শর্ট লেগের বলটা ব্যাটের একেবারে মাঝ বরাবরই লাগলো। এরপর তা ফাইন লেগ অঞ্চল দিয়ে গিয়ে ছিটকে পড়লো গ্যালারীতে। কুইন্টন ডি কক পৌঁছে গেলেন তিন অংকের সেই ম্যাজিকাল ফিগারে। আরও একটি শতক লেখা হয়ে গেল ডি ককের নামের পাশে। তবে এটাই যে প্রথম নয়। এই নিয়ে গুণে গুণে চার খানা শতক জমা পড়লো ডি ককের ঝুলিতে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা একপ্রকার সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলবার। তেমন ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। আগে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ের নিমন্ত্রণ দেন টম লাথাম। ব্যাস! প্রোটিয়া ব্যাটারদের আর থামায় কে!
শুরুটা একটু স্লথ গতিতেই হলো। ৩৮ রানের উদ্বোধনী জুটির পর রান তোলার গতিতে একটু ভাটা পড়লো। তবে তখনও যে ইন ফর্ম ব্যাটার কুইন্টন ডি কক ছিলেন উইকেটের এক প্রান্তে। আরেক প্রান্তে আবার রসি ভ্যান ডার ডুসেন। তাইতো কোন রকম শঙ্কাই ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার।
দু’জনই যে ভীষণ ধারাবাহিক। তাদের ধারাবাহিকতার আবার নিজস্ব প্রতিযোগিতাও হতে পারে। সেখানে আবার উপরের দিকেই থাকবেন কুইন্টন ডি কক। এবারের বিশ্বকাপে এখন অবধি তিন খানা সেঞ্চুরি নিয়েই ব্ল্যাকক্যাপসদের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন ডি কক।
মনের গহীনের নিশ্চয়ই কুমার সাঙ্গাকারাকে ছাপিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। ২০১৫ বিশ্বকাপে চারটি সেঞ্চুরি করেছিলেন লংকান উইকেটরক্ষক ব্যাটার। সে রেকর্ডটা ছুঁয়েই ফেললেন কুইন্টন ডি কক। সে যাত্রায় তিনি একেবারে তুলোধুনোই করেছেন নিউজিল্যান্ডের বোলারদের।
অন্যসব শতকের মত অবশ্য আগ্রাসন ততটা ছিল না এই ইনিংসে। তবুও ১০টি বাউন্ডারির পাশাপাশি ৩টি সুবিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছেন ডি কক। ১১৬ বলে ১১৪ রানে থামতে হয়েছে তাকে। এর আগে খেলা দুই বিশ্বকাপে কোন সেঞ্চুরি না করা বা-হাতি এই ব্যাটার এই বিশ্বকাপেই করে ফেলেছেন ৪টি সেঞ্চুরি।
এখনও অবশ্য নিদেনপক্ষে তিনখানা ম্যাচ খেলার সুযোগ রয়েছে ডি ককের সামনে। রোহিত শর্মাকে টপকে যেতে তার প্রয়োজন স্রেফ আর দুইটি শতক। ফর্ম বিবেচনা যা একেবারেই অসম্ভব কিছু নয়। তাছাড়া এবারের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহাক হওয়াটা প্রায় অবধারিত।
নিজের শেষ বিশ্বকাপে একটা রেকর্ড গড়ে নিশ্চয়ই যেতে চাইবেন ডি কক। ইতিহাসের পাতায় নিজের একটা ছাপ ফেলে রেখে যেতে বদ্ধপরিকর। তাতে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকারও উপকার অনেকাংশেই। নিজেদের বিশ্বকাপ খরা কাটানোর আরও একটি সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে ক্রমশ। কুইন্টন ডি কক-রা প্রোটিয়াদের শিরোপা জয়ের সেই স্বপ্নটাকে আরও খানিকটা ঘনিভূত করছেন।
শেষবেলায় ছয়খানা সেঞ্চুরির সাথে স্বর্ণালী সেই শিরোপা আকাশের দিকে উঁচু করে ধরতে নিশ্চয়ই চাইবেন কুইন্টন ডি কক। সেজন্য অবশ্য সেমিফাইনাল আর ফাইনালেও জ্বলে উঠতে হবে তাকে। যে আগুনে তিনি ভষ্ম করেছেন সকল প্রতিপক্ষকে, সেই আগুনটায় জ্বালানি ঢেলে প্রস্তুত হতে হবে শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে।