ক্রিকেট দুনিয়া প্রতি মুহূর্তেই বিস্মিত করে চলেছে সবাইকে। কিংবদন্তি সব ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ারের গল্পে বিমোহিত সবাই। তাদের ক্ষেত্রেও ঘটে গেছে বিচিত্র সব ঘটনা। এই যেমন, কোন এক খেলোয়াড়ের যখন অভিষেক হয়, তখন অনেক খেলোয়াড়দেরই হয়নি জন্ম। তবে ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় তেমনই বেশ কয়েকজন একসাথে মাঠে নেমেছেন। সেই গল্পগুলোই থাকছে আজ।
- জাভেদ মিয়াঁদাদ ও সাকলাইন মুশতাক (পাকিস্তান)
পাকিস্তানের পেস স্বর্গে জন্ম নেওয়া এক ব্যাটিং দানব জাভেদ মিয়াঁদাদ। প্রায় ২১ বছর ধরে তিনি সার্ভিস দিয়ে গেছেন পাকিস্তানকে। শুরুটা করেছিলেন সাদা পোশাকে ১৯৭৫ সালে। এরপর ১৯৯৬ বিশ্বকাপ দিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের সমাপ্তি রেখা টানেন তিনি।
সেই টুর্নামেন্টে মিয়াঁদাদের সতীর্থ ছিলেন সাকলাইন মুশতাক। মিয়াঁদাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেকের আরও বছর খানেক পরে গিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন মুশতাক। তবে ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় সেই মুশতাককেই সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন মিয়াঁদাদ।
- শচীন টেন্ডুলকার ও মোহাম্মদ শামি (ভারত)
ব্যাটিং শ্রেষ্ঠত্বে জাভেদ মিয়াঁদাদকে যোজন যোজন পেছনে ফেলেছেন শচীন টেন্ডুলকার। তারও ক্যারিয়ারের বিস্তৃতি বিশাল বড়। প্রায় ২৪ বছর দীর্ঘায়িত হয়েছে শচীনের ক্যারিয়ার। এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বহু সতীর্থের সাথেই ক্রিকেটের সবুজ ময়দান ভাগাভাগি করেছেন ‘লিটন মাস্টার’।
তেমনই একজন মোহাম্মদ শামী। ২০১৩ সালে নিজের ক্যারিয়ারের ১৯৯ ও ২০০ তম টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। সেই সিরিজেই অভিষেক হয় মোহাম্মদ শামীর। অথচ শচীনের অভিষেকের এক বছর বাদে জন্মেছিলেন মোহাম্মদ শামী। ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বরে জন্মেছিলেন ভারত ডানহাতি এই পেসার।
- ইমরান খান ও আকিব জাভেদ (পাকিস্তান)
১৯৯২ বিশ্বকাপটা পাকিস্তান নিজেদের করে নিয়েছিল। পেছনে কারিগর হিসেবে কাজ করেছিলেন ক্যারিশম্যাটিক ইমরান খান। তার নেতৃত্বেই ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। শেষ অবধি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সম্মানের শিরোপাও দখলে নেয় দলটি। সেই দলে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হিসেবে ছিলেন স্রেফ ইমরান ও মিয়াঁদাদ।
ওয়াকার ইউনুসের পরিবর্তে পাকিস্তানের সেই বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছিলেন আকিব জাভেদ। ইমরান ও আকিব মিলে পাকিস্তানের পেস আক্রমণ সামলেছেন কাঁধে কাঁধ রেখে। তবে ইমরানের অভিষেকের সময় জন্মই হয়নি আকিবের। ১৯৭১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদার্পণ করেন ইমরান খান। অন্যদিকে, আকিবের জন্ম হয় ১৯৭২ সালে।
- জেমস অ্যান্ডারসন ও রেহান আহমেদ (ইংল্যান্ড)
বিধ্বংসী পেসার হয়েই ক্রিকেট বিশ্ব মাতিয়ে রেখেছেন জেমস অ্যান্ডারসন। বয়স বাড়লেও তার বোলিংয়ের ধার কমেনি। ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের জন্যেও দলে ডাক পেয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, রেহান আহমেদ তরুণ এক লেগ স্পিনার। তিনিও রয়েছেন একই সিরিজে।
তাদের সামনে সুযোগ রয়েছে একই সাথে মাঠ মাতানোর। ভারতের বিপক্ষে কোন এক টেস্টে দেখা যেতে পারে তাদেরকে একসাথে। এই তালিকায় বাকিদের মতই রেহান পৃথিবীর আলো দেখেননি যখন অভিষেক ঘটে অ্যান্ডারসনের। ২০০৪ সালে জন্মেছিলেন রেহান আহমেদ। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অ্যান্ডারসনের যাত্রা শুরু হয় ২০০২ সালে।
- উইলফ্রেড রোডস ও বিল ভোস (ইংল্যান্ড)
উইলফ্রেড রোডসের অভিষেকের বছর দশক বাদে গিয়ে জন্মেছিলেন বিল ভোস। অথচ এই দুইজনও একসাথে খেলেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে। ৫২ বছর বয়সে নিজের শেষ টেস্ট ম্যাচটি খেলেছিলেন উইলফ্রেড রোডস। সেই ম্যাচে রোডসের সতীর্থ ছিলেন বিল ভোস।
রোডসের অভিষেক ঘটে ১৮৯৯ সালে। অন্যদিকে, ভোসের জন্মই হয়েছিল ১৯০৯ সালে। তবুও ক্রিকেটীয় পরিক্রমায় এই দুই ক্রিকেটার একই সাথে খেলেছেন টেস্ট ম্যাচ। ১৯৩০ এর দশকে ভোস রীতিমত ছিলেন আতংকের নাম। নতুন বলে দুর্ধর্ষ বোলিংয়ের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছিলেন ভোস।