ডারবানে সেঞ্চুরি। এরপর খানিকটা হারিয়ে যাওয়ার মিছিলে শামিল হওয়ার উপক্রম। মাহমুদুল হাসান জয়ের একটু হলেও ছন্দচ্যুতি। চার ইনিংসে তিনি ফিরেছেন শূন্য রানে। টুকটাক রান অবশ্য এসেছে তার ব্যাট থেকে। তবে সেসব কখনোই হয়নি খুব একটা বড়।
মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বড় ইনিংসের স্বপ্ন জাগিয়েছিলেন জয়। তবে সেটাও থেমেছে ৭৬ রানে। বড় রান করবার ক্ষুধা তো সবার মাঝেই থাকে। জয়ও সে ব্যতিক্রম হবেন কেন। তবে টেস্ট ক্রিকেটের সেঞ্চুরি থমকে গিয়েছে একটিতেই।
তবে সিলেটে যেন দৃঢ়তার পরিচয় দিতে চাইলেন। নতুন এক ব্যাটিং গদ্য লিখতে চাইলেন। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের ভয়ে দমে যেতে চাইলেন না। অপরপ্রান্তে উইকেট পতন হচ্ছে, আগ্রাসী ব্যাটিং করেছেন অধিনায়ক। তবে সত্যিকার অর্থেই যেন টেস্ট টেম্পারমেন্টের প্রতীক হয়ে রইলেন জয়।
ব্যাটিং করেছেন লম্বা সময় ধরে। স্পিনারদের ঘূর্ণি, পেসারদের শরীর ঘেষা বাউন্সার ঠান্ডা মাথায় সামলেছেন। আকাশী নীলের নিচে দাঁড়িয়ে শুভ্রতার গল্প বলতে চাইলেন। তাতে একটা পর্যায় নিজের ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি অবধি পৌঁছে যান তিনি।
এজাজ প্যাটেলের ওভারপিচ করা বলটা দারুণ এক কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারি লাইনে পাঠান জয়। তাতেই আরও একটি পঞ্চাশ রান যুক্ত হয় জয়ের ক্যারিয়ারের পাতায়। আরও একবার সেঞ্চুরির হওয়ার আশা। তবে এবারও একরাশ হতাশাই উপহার দিলেন মাহমুদুল হাসান জয়।
দারুণ খেলতে থাকা ইনিংসটি থমকে যায় ৮৬ রানের মাথায়। ১৬৬ তম বলে তিনি ইশ সোদির উইকেট পরিণত হন।ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জয়। ইশ সোদি বেশ লম্বা সময় ধরেই জয়কে অস্বস্তিতে রেখেছিলেন। তবুও জয় টুকটাক রান বের করে নিয়ে তার ইনিংস বড় করবার পথেই ছিলেন।
ইনিংস জুড়ে বেশ দায়িত্বশীল ব্যাটিংই প্রদর্শন করেছেন মাহমুদুল হাসান জয়। নিজের স্নায়ুকে বেশ নিয়ন্ত্রণেই রেখেছিলেন তিনি। প্রায় ছয় ঘন্টা সময় কাটিয়েছেন তিনি বাইশ গজে। দলকে একটা বড় সংগ্রহের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষটায় লেখা হয়নি নতুন কোন জয়গান।
ক্যাচ নিয়ে মৃদু শঙ্কা অবশ্য জেগেছিল। ড্যারিল মিশেল ঠিকঠাক ক্যাচ লুফে নিয়েছিলেন কিনা তা দেখতে শরণাপন্ন হতে হয়েছে তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে। তবে তাতে বদলায়নি জয়ের ভাগ্য। আক্ষেপ নিয়েই ফিরতে হয়েছে তাকে প্যাভিলনে।
আরও একটিবার শতকে কাছে গিয়ে ফিরতে হলো তাকে। কিঞ্চিৎ মনোযোগের ঘাটতিই তাকে বঞ্চিত করেছে জয়কে। তবে তিনি অবশ্য আশার বাণীই শুনিয়ে গেলেন এই তরুণ ব্যাটার। অন্তত টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ওপেনিং নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
সময় গড়ানোর সাথে সাথে আরও বেশি পরিণত হয়ে উঠবেন জয়, জাকির হাসানরা। তাতে করে অন্তত সাদা পোশাকে শুরুটায় নির্ভার থাকতে পারবে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে গোটা পৃথিবীই তো অনিশ্চিত। সেখানে জয়কে নিয়ে প্রত্যাশার সফলতাও তো অনিশ্চিত।