বায়ো বাবলে প্রবেশ করা ও বের হওয়া কঠিন তাই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। ওয়ানডের জন্য টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের পারফর্ম দেখে ক্রিকেটার বাছাই করা কঠিন হবে।’
স্থানীয় ক্রিকেটাররা দীর্ঘ দিন পর টি-টুয়েন্টি খেলতে পেরেছে। অনেকেই প্রথম বার খেলেছে। তারা নির্ভয়ে খেলেছে। এইচপির ক্রিকেটাররা এই টুর্নামেন্টে ভালো করেছে। কে কোন ফরম্যাটে খেলবেন তা আমাদের ঠিক করা আছে।
সেপ্টেম্বরে শ্রীলংকা সফর স্থগিত হওয়ার পর এইচপির ক্যাম্প করা হয়। অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত কয়েক ধাপে হওয়া এইচপির ক্যাম্পে কোচ ছিলেন টবি রেডফোর্ড। লাল বলের বিরুদ্ধে শট নির্বাচন নিয়ে ঐ ক্যাম্পে কাজ করেছিলেন এইচপির কোচ। এছাড়াও তিনি কয়েকজন পেস বোলারকে নিয়েও কাজ করেছিলেন ক্যাম্পে। যাদের অনেকেই বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে মুগ্ধ করেছিলেন তাকে।
তবে তারা মুগ্ধ করলেও এবং প্রস্তুত থাকলেও এখনই তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিবেচোনা না করে তাদের নিয়ে আরো কাজ করা উচিত বলে মনে করেন টবি রেডফোর্ড। তিনি বলেন, ‘কিছু ক্রিকেটার পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। যারা আগামীকালও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারে। ওদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সমস্ত বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে তাদের আরো কাজ করতে হবে ও কৌশলগত ভাবে সচেতন হতে হবে। দুই একজনের জন্য প্রযুক্তিগত কাজের প্রয়োজন হতে পারে। আমরা তিনটি ভিন্ন ফরম্যাটে ভারসাম্য আনতে আশাবাদী।’
মিনহাজুল আবেদিন নান্নু এবং টবি রেডফোর্ডের সাথেই সুর মিলিয়েছেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। তিনিও তরুণদের আরো সময় দেওয়ার পক্ষে। ডোমিঙ্গো বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অনেকেই ভালো পারফর্ম করেছে। শরিফুল ভালো করেছে। ইমন দুর্দান্ত একটি সেঞ্চুরি পেয়েছে। তবে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা এবং ওয়ানডে বা টেস্ট ক্রিকেটের মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে। তাই যে সব তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছে তাদের সময় দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যেনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার সাথে সাথে পারফর্ম করতে প্রস্তুত থাকে এবং বড় দলের বিপক্ষে অবদান রাখতে পারে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ওয়ানডে দলের জন্য যথেষ্ঠ ব্যাকআপ রয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশের হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। এই সিরিজ দিয়েই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন সাকিব আল হাসান। সাকিব না থাকায় মার্চে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে মেহেদী হাসান মিরাজ ও আফিফ হোসেনকে অলরাউন্ডার হিসাবে খেলানো হয়েছিলো। মিরাজকে নিচের দিকে ব্যাটিং ও মাঝখানে অফ স্পিন করার জন্যই নেওয়া হয়। তবে রাসেল ডোমিঙ্গো এবার জোর দিয়েছেন পেসারদের প্রতি। জোরে বল করতে পারে এমন বোলার স্কোয়াডে চাচ্ছেন তিনি।