হুট করেই জাতীয় দলে, কে এই হাসান মুরাদ?

বিশ্বকাপের দু:খস্মৃতি ঝেড়ে ফেলে নতুন করে শুরু করতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। নতুন শুরুটা হচ্ছে আবার সাদা পোশাকে। শুভ্রতায় শুরু আবার হচ্ছে আরও একজনের। তিনি হাসান মুরাদ। প্রথমবারের মত ডাক এসেছে তার জাতীয় দলে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজের জন্যে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাকে।

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগতে পারে কে এই হাসান মুরাদ? জাতীয় দলের ভাল-খারাপে সীমাবদ্ধ অনেকেই হয়ত তাকে চিনবেন না বা চিনছেন না। সেটাও স্বাভাবিক, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে আলোচনাও তো হয় না খুব একটা। স্রেফ আম্পায়ারদের বিতর্কে মাঝে মধ্যেই উত্তপ্ত বাক্যের ছড়াছড়ি হয় ক্রিকেট পাড়া জুড়ে।

তাছাড়া হাসান মুরাদও যে খুব বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছেন তেমনটি নয়। তিনি খানিকটা নিশ্চুপ ভঙ্গিমায় সাদা পোশাকে ঘরের ক্রিকেটে দিন পার করছিলেন। সেখানে তার পরিসংখ্যান অবশ্য ভরসা জাগানিয়া। এখন পর্যন্ত ২৬ ম্যাচে তার শিকার ১৩০টি উইকেট।

সেটাই বরং তাকে টেস্ট দলে জায়গা করে নিত সবচেয়ে বেশি উদ্বুদ্ধ করেছে। তবে হুট করেই হাসান মুরাদ টেস্ট দলে ডাক পেয়ে গেলেন তেমনটি অবশ্য ভাববার সুযোগ নেই। তিনিও সেই ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য। তার বহু সতীর্থ ইতোমধ্যেই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন, এবার তার পালা।

যদিও সেই বিশ্বকাপে মুরাদ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন মোটে দুই ম্যাচে। যুবাদের বিশ্বকাপে দুইটি উইকেট শিকার করতে পেরেছিলেন তিনি। সাফল্যের মানদণ্ডে যা নিশ্চয়ই সন্তোষজনক নয়। তবে তার প্রতি আস্থা ছিল। তাইতো দীর্ঘদিন ধরেই তিনি জাতীয় দলের প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিলেন। জাতীয় দলের বাইরে থাকা খেলোয়াড় গড়ে তোলার প্রোগ্রামগুলোতে তিনি ছিলেন নিয়মিত মুখ।

এমনকি বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে শেষ হওয়া এশিয়ান গেমসেও তিনি বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেদিক থেকে অবশ্য জাতীয় দলের অভিষেকটা হয়েই গেছে হাসান মুরাদের। তবে সেখানেও সাফল্যের খাতায় পড়েনি কোন কলমের দাগ। দুই ম্যাচের মধ্যে এক ইনিংসে বল করে তিনি ছিলেন উইকেট শূন্য।

সাদা বলটা ঠিক জমে না তার হাতে। তিনি বরং লাল বলেই ম্যাজিক দেখাতে জানেন সবচেয়ে বেশি। উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে চলমান জাতীয় ক্রিকেট লিগের সর্বশেষ ম্যাচ। সেখানে তিনি রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে খেলেছেন। মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্তর মত ব্যাটারদের বিপক্ষে তিনি দূর্দান্ত বল করে গেছেন।

নির্দিষ্ট চ্যানেলে ক্রমাগত বল করে নাভিশ্বাস তুলেছিলেন শান্তর। প্রথম ইনিংসে মুশফিকুর রহিমকে ফিরিয়েছেন শূন্যরানে। তাও আবার বোল্ড আউট করে। দ্বিতীয় ইনিংসেও দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটারের উইকেট বাগিয়েছেন হাসান মুরাদ। সব মিলিয়ে সেই ম্যাচে একাই শিকার করেছেন ৯ উইকেট।

চোটের কারণে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট দলে থাকছেন না সাকিব আল হাসান। তার অবর্তমানে দলে প্রয়োজন হবে একজন বা-হাতি স্পিনারের। সে অভাব পূরণে দারুণ সংযোজন হতে পারেন হাসান মুরাদ। যদিও স্কোয়াডে তাইজুল ইসলামের মত অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছেন।

সেদিক বিবেচনায় আরও খানিকটা সময় নেওয়া যেতেই পারে মুরাদের জন্যে। ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অনেকেই তো জাতীয় দলের সীমানা পেরিয়েছেন। তবে সকলে আর নক্ষত্র হতে পারলেন কই!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link