একটু আগেই আইসক্রিমওয়ালা চাকা লাগানো ঠেলাগাড়ি করে ‘আইসক্রিম আইসক্রিম’ হাঁকতে হাঁকতে চলে গেল। আট আনার কয়েন নিয়ে অরেঞ্জ চাইলাম, পেলাম না, শেষ হয়ে গেছে।
রোদ্দুরে তেষ্টা বেড়ে গেছে। সকাল এগারোটা। ঝিলঝিল করছে কেবল লাইন। লাইন যাবার আগে দেখছিলাম শহীদ আফ্রিদি, আব্দুল রাজ্জাক বা মোহাম্মদ সামিদের পেটাচ্ছিলো ঝাড়খণ্ডের মহেন্দ্র সিং ধোনি।
স্কুল নেই। সেজো মামা আর বাবা দুজনেই কাজের জন্য বাইরে। মা রান্নায় ব্যস্ত। কেবল লাইন যাবার আগে অবধি ধোনিও ব্যস্ত ছিল পাকিস্তানের বোলারদের নিয়ে। দুপুরে হাওয়া প্রায় বন্ধ। তবু কিছু রঙ্গন ফুল মাথা নাড়াবার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
রুনু ম্যাডাম আব্দুল মাঝির গল্পটা পড়ে আসতে বলেছে। সে হবে ক্ষণ। এখন ধোনির খেলা। কেবল লাইন চলে এসেছে কিনা। সামি, রাজ্জাক কেউই বাদ পড়ছে না তাঁর প্রহার থেকে। এমনকি রানা নাভিদও।
ধোনির হাতে ‘BAS’ লোগোর ব্যাট। এই লোগোটা পছন্দের নয়। পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানগুলোও এই ব্যাটেই ব্যাট করে। তবু, ধোনি তো, চলে যাবে। আকাশি রঙের জামা, পিছনে হলদে রঙের ‘সাত’ লেখা, গাঢ় নীল হেলমেটে ভারতের চক্র।
আব্দুল মাঝি, নবগণিত মুকুল পড়ে রইল পাশে। বিশাখাপত্তনমের মাঠে বীরেন্দ্র শেবাগ আর রাহুল দ্রাবিড়কে সঙ্গে করে সেঞ্চুরি করে ব্যাট উঁচিয়ে দৌড়ালো ধোনি। সেজো মামা ফিরতেই খবরটা দিয়ে দিলাম—ম্যাচের পর ম্যাচ ফ্লপ ধোনি সেঞ্চুরি করেছে।
পাকিস্তান হাঁফাচ্ছে। এই ছেলেটা চুলটা আফ্রিদির মতোই রেখেছে বটে, তবে আফ্রিদির চেয়েও পেটায় বেশি। নামটাই কেমন যেন। তবু বুকে রয়ে গেল চিরকালের মত।
বিশাখাপত্তনমও মনে রাখবে বইকি। প্রায় কুড়ি বছর পরও মনে রাখবে।