হেরে হেরে রেকর্ড গড়ি

শচীনের রেকর্ডকে কেই-বা ছাপিয়ে যেতে চাইবেন না। এই সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপেই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি সংখ্যায় শচীনকে টপকে গেলেন বিরাট কোহলি। তবে তাঁর এমন একটি রেকর্ডও ছিল, যেটি কেউ টপকে যেতে চাইতেন না!

ভারতীয় ক্রিকেটের এ লিটল মাস্টার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন, সময়ের হিসেবে তা প্রায় এক দশক গড়িয়েছে। দীর্ঘ এ সময়কালে শত সেঞ্চুরির মালিক বিব্রতকর এক রেকর্ডে জড়িয়ে ছিলেন। মিরপুর টেস্টের পর তাঁকে সেই রেকর্ড থেকে মুক্তি দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।

সেটি হচ্ছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারের রেকর্ড। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসে মুশফিকুর রহিমই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হেরেছেন। এর আগে যে রেকর্ডটি ছিল শচীন টেন্ডুলকারের।

ঘরের মাঠে বছরের শেষটা বাংলাদেশের হয়েছে হার দিয়ে। আর কিউইদের বিপক্ষে এ পরাজয়ের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ারে ২৫৭তম হার দেখেছেন মুশফিকুর রহিম। এর আগ পর্যন্ত ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে তিনি এই রেকর্ড ভাগাভাগি করছিলেন।

বর্তমান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে মুশফিকের অভিষেকই সবার আগে—২০০৫ সালে। ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ইতিহাসে তিন সংস্করণ মিলিয়ে মুশফিকই ম্যাচ খেলেছেন সবচেয়ে বেশি ৪৫৫ টি ম্যাচ।

বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার কারণে খুব স্বাভাবিকভাবেই পরাজয়ের স্বাক্ষী মুশফিকেরই সবচেয়ে বেশি দেখার কথা। ঘটেছেও ঠিক সেটাই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ২৫৭ ম্যাচ হেরেছেন মুশফিক— যা বাংলাদেশ তো বটেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসেও  এত বেশি ম্যাচ হারেননি আর কেউ।

৬৬৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে শচীন টেন্ডুলকার তাঁর ক্যারিয়ারে হার দেখেছেন ২৫৬টিতে। মুশফিক ও শচীনের পর ক্রিকেটের সব সংস্করণ মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারার তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে। ৬৫২ ম্যাচে তিনি পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছেন ২৪৯ টি ম্যাচে।

এ তালিকায় পরের তিনটি নাম ক্রিস গেইল, সনাথ জয়াসুরিয়া ও সাকিব আল হাসান। ক্রিস গেইল ৪৮৩ ম্যাচে ২৪১, জয়াসুরিয়া ৫৮৬ ম্যাচে ২৪০ আর সাকিব ৪৩০ ম্যাচে ২৩৪ বার পরাজয়ের সাক্ষী হয়েছেন।

হেরে যাওয়া ম্যাচে মুশফিক অবশ্য একটি মাইল ফলকও ছুঁয়েছেন। শচীন টেন্ডুলকারের পর তিনিই ইতিহাসের একমাত্র ব্যাটার যিনি হেরে যাওয়া ম্যাচ ৮ হাজার রানের মাইল ফলক পেরিয়েছেন।

বাংলাদেশের হয়ে হেরে যাওয়া ২৫৭ ম্যাচে ৩১৩ ইনিংসে ২৯বার ক্রিজে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। এ সময়ে ৯ সেঞ্চুরিসহ ৪৪ টি ফিফটিতে ২৯.০৬ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ৮২৫৫ রান। আর টেন্ডুলকারের হেরে যাওয়া ২৫৬ ম্যাচে ৩৪.৬৫ গড়ে তাঁর রান সংখ্যা ১০৬৭৩। এ সময়ে ২৫ সেঞ্চুরিসহ ৫৩টি ফিফটি হাঁকিয়েছিলেন তিনি।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link