দিনের শুরুতেই দারুণ আঁটসাঁট বোলিং করে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার দ্বিমুথ করুনারত্নে ও লাহিরু থিরিমান্নেকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। এরপরই উজ্জীবিত বোলিং করা বাংলাদেশের বাঁধন গেল আলগা হয়ে। আর তার সাথে যোগ হলো ফিল্ডিং মিস ও ক্যাচ মিসের হতাশা।
আর সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে প্রথম টেস্টে শত রানের জুটি গড়ার পর আজ উদ্বোধনী জুটিতে ২০৯ রান যোগ করেন শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার। রেকর্ড জুটি গড়ার পথে সেঞ্চুরি পেয়েছেন দুজনই। দুই ওপেনারের জোড়া সেঞ্চুরিতেই দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন নিজেদের করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
আর ক্যাচ মিস ও ফিল্ডিং মিসের খেসারাত দিয়ে পুরো দিনই হতাশায় কাটিয়েছে বাংলাদেশ। সারা দিনে শ্রীলঙ্কার মাত্র এক উইকেট তুলে নিতে পেরেছে সফরকারী বোলাররা। প্রথম দিন শেষে ঐ এক উইকেট হারিয়েই ২৯১ রান সংগ্রহ করেছে স্বাগতিকরা।
গত টেস্টের মতো এই টেস্টেও পালেকেল্লের উইকেটে ঘাস ছিল না; উইকেট ছিল ব্যাটিং সহায়ক। তবে বোলিংয়ে উজ্জীবিত শুরু করে বাংলাদেশ। ইনিংসের শুরুতেই শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার থিরিমান্নে ও করুনারত্নেকে অস্বস্তিতে ফেলেন বাংলাদেশের বোলাররা।
ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই করুনারত্নের বিপক্ষে দুটি এলবিডব্লিউর আবেদন করেন তাসকিন আহমেদ। দুটি আবেদনই নাকচ করে দিলেও দিনের প্রথম ঘন্টায় এই দৃশ্য দেখা গেছে আরো অনেক বার। কিন্তু ভালো বল করেও উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা।
উইকেট না পেলেও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আবু জায়েদ রাহি, তাসকিন আহমেদ, ও শরিফুল ইসলামরা প্রথম ঘন্টায় ১৪ ওভারে দেন মাত্র ২২ রান। তবে বল পুরোনো হওয়ার সাথে সাথেই স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করতে থাকেন শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার।
দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশের বোলারদের হতাশ করে কোন উইকেট না হারিয়ে ৬৬ রান করে মধ্যাহ্নভোজে যায় শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটসম্যানই অপরাজিত থাকেন ৩২ রান করে। তবে প্রথম সেশনে দুই ব্যাটসম্যানকেই আউট করার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ।
প্রথমে তাসকিন আহমেদের বলে মিড অফে মুমিনুল হক করুনারত্নের ক্যাচ ছাড়ার পর তাসকিনের পরের ওভারে আবার করুনারত্নের ক্যাচ ফেলে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর তাসকিনের বলেই বেঁচে যান থিরিমান্নে। এবার ক্যাচ মিস করেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
দিনের প্রথম সেশন হতাশায় কাটার পর দ্বিতীয় সেশনও হতাশায় কেটেছে বাংলাদেশের। এই সেশনের পুরোটা সময়ও রাজত্ব করেছেন দুই ওপেনার। দিনের দ্বিতীয় সেশনে শ্রীলঙ্কা যোগ করে আরো ১২২ রান। দ্বিতীয় সেশনে সেঞ্চুরি তুলে নেন আগের ম্যাচের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান করুনারত্নে আর সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকেন থিরিমান্নে।
তবে দিনের শেষ শেসনে শুরুতেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। সেঞ্চুরিয়ান করুনারত্নেকে ফিরিয়ে দেন অভিষিক্ত পেসার শরিফুল ইসলাম। শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ফিরে যান ১১৮ রান করে।
করুনারত্নে ফিরে যাওয়ার পর সেঞ্চুরি তুলে নেন থিরিমান্নেও।
এর পর আর উইকেট পায়নি বাংলাদেশের বোলাররা। ফার্নান্দোকে নিয়ে দিনের শেষ সেশন কাটিয়ে দেন লাহিরু থিরিমান্নে। দ্বিতীয় উইকেটে জুটিতে ৮২ রান যোগ করেন দুজন। থিরিমান্নে ১৩০ ও ফার্নান্দো ৪০ রান করে অপরাজিত থাকেন।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর: (প্রথম দিন শেষে)
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ২৯১/১ (ওভার: ৯০; করুনারত্নে- ১১৪, থিরিমান্নে- ১৩০*, ফার্নান্দো- ৪০*; শরিফুল- ১৬-৩-৫১-১)