সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে জয় পেতেই হয়ত চাইবে টাইগাররা। তবে টেস্ট জয় যে বহু কাঠখড় পোড়ালে পাওয়া যায়। সে জন্য প্রয়োজন খেলোয়াড়দের পারফরমেন্স। সেই সাথে দরকার সঠিক টিম কম্বিনেশন।
তবে মিরপুর টেস্টের একাদশের চাইতে খুব বেশি ভিন্ন একাদশ নিয়ে নামতে নিশ্চয়ই চাইবে না বাংলাদেশ। মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশকে ভুগতে হয়েছে। মাত্র একজন পেসার নিয়ে খেলেছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। তাতে করে বোলিং আক্রমণটা ওয়ান ডাইমেনশনাল হয়ে গিয়েছিল।
তাতে করে প্রোটিয়াদের চাপে ফেলার সুযোগ হয়েছিল হাতছাড়া। চট্টগ্রামের উইকেট বরাবরই হয় ব্যাটিং সহায়ক। সেখানে ওয়ান ডাইমেনশনাল বোলিং আক্রমণ বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা গড়ার সুযোগ কেড়ে নিতে পারে। তাছাড়া উইকেটে ঘাসের উপস্থিতিও রয়েছে কিঞ্চিৎ। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যদি নেয়- তাহলে নিশ্চিতরূপেই পেসার প্রয়োজন হবে।
সেদিক থেকে হাসান মাহমুদ থাকবেন একাদশে তা বলে দেওয়া যায়। যদিও ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কারণে তাকে বিশ্রাম দেওয়ার কথাও ভাবতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু স্কোয়াডে থাকা পেসারদের মধ্যে হাসান বলের মুভমেন্ট আদায় করতে পারেন বেশি।
অন্যদিকে, হাসানের সঙ্গী হিসেবে খালেদ আহমেদকে দেখা যেতে পারে। নাহিদ রানা হতে পারেন দুর্দান্ত বিকল্প। সেজন্য অবশ্য সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। যেহেতু সিরিজ হাতছাড়ার শঙ্কা জেগেছে সেহেতু ঝুঁকি তো নিতেই হবে। নাহিদের গতি প্রোটিয়াদের বিপাকে ফেলতে পারে, যেকোন উইকেটে।
অন্যদিকে, পুরো একাদশ প্রায় প্রথম টেস্টের মতই হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, নাহিদকে কার জায়গায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে? এই প্রশ্নের সহজ উত্তর হয়ে ধরা দেবেন নাইম হাসান। যেহেতু ঢাকা টেস্টে তিনি একেবারে নিষ্প্রভ ছিলেন। সেহেতু তার পরিবর্তে একাদশে নাহিদ সুযোগ পাবেন।
অন্যদিকে, ইনজুরিতে চট্টগ্রাম টেস্টে নেই আগের টেস্টে অভিষিক্ত জাকের আলী। তাঁর জায়গায় থাকবেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, যদিও জাতীয় ক্রিকেট লিগে দারুণ ফর্মে থাকা অঙ্কনের অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা কম। সেক্ষেত্রে, বাড়তি একজন বোলারও খেলাতে পারেন। আর একটু বড় করে ভাবলে সেই বোলারটি নাহিদ রানাও হতে পারেন।
তবে চট্টগ্রামের ছেলে নাইমের ঘরের মাঠে পরিসংখ্যান বেশ ভাল। কিন্তু তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে একজন ব্যাটার কমাতে হবে। বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারের যে বেহাল দশা, তাতে এই ঝুঁকি যতটুকু সম্ভব এড়িয়ে যেতে চাইবে টিম ম্যানেজমেন্ট। মোদ্দাকথা চারজন বোলারেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে বাংলাদেশের একাদশ। তাতে টেস্টের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসা দুষ্কর।
তবুও নিজেদের গতানুগতিক মানসিকতা থেকে খুব একটা বেড়িয়ে আসতে চাইবে না বাংলাদেশ। তাতে জয়ের জলাঞ্জলি দিতেও আক্ষেপ নেই যেন সকলের। কোন রকম একটা একাদশ নিয়ে ম্যাচটা বাঁচানো গেলেই তো হয়ে গেল। এত ঝুঁকি নিয়ে সমালোচনার খড়গ সহ্য করতে কে-ই বা চায় বলুন!