শামিম পাটোয়ারি, কামিং অফ এজ!

শামিম পাটোয়ারি সেই জায়গায় ঠিকঠাক পরীক্ষায় উৎরে যাচ্ছেন। শুধু আকর্ষণীয় শট খেলা নয, ফাঁকা জায়গায় বুঝে শুনে শট খেলতে তাঁর জুড়ি নেই। 

ফিনিশারের নতুন সংজ্ঞা লিখতে ব্যস্ত এখন শামিম পাটোয়ারি। আর সেটা করতে গিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে ‘আন-অর্থোডক্স’ ব্যাটিংয়ের নতুন অধ্যায় লিখছেন তিনি। রিভার্স স্কুপটা এক অর্থে তিনি আজকাল সাকিব আল হাসান বা মোহাম্মদ আশরাফুলের চেয়েও ভাল খেলেন।

শামিম বরাবরই এমন। চলতি বিপিএলে তিনি ৩৪৫ রান করেছেন। তাঁর ৬০ শতাংশের বেশি এসেছে উইকেটের পেছনে। চাইলে তাঁকে ওয়ান ডাইমেনশনাল ব্যাটার বলতে পারেন, চাইলে বলতে পারেন চতুর ব্যাটার। ফিনিশিংয়ে এই চতুরতাই দরকার।

ফিনিশারের কাজটাই তো নিজের শক্তির জায়গা খুঁজে নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া। শামিম পাটোয়ারি সেই জায়গায় ঠিকঠাক পরীক্ষায় উৎরে যাচ্ছেন। শুধু আকর্ষণীয় শট খেলা নয, ফাঁকা জায়গায় বুঝে শুনে শট খেলতে তাঁর জুড়ি নেই।

ফিনিশারের কাজ বরাবরই কঠিন। ভুল করার সুযোগ নেই। আর এখনকার মারকাটারি ক্রিকেট যুগে এসে ফিনিশারকে কখন ব্যাট করতে নামতে হবে, সেই নিশ্চয়তা নেই। পুরো বিপিএল জুড়ে এক শামিমই যেমন বিচিত্র সব পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরেছেন। তাই এখানে শরীরের সাথে সাথে মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকাটাও জরুরী।

তার এই ব্যাটিং শুধুই আকর্ষণীয় শট খেলার জন্য নয়। তিনি বুঝে-শুনে বল নির্বাচন করছেন, ফাঁকা জায়গা খুঁজে শট খেলছেন। এটা নিছক অপ্রচলিত শট খেলা নয়, বরং ফিনিশার হিসেবে প্রয়োজনীয় এক দুর্দান্ত স্কিল।

মাত্র ৮-১০ বলে ম্যাচের গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়ার এই কাজ সবাই পারে না। শামিম সেটা পুরো আসর জুড়ে করেছেন। এবার যখন ফরচুর বরিশালের বিপক্ষে অ্যাঙ্করিং করতে হল, সেখানেও তিনি সফল। আর সেই সফলতাও এল ওই আন-অর্থোডক্স শট খেলেই।  ষষ্ঠ ওভারে ক্রিজে এলেন, ফিরে গেলেন ১৯ তম ওভারে। মাঝে ৭৯ টি রান করলেন, ৪৭ বলের ইনিংসে ছিল নয়টি চার ও চারটি ছক্কা।

এই বিপিএলটাকে শামিমের ক্যারিয়ারের পূর্ণতা প্রাপ্তির সময় বলা যায়। এমনিতে ২০২৪ সাল ছিল তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা বছর। ১৫৪ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন, সেটাও আবার এক বছর পর জাতীয় দলে ফিরে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সেই ধারাবাহিকতার ছাপ এবার বিপিএলে। এই ধারাবাহিকতা অব্যহত থাকলে আখেরে লাভ বাংলাদেশ ক্রিকেটেরই।

Share via
Copy link