শেয়ালের কাছে মুরগি দিয়েছেন। ফলাফল কি হবে সবাই জানে। আর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) হাতে যখন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট এসেছে, তখন তাঁর অবস্থাও যাচ্ছেতাই হওয়াটাই স্বাভাবিক। সময়মত পারিশ্রমিক দিয়ে ফেলাটা এখানে খুবই মেইনস্ট্রিম।
নিয়ম মেনে চুক্তি-টুক্তি করলে সেটার নাম আর আর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) কেন। একটু আকটু নাটক হবে, মাঠের মধ্যে গালিগালাজ শোনা যাবে, আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, কবর খুড়ে হারিয়ে যাওয়া সব ক্রিকেটারদের তুলে আনা হবে, এটা-সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, সন্দেহ হবে। এই অনিশ্চয়তা, এই সন্দেহ, এই আশা-নিরাশার দোলাচল – এই সব কিছুই তো বিপিএল।
বিপিএল যেন একটা সাগর। সেই সাগরে উত্তাল হবে, শান্ত থাকবে, সেই সাগরের পানি চাইলে কক্সবাজারের মত আপনি নোংরাও করতে পারবেন। জোয়ার হবে, ভাটা হবে। কোনায় দাঁড়িয়ে কেউ একজন প্রকৃতির ডাকে সারা দিয়ে ফেলবেন। দেখার কি কেউ নেই!
দেখার আছেন, জ্যারড কিম্বার সব দেখে ফেলেছেন। তিনি রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে আলাউদ্দিন বাবুর অস্বাভাবিক তিনটা নো-বল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি সেই ওভারে বৈশ্বিক বিভিন্ন বাজির ওয়েবসাইটের দর হয়েছে আকাশ-পাতাল। এত কাকতাল!
একই প্রশ্ন ছিল আমির হামজা হোতাকের বিশাল একট নো-বলেও। দেখেও না দেখার ভান করে থাকাই উত্তম। সব দেখলে নষ্ট জীবন। কিন্তু, জ্যারড কিম্বারের চোখে তো আর আটকায়নি কিছুই।
আমাদেরই বা দোষ কি! কোনটা রেখে বিপিএলে কোনটা দেখবেন। এখানে দলের মালিকরা টাকা দিতে চান না। সময় মত দেওয়ার তো প্রশ্নই উঠে না। ক্রিকেটাররা তো এখানে কোনোরকমের আনুষ্ঠানিক চুক্তিপত্রে সই না করেই স্রেফ মুখের কথায় খেলা শুরু করে দেন।
সই করবেন কি করে, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল থেকে সব ফ্র্যাঞ্চাইজিকে যে চুক্তিপত্র সরবরাহ করার কথা, সেটি পাঠানোই হয় টুর্নামেন্টের মাঝপথে বা শেষের দিকে। যেমন কর্ম, তেমন ফল। যেমন বিসিবি, তেমন ফ্র্যাঞ্চাইজি। খেলোয়াড়রাও তেমনই। ঢিলেঢালা ক্রিকেট আসরে দুটো-একটা ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তো উঠবেই! কোনো না কোনো ভাবে তো আয় করতেই হবে!
প্রশ্ন উঠবে, কিন্তু প্রশ্ন করা যাবে না। আদিকালের রদ্দি হওয়া নীতিতে হাঁটলে চোখে টিনের চশমাও থাকতে হয়। টিনের চশমার সুবিধা হচ্ছে, কিছুই দেখতে হবে না। বাংলাদেশের জন্য তাই টিনের চশমা পরেই বিপিএল দেখে, আগেও দেখেছে, ভবিষ্যতেও দেখবে।
জ্যারড কিম্বারের বাড়ি অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ কিম্বার চাইলে অস্ট্রেলিয়াতেও টিনের চশমা রপ্তানির দায়িত্ব নিতে পারে। দেশের তারল্য সংকটে হাত লাগানোর এই সুযোগ বিসিবির মিস করাটা ঠিক হবে না।