ইনজুরির থাবায় কাবু না হয়ে গেলে মাশরাফি বিন মর্তুজা হতে পারতেন ‘গ্লোবাল স্টার’। বাংলাদেশ ক্রিকেট পাড়ায় এই কথাটা বেশ প্রচলিত। তরুণ মাশরাফির গতির সাথে ছিল বুদ্ধিদীপ্ততা। ঠিক সে কারণেই ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ থেকে ডাক এসেছিল তার।
তবে সে যাত্রাটা হয়নি মোটেও সুখকর। এক ম্যাচ খেলেই থেমে গিয়েছিল মাশরাফির আইপিএল ক্যারিয়ার। পেছনের কারণ ছিল, অভিষেক ম্যাচেই বল হাতে বাজে পারফরমেন্স। ২০০৯ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন মাশরাফি।
কোটার চার ওভার শেষে মাশরাফির নামের পাশে ছিল ৫৮ রান। তার থেকেও দৃষ্টিকটু বিষয়- তিনি ছিলেন উইকেট শূন্য। এরপরই মাশরাফির উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলে কলকাতার টিম ম্যানেজমেন্ট। আর কখনোই মাশরাফি আইপিএলের মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করবার সুযোগ পাননি।
তবে আইপিলের অভিষেক ম্যাচে যে মাশরাফি একাই খারাপ বোলিং করেছিলেন বিষয়টি তেমন নয়। এই তো ২০২৪ আইপিএলে অভিষেক ম্যাচে সবচেয়ে বাজে বোলিং ফিগারের মালিক বনে গেলেন এক প্রোটিয়া ক্রিকেটার। নাম তার কোয়েনা মাফাকা।
২০২৪ আইপিএলের ঠিক আগেই তিনি অংশ নিয়েছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে রীতিমত মাঠ মাতিয়েছেন। প্রোটিয়াদের যুব দলের হয়ে উইকেট শিকারের সম্মুখভাগেই ছিল তার অবস্থান। টুর্নামেন্ট শেষ করেছিলেন তিনি সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার হিসেবে।
সেমিফাইনালে থেমে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২১ উইকেট নিজের করে নিয়েছিলেন মাফাকা। খেলেছিলেন ৬ ম্যাচ। স্বাভাবিকভাবেই নিজের উইকেট শিকারি সক্ষমতায় নজর কেড়েছিলেন তরুণ এই বোলার। এমনকি নিয়মিত ১৪০ কিলো/ঘন্টা গতিতে বল করে তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন।
তাইতো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স তাকে দলে ভেড়ায়। যদিও শুরুতে তিনি মুম্বাইয়ের স্কোয়াডে ছিলেন না। শ্রীলঙ্কার দিলশান মাদুশাঙ্কা ইনজুরি আক্রান্ত হয়ে যান আইপিএল শুরুর আগে। তার বদলি হিসেবেই মাফাকাকে দলে নেওয়া হয়। বা-হাতি এই পেসার নিজের অভিষেক ম্যাচে ৬৬ রান হজম করেছেন চার ওভারে। যা আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
এমনকি বিদেশি কোন বোলার হিসেবে আইপিএলের মঞ্চে সর্বোচ্চ রান হজম করা বোলার এখন তিনি। মাফাকার হয়ে যায় নিদারুণ ‘রিয়ালিটি চেক’। মাফাকার পরের অবস্থানে রয়েছেন অজি ক্রিকেটার মাইকেল নেসার। তিনি ২০১৩ সালে প্রথমবারের মত আইপিএল খেলতে নামেন।
সেবার তাকে দলে ভিড়িয়েছিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। তাদের হয়ে প্রথম ম্যাচেই অসহ্যকর এক সময় পার করতে হয়েছে নেসারকে। তিনি নিজের চার ওভারে হজম করেছিলেন ৬২ রান। যা কি-না আইপিএলের অভিষেক ম্যাচে হজম করা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান।
অর্থাৎ কলুষিত এক রেকর্ডে যে স্রেফ মাশরাফি একাই রয়েছেন তেমনটি নয়। তার সামনে রয়েছেন আরও দুইজন। তবে মাইকেল নেসার ও মাশরাফির হয়েছিল একই দশা। এক ম্যাচেই ইতি ঘটে তাদের আইপিএল ক্যারিয়ারের। মাফাকার নিশ্চয়ই এক ম্যাচে থামবে না ক্যারিয়ার। বয়সটা যে ভীষণ অল্প।