ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) খেলাটা যেকোনো ভারতীয় ক্রিকেটারের জন্যই স্বপ্নের মত। বিশেষ করে আইপিএলে নিলাম ভারতীয় ক্রিকেটারদের জন্য একটি বড় দিন। ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলো তাঁদের পছন্দের ক্রিকেটারদের কিনে নেন চড়া দামে।
ভারতের তরুণ ক্রিকেটাররাও নিজেদের প্রমাণ করেছেন এই মঞ্চে। তাই সিনিয়রদের পাশাপাশি এই তরুণদের নিয়েও তুমুল আগ্রহ ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলোর। অনেক তরুণ ক্রিকেটারই এখন দলগুলোর অধিনায়কও হচ্ছেন। তবে এমনি এমনি এই ক্রিকেটারদের উপর এত ভরসা করে না দলগুলো।
সিনিয়র কিংবা জুনিয়র যাই হোক, এই ক্রিকেটারদের উপর সারা বছর নজর রাখে ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলো। এছাড়া উঠতি ক্রিকেটারদের উপরও বিশেষ নজর থাকে দলগুলোর। তবে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারই সেই নজর এড়িয়ে যান কখনো কখনো। ভারতের অনেক তারকা ক্রিকেটারই অবিক্রিত ছিলেন আইপিএলের নিলামে। তাঁদের নিয়েই এবারের আয়োজন।
- সৌরভ গাঙ্গুলি
ভারতের ক্রিকেটের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র সৌরভ গাঙ্গুলি। ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক আইপিএলে প্রথম আসর থেকেই কলকাতার অধিনায়ক হিসেবে খেলছিলেন। কলকাতার হয়ে ব্যাট হাতে ভালোই পারফর্ম করছিলেন সৌরভ। তবে দল সাফল্য পাচ্ছিল না কোনোভাবেই। আইপিএলে প্রথম তিন আসরে সৌরভের নেতৃত্বে একবারো সেমিফাইনাল খেলতে পারেনি কলকাতা নাইট রাইডার্স।
২০১১ সালে তাই বড় এক সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। তাঁরা সৌরভকে বাদ দিয়েই দল গঠন করে। তবে অবাক করা বিষয় হলো সেই বছর নিলামে সৌরভকে অন্য কোনো দলও কিনে নেয়নি। ফলে নিলামে অবিক্রিত থাকেন ভারতের কিংবদন্তি এই ক্রিকেটার। তবুও ভাগ্যক্রমে সেবার আইপিএলে খেলার সুযোগ হয়েছিল এই ব্যাটসম্যানের। ওই বছর পরে পুনে ওয়ারিয়ার্সের হয়ে খেলেন তিনি। ইনজুরির কারণে আশিষ নেহরা ছিটকে গেলে তাঁর পরিবর্তে পুনেতে সুযোগ পান তিনি।
- ভিভিএস লক্ষ্মণ
ভারতের ক্রিকেটের আরেক কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ভিভিএস লক্ষ্মণ। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাঁর ব্যাটিং পারফর্মেন্সের জন্য চিরকাল দর্শকদের মনে জায়গা পাবেন এই ক্রিকেটার। বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালি সেই বোলিং লাইন আপের বিপক্ষে রানের পর রান করে গেছেন এই ব্যাটসম্যান। সব মিলিয়ে ভারতের হয়ে প্রচণ্ড সফল এই ব্যাটসম্যান আইপিএলে নিজের সেরাটা দিতে পারেননি।
আইপিএলে প্রথম চার আসরে তিনি ডেকান চার্জার্স ও কোচি টাস্কার্সের হয়ে খেলেছেন। তবে ২০১২ সালে নিলামে তিনি আর কোনো দল পাননি। ফলে সেখানেই আইপিএল যাত্রা থামে ভারতীয় এই কিংবদন্তির।
- রুদ্র প্রতাপ সিং
২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন এই ক্রিকেটার। বাঁ-হাতি এই পেসার আইপিএল যাত্রা শুরু করেছিলেন ডেকান চার্জার্স এর হয়ে। আইপিএলে একবার পারপেল ক্যাপও পেয়েছিলেন এই বোলার। তবে দু:খজনক ভাবে ২০১৪ সালের আইপিএল নিলামে কোনো দলই আগ্রহ দেখায়নি এই বোলারের জন্য।
২০১৪ ও ২০১৫ দুই আসরের অবিক্রিত থাকেই আরপি সিং। তবে ২০১৬ সালে আবার ফিরে আসেন তিনি। সে বছর আইপিএল নিলামে রাইজিং পুনে সুপারজায়েন্টে বিক্রি হন তিনি।
- নিতিশ রানা
তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে আইপিএলের অন্যতম সেরা পারফর্মার নিতিশ রানা। ইতিমধ্যেই অসাধারণ ক্রিকেট খেলে নিজের একটি নাম তৈরি করে ফেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও কলকাতা নাইট রাইডার্স দুই দলের হয়েই নিজেকে প্রমাণ করেছেন নিতিশ রানা।
তবে ২০১৪ সালে নতুন আইপিএলের নিলামে নাম আসা রানাকে তেমন কেউই গুরুত্ত্ব দেননি। ১০ লাখ টাকা ভিত্তি মূল্যেও তাকে কিনতে আগ্রহ দেখায়নি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। ফলে সেবছর নিলামে অবিক্রিত থাকেন এই তরুণ তুর্কি।
- হার্দিক পান্ডিয়া
বিস্ময়কর হলেও সত্যি যে, এই সময়ে ভারতের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া অবিক্রিত ছিলেন। বর্তমানে আইপিএল থেকে ১১ কোটি রূপি পান এই ক্রিকেটার। চারবার আইপিএলের শিরোপাও জিতেছেন এই ক্রিকেটার। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এর হয়ে অসাধারণ পারফর্ম করে যাচ্ছেন এই অলরাউন্ডার।
২০১৫ সালের আইপিএল নিলামে মাত্র ১০ লক্ষ রুপিতে হার্দিককে কিনে নিয়েছিল মুম্বাই। তবে এর আগের আসরে অর্থাৎ ২০১৪ সালের আইপিএল নিলামে নাম থাকলেও কেউ কিনেনি এই অলরাউন্ডারকে। ফলে সেবার আইপিএলে অবিক্রিতই ছিলেন এই ক্রিকেটার।