ক্রিকেট ময়দানে সহোদররা একসাথে নেমেছেন বহুবার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই রয়েছে বেশ কিছু উদাহরণ। তবে একই ম্যাচে একাধিক সহোদর খেলার ঘটনা বেশ বিরল। এবং সেই বিরল সে ঘটনার সাথে জড়িয়ে আছে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট।
১৯৯৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর, এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব। হারারেতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি টেস্ট ম্যাচে জিম্বাবুয়ের মূল একাদশে থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল একসাথে ‘তিন জোড়া’ সহোদর ভাইয়ের!
সেবার জিম্বাবুয়ের হারারেতে একমাত্র টেস্টে মুখোমুখি হয়েছিল নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে। টসে হেরে প্রথম ব্যাটিং করবার নিমন্ত্রণ পায় জিম্বাবুয়ে। সেই ম্যাচের ফলাফলে লেখা ছিল ড্র। সুতরাং ম্যাচটি ইতিহাসের পাতায় সাদামাটা একটা ম্যাচ হয়েই থেকে যেত। কিন্তু জিম্বাবুয়ের তিন জোড়া সহোদর তা হতে দেননি। তারা বরং ম্যাচটিকে রেখেছেন অমর করে।
জিম্বাবুয়ের ফ্লাওয়ার জুটি তো বেশ প্রসিদ্ধ। একটা লম্বা সময় ধরে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটকে আগলে রেখেছিলেন এই দুইজন। তারা ছিলেন সেদিনের সেই টেস্ট ম্যাচটিতে। এছাড়া, গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ারের ওপেনিং সঙ্গী ছিলেন গ্যাভিন রেনি। সেই গ্যাভিন রেনির ভাই জন রেনি ছিলেন একাদশে। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে খেলেছিলেন তিনি।
এতটুকুতেই বরং রেকর্ড লেখা হয়ে যেতে পারত। কিন্তু না, জিম্বাবুয়ের টিম ম্যানেজমেন্ট অমর এক রেকর্ড গড়বে বলেই যেন ব্রত নিয়েছিলেন। যদিও কখনোই কোন দলের পরিকল্পনা থাকে না বিরল রেকর্ড গড়া। বরং সকলেই চায় ম্যাচ জয়লাভ করতে। তবুও যোগ্যতার বিচারেই এই ভ্রাতৃদয়দের দেওয়া হয়েছিল সুযোগ।
শেষ জোড়া ছিল পল স্ট্র্যাং ও ব্রায়ান স্ট্র্যাং। পল ছিলেন লেগ স্পিনার। অন্যদিকে ব্রায়ান ছিলেন একজন মিডিয়াম পেসার। এই দুই ভাই মিলে সেই টেস্টে নিয়েছিলেন ৮ উইকেট। অবশ্য পলের থেকে ব্রায়ানের উইকেট সংখ্যা ছিল বেশি। ব্রায়ান পাঁচটি উইকেট শিকার করেছিলেন দুই ইনিংস মিলিয়ে।
গ্র্যান্ট দুই ইনিংসেই করেছিলেন সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি থামেন ১৫১ রানে। যদিও অধিনায়ক অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। সেসব ছাপিয়ে তিন জোড়া ভাইয়ের ম্যাচ হিসেবেই সে ম্যাচ স্থান পেয়ে গেছে সময়ের রঙিন পাতায়। আরেকটুর জন্যে চার জোড়া ভাইয়ের ম্যাচ পরিণত হতে পারেনি সেটি।
যদিও ১২ তম খেলোয়াড় হিসেবে ছিলেন অ্যান্ডি হুইলটাল। যিনি ছিলেন মূল একাদশে সুযোগ পাওয়া গাই হুইটালের ভাই। অ্যান্ডি হুইলটাইল নিশ্চয়ই আক্ষেপ করেছিলেন সেদিন। টেস্ট ম্যাচে ১২ তম খেলোয়াড়কেও মাঠে নামতে হয় অনেক সময়।
সে বিবেচনায় ১২ জনের মধ্যে ৮ জন খেলোয়াড়ই ছিলেন সহোদর। সেদিক থেকে চার জোড়া সহোদরের ম্যাচ হিসেবে হারারের সে টেস্ট ম্যাচকে গননা চাইলেই করা যায়।