উসামা মির নাকি আবরার আহমেদ- কে জায়গা পাবেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে? এমন একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের খুব বেশি সময় আর বাকি নেই। গত দুই আসরে শিরোপার কাছে গিয়ে ফিরে আসা পাকিস্তান, এবার অন্তত কোন ভুল করতে চায় না। কিন্তু উসামা ও আবরার যে দারুণ দ্বিধার সৃষ্টি করেছেন।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে পাকিস্তান। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম ম্যাচটি ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টির জলে। শেষ অবধি সিরিজ শেষ হয়েছে ২-২ সমতায়। বাকি থাকা চার ম্যাচে দুইটি করে ইনিংসে বল করবার সুযোগ পেয়েছে যথাক্রমে আবরার আহমেদ ও উসামা মির। আবরার পেয়েছেন দুই উইকেট। উসামার পকেটে ঢুকেছে তিনটি।
প্রায় কাছাকাছি পারফরমেন্সই করেছেন দুই জনে। তবে উসামা মির খানিকটা এগিয়েই থাকবেন হয়ত। কেননা পঞ্চম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তিনি যে এনে দিয়েছেন বেশ কার্যকর এক ব্রেক-থ্রু। টিম সেইফার্ট ও মাইকেল ব্রেসওয়েলের জুটি জমে ক্ষীর। সেইফার্ট যেন দারুণ আগ্রাসী। সেই জুটিতে ভাঙন ধরিয়েছেন উসামা। টিম সেইফার্টকে বোল্ড আউট করে।
এরপর আবার মার্ক চ্যাপম্যানকেও বোল্ড করেছেন উসামা। তাছাড়া চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দারুণ খেলতে থাকা ডিন ফক্সক্রফটকে নিজের উইকেটে রুপান্তরিত করেছিলেন উসামা। এই দুই ইনিংসে তিনি রান দিয়েছেন ৬৪ রান। ৪৩ রান দিয়েছেন আবার এক ইনিংসেই। সেটা নিশ্চয়ই বেজায় বেমানান। তবে লেগস্পিনারদের এমন বাজে দিনের সম্মুখীন প্রায়শই হতে হয়।
অন্যদিকে আবরার যে ম্যাচে দু’টো উইকেট নিয়েছেন, সে ম্যাচে নিউজিল্যান্ড অলআউট হয়েছিল মাত্র ৯০ রানে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি-তে আবরার মার্ক চ্যাপম্যান ও জিমি নিশামের উইকেট বাগিয়েছিলেন। ওই ম্যাচে আবরারের খরচ ছিল স্রেফ ১৫ রান। যদিও সেদিন পাকিস্তানের প্রতিটা বোলারই বেজায় ভাল বল করেছিলেন। উইকেট থেকেও সহয়তা পেয়েছেন আবরার ও তার সতীর্থরা।
তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আবরারকে হজম করতে হয়েছে ৩১ রান। যদিও ১৭৯ রানের টার্গেট দিয়েও সেদিনের ম্যাচটি হেরে গিয়েছিল পাকিস্তান। আবরার দলের জয়ের জন্যে উইকেট শিকারের কাজটা করতে পারেননি সঠিক সময়ে।
তাছাড়া ২০২৪ পাকিস্তান সুপার লিগের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলারও উসামা মির। অন্যদিকে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট বাগিয়েছেন আবরার। অতএব এই দুই বোলার যথেষ্ট ভাল ছন্দেই রয়েছেন। এখন পাকিস্তানের নির্বাচক প্যানেলের দায়িত্ব, এই দুইজনের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেওয়া। সে কাজটা বেশ কঠিনই হতে চলেছে।
তবে ক্ষনিকের জন্যে হলেও উসামা মির বিশ্বকাপ দলের জন্যে হওয়া দৌড়ে এগিয়ে গেলেন। আবরার হয়ত পরবর্তী সিরিজেই উসামাকে পেছনে ফেলতে চাইবেন। দলের মধ্যে এমন স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা নিশ্চিতরুপেই যেকোন দলের জন্যে মঙ্গলময়।
যদিও পাকিস্তান জাতীয় দলে শাদাব খান রয়েছেন। কিন্তু তার বোলিংয়ের ধার ঠিক আগের মত নেই। তিনি অনেকটাই ব্যাটিং অলরাউন্ডার বনে গেছেন। নিউজিল্যান্ড সিরিজে ব্যাট হাতে মারকাটারি ইনিংস খেলার প্রয়াশই তিনি করেছন। পাশাপাশি তিন খানা উইকেট তিনিও বাগিয়েছেন।
তবে ওই যে ধারাবাহিকতায় রয়েছে অভাব। সেদিক থেকে একজন লেগস্পিনার প্রয়োজন হবে পাকিস্তানের। সে বাছাই প্রক্রিয়াই চলছে, আর তাতে লড়ছেন উসামা ও আবরার।