নতুন বাস্তবতা চেনানো মেসি ও চরম লোভী এক বার্তেমেউ

রোনালদো বা নেইমারের ক্লাব ছাড়ার সাথে মেসির ক্লাব ছাড়াটা কোনোভাবেই তুলনীয় না।

রোনালদো বা নেইমার কেউ ওই ক্লাবের ‘সন্তান’ ছিলেন না। বড় জোর রাউল বা ক্যাসিয়াসকে দিয়ে কিছুটা বুঝতে পারেন। সেখানেও পার্থক্য থেকে যাবে। রাউলরা রিয়াল ছেড়েছিলেন শেষ বয়সে এসে। বড় কথা, দুনিয়ায় আর কোনো ক্লাব কোনো খেলোয়াড়কে জীবন দান করে এনে ক্লাবে তোলেনি। মেসির ক্ষেত্রে বার্সেলোনা তাই করেছিলো।

ফলে মেসির জন্য আর দশ জন খেলোয়াড়ের মতো বার্সেলোনা একটা ক্লাব ছিলো না; সত্যিকারের বাড়ি ছিলো।

আমি নিশ্চিত আর্জেন্টিনাকে দু বার ফাইনালে তোলার পরও, রোজারিওতে অনেক সম্পর্ক গড়ার পরও সে দেশকে ততোটা নিজের মনে করতে পারে না, যতটা বার্সেলোনাকে নিজের বলে মনে করে।

সেই বার্সেলোনাকে ছেড়ে যাওয়াটা মেসির জন্য নিজের হাতে হৃদপিণ্ড টিপে ধরার মতো একটা অনুভূতি নিশ্চয়ই। কিন্তু কখনো কখনো বাচানোর জন্য মারতে হয়।

যে বার্সেলোনা মেসিকে এনেছিলো, মেসিকে বড় করেছে, তা আর নেই। সেই রেক্সাস, গার্দিওলা থেকে শুরু করে জাভি-ইনিয়েস্তারা আজ আর নেই। তাদের বদলে কাতালোনিয়ার সুর বিরোধী, চরম লোভী এক বার্তেমেউ তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে দখল করেছে ক্লাবটি।

গত ক বছরে আমি মেসির অনেক নিন্দে মন্দ করেছি। প্রবল ভালোবাসা থেকেই চেয়েছি, সে যেনো লোকেদের নিন্দা শুনে আরেকটু নেতৃত্ব নিতে পারে। কিন্তু এই নরকের কীটরা বার্সেলোনার যে অবস্থা তৈরী করেছে, সেখানে আসলেই মেসির থাকাটা কঠিন; অসম্ভব।

ঠিক আছে, মেসি। আপনি নতুন পথ দেখেন।

এখনও অন্তত ৫ বছর আপনার সামনে সেরা স্তরের জীবন পড়ে আছে। এই পাচ বছরে অন্য কোনো ক্লাবের হয়ে নতুন করে সংসার শুরু করেন। সেখানে কিছু জিতে প্রমাণ করেন, আপনিও পারেন।

যে কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম, এখন বার্সার ‘লয়্যাল’ সমর্থকরা কী করবে। তারাও কি রোনালদোর রিয়াল ত্যাগের সময়ের মতো দল বদলে ফেলবে? এটা জটিল প্রশ্ন।

বার্সেলোনার সমর্থক মানে বেশিরভাগই এই প্রজন্ম। এরা ফুটবল বুঝতে শেখার পর থেকেই মেসি ও বার্সেলোনাকে একাকার দেখেছে। ফলে এদের জন্য সিদ্ধান্তটা কঠিন। অনেকে হয়তো বার্সেলোনাকে ভুলেই যাবে, আর লা লিগা দেখবে না। অনেকে দুটো দলকেই সমর্থন করবে। যাই করুক, সেটাই সত্যি।

মেসি তো দু দিনের যাত্রী ছিলো না; তার পথ ধরে অনেকে নতুন পথে যাবে, এটা বাস্তবতা।

মেসি ২০২০ সালে আমাদের নতুন আরেক বাস্তবতা চেনাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link