অবশেষে বাফুফের নিজস্ব অ্যাকাডেমি!

বাফুফের দীর্ঘদিনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বিভিন্ন সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নিজস্ব একটা অ্যাকাডেমি করার। সেই অ্যাকাডেমির জন্য সিলেট বিকেএসপিকে একবার বেছেও নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু বিদেশী কোচরা সিলেটে গিয়ে থাকতে রাজী না হওয়ায় সে প্রকল্প ভেস্তে যায়।

এই নিজস্ব অ্যাকাডেমি গড়ে তোলা নিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কথা চালাচালি, তৎপরতা, ব্যর্থতা চলছে লম্বা সময় ধরে।

বাফুফের দীর্ঘদিনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বিভিন্ন সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নিজস্ব একটা অ্যাকাডেমি করার। সেই অ্যাকাডেমির জন্য সিলেট বিকেএসপিকে একবার বেছেও নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু বিদেশী কোচরা সিলেটে গিয়ে থাকতে রাজী না হওয়ায় সে প্রকল্প ভেস্তে যায়। তারপর থেকে পরিকল্পনাই চলছিলো। অবশেষে বাফুফে নিশ্চিত করলো, আগামী বছরের শুরুতেই কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে তাদের অ্যাকাডেমি।

এই ব্যাপারটা নিশ্চিত করে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ খেলা-৭১ কে বলেছেন, ‘আমাদের অ্যাকাডেমি ভবনের জন্য আমরা আরামবাগের কোথাও একটা ভাড়া ভবন খুজছি। এ জন্য একটা পাঁচ সদস্যের টিম তৈরী করে দেওয়া হয়েছে। তারা তিনটি ভবন দেখে ফেলেছেন। এই মাসের মধ্যে সেটা চূড়ান্ত হবে। এ ছাড়া খেলোয়াড় বাছাইয়ের জন্য ট্যালেন্ট হান্টের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ফলে খুব দ্রুতই আমরা অ্যাকাডেমির কাজ শুরু করতে পারবো।’

আপাতত ভাড়া ভবনেই অ্যাকাডেমি শুরু করতে চায় বাফুফে। আর সেটা করতে চায় তারা আরামবাগে বাফুফে ভবনের আশেপাশেই। এর একটা কারণ আছে। ফুটবল ভবনের পাশে টার্ফ, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, কমলাপুর স্টেডিয়াম। এই তিনটি মাঠের সুবিধাও নিতে চায় বাফুফে। এ ছাড়া বাফুফে ভবনেই তৈরী হচ্ছে অত্যাধুনিক জিমনেসিয়াম। সেটাও অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহার করা হবে।

সোহাগ এই ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করে বলছিলেন, ‘ভবনের সাথে আমাদের নিজস্ব টার্ফ আছে। এটা অ্যাকাডেমি ব্যবহার করতে পারবে। এ ছাড়া কমলাপুর স্টেডিয়াম ও বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম কাছকাছি। এ দুটো মাঠে ওরা ম্যাচ প্র্যাকটিস বা অন্যান্য অনুশীলন করতে পারবে। ভবনে জিমনেসিয়াম থাকছে। সে সুবিধাও নিতে পারবে অ্যাকাডেমি।’

এই অ্যাকাডেমিতে শুরুতে তিনটি উৎস থেকে খেলোয়াড় আসবে। ১৮ থেকে ১৮ বছর বয়সী খেলোয়াড়দের বেছে নেওয়া হবে। প্রথমত সবগুলো বিভাগীয় শহরে ট্যালেন্ট হান্ট হবে। সেখানে জেলা ও বিভাগীয় শহর থেকে আসা ফুটবলারদের মধ্যে থেকে কিছু খেলোয়াড় বেছে নেবেন কোচরা। এদের সাথে যোগ হবে পাইওনিয়ার ফুটবলের সেরা খেলোয়াড়রা। আরও যোগ হবে সদ্য শেষ হওয়া স্কুল ফুটবলের থেকে বাছাই করা খেলোয়াড়রা।

আর এই তিন উৎস থেকে আসা খেলোয়াড়দের নিয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে একটা চূড়ান্ত বাছাই। এখান থেকে ৫০-৬০ জন খেলোয়াড়কে অ্যাকাডেমির জন্য বেছে নিতে চায় বাফুফে। সংখ্যাটায় অবশ্য স্থির থাকবে না তারা। সোহাগ বলছিলেন, কোয়ালিটি খেলোয়াড় যা পাবেন, তারা নিয়ে নেবেন, ‘আমরা কোয়ান্টিটি দেখবো না, কোয়ালিটি দেখবো। যদি ৭০ জন ভালো খেলোয়াড় আসে, তাই নেওয়া হবে। তবে আপাতত আমাদের লক্ষ্য ৫০ থেকে ৬০ জন।’

এই সব খেলোয়াড়ের থাকা-খাওয়া থেকে পড়াশোনা, সবই চলবে এই অ্যাকাডেমিতে। এদের পুরো দায়িত্বই অ্যাকাডেমি নিয়ে নেবে। আর পুরো ব্যাপারটা দেখভালের জন্য থাকবেন বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলি।

স্মলি এই অ্যাকাডেমির জন্য কোচদের বেছে নেবেন। শুরুতে হয়তো এই কোচিং দলের নেতৃত্বে একজন বিদেশী কোচ থাকবেন। বাকী কোচদের দেশ থেকেই বেছে নেওয়া হবে। সোহাগ বলছিলেন, ‘আমরা সাস্টেইনেবল করতে চাই অ্যাকাডেমিকে। ফলে শুরুতেই এক গাদা বিদেশী কোচ নেওয়া হবে, ব্যাপারটা তেমন নয। এখানে হয়তো শুরুতে একজন বিদেশী প্রধাণ কোচ থাকবেন। তার সাথে আমাদের দেশের সেরা কোচরা কাজ করবেন।’

বোঝা যাচ্ছে, অ্যাকাডেমির কাজ শুরুর দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে বাফুফে। এবার আর সিলেট বা বেরাইদ নয়; একেবারে ঢাকার কেন্দ্রেই অ্যাকাডেমির যাত্রা শুরু হবে। এখন এটা টেকসই করার পালা।

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...