সেরা ‘নিভৃত’ একাদশ

খনকার সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাঁ দেয়ার আগেই অনেক ক্রিকেটার পেয়ে যান তারকা খ্যাতি। আবার এত এত তারকার মাঝে অনেক ক্রিকেটারই রয়ে যান খানিকটা আড়ালে-আবডালে। দিনের পর দিন পারফর্ম করে গেলেও অন্যদের তুলনায় তাঁদের নিয়ে আলোচনা একটু কমই হয়।

ক্রীড়া জগতে ক্রিকেট সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা নয় অবশ্যই। তবে দিন দিন খেলাটি ছড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। প্রতিটি বলে যে উত্তেজনার বারুদ তা অনুভব করছে কোটি কোটি ক্রিকেট প্রেমী। বিশেষ করে উপমহাদেশের দেশগুলোতে ক্রিকেট যেনো এক জোয়ারের নাম। এখানকার মানুষ নাওয়া-খাওয়া ভুলে ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থাকে ওই বাইশ গজের দিকে। হয়তো একটা কাভার ড্রাইভ দেখবে বলে কিংবা রিভার্স স্যুইং ডেলিভারি দেখবে বলে।

ক্রিকেটের এই জনপ্রিয়তা যত বাড়ছে, তারকার সংখ্যাও ততই বাড়ছে। এখনকার সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাঁ দেয়ার আগেই অনেক ক্রিকেটার পেয়ে যান তারকা খ্যাতি। আবার এত এত তারকার মাঝে অনেক ক্রিকেটারই রয়ে যান খানিকটা আড়ালে-আবডালে। দিনের পর দিন পারফর্ম করে গেলেও অন্যদের তুলনায় তাঁদের নিয়ে আলোচনা একটু কমই হয়। বর্তমান সময়ের ক্রিকেটে এই নিভৃতে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়ে আজকের এই একাদশ।

  • টম লাথাম (নিউজিল্যান্ড)

নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে তারকার অভাব নেই। সবার আগেই মনে আসে কেন উইলিয়ামসন, মার্টিন গাপটিল, টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্টদের কথা। তবে এদের সাথে নিউজিল্যান্ড দলে নিয়মিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন টম লাথাম। টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে বেশ সফল হলেও সেভাবে আলোচনা আসেন না কখনোই। এখন অবধি ৫৮ টেস্টে ৪২ গড়ে করেছেন ৩৯৮৮ রান। আবার ১০২ ওয়ানডে ম্যাচেও ৩৪ গড়ে প্রায় তিন হাজার রানের মালিক এই ব্যাটার।

  • দিমুথ করুনারত্নে (শ্রীলঙ্কা): অধিনায়ক

টেস্ট ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার হয়ে রীতিমত রানের ফুলঝুড়ি খুলে বসেছেন এই ওপেনার। অভিষিক্ত হবার পর থেকে তাঁর স্ট্রোক খেলার ক্ষমতার জন্য প্রশংসিত তিনি। তবে নিয়মিত পারফর্ম করেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেভাবে আলোচনায় আসেন না এই ব্যাটসম্যান। ৭২ টেস্টে প্রায় ৪০ গড়ে তাঁর ঝুলিতে আছে ৫১৭৬ রান।

  • মুমিনুল হক (বাংলাদেশ): সহ-অধিনায়ক

মুমিনুল হক বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক এবং এই ফরম্যাটের সফলতম  ব্যাটসম্যান। তবে সাকিব, তামিমদের নামের পাশে কখনোই জায়গা হয়না এই ক্রিকেটারের। অথচ টেস্ট ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের শুরু থেকে রান করে যাচ্ছেন ধারাবাহিক ভাবে। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান এখন অবধি খেলেছেন ৪৪ টি টেস্ট। সেখানে ৪২.৫৮ গড়ে করেছেন ৩২৭৯ রান। টেস্ট ক্রিকেটে ১১ টি সেঞ্চুরিও আছে তাঁর।

  • রস টেইলর (নিউজিল্যান্ড)

নিঃসন্দেহে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন আপের প্রাণ রস টেইলর। তবে তারকাবহুল এই দলে তিনি থাকেন আলোচনার বাইরে। অথচ তিনি বিশ্বক্রিকেটের সফলতম ব্যাটসম্যানদের একজন। তিন ফরম্যাটেই সমভাবে সফল এই ব্যাটসম্যান। ওয়ানডে ক্রিকেটে ২৩৩ ম্যাচে ৪৮.২০ গড়ে তিনি করেছেন ৮৫৮১ রান। এছাড়া টেস্ট ক্রিকেটেও ৭৪২৬ রানের মালিক তিনি।

  • মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)

২০০৫ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাংলাদেশের হয়ে অভিষিক্ত হন এই উইকেটক্ষক ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে অতটা ধারবাহিক না হলেও তাঁর প্রতিভা নিয়ে কখনোই সংশয় ছিল না। তবে গত পাচ-ছয় বছরে নিজেকে সেরাদের কাতারে নিয়ে গিয়েছিন এই ব্যাটসম্যান। এই মুহূর্তে বিশ্বক্রিকেটে সেরা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানদের একজনও তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রায় ৩৮ গড়ে ৬৫৮১ রানের মালিক তিনি।

  • ফাওয়াদ আলম (পাকিস্তান)

ক্যারিয়ারের শুরুতে পাকিস্তান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ ভাবা হতো এই ব্যাটসম্যানকে। তবে পাকিস্তানের হয়ে কখনোই নিয়মিত সুযোগ পাননি তিনি। তবে ৩৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার যখনই সুযোগ পেয়েছেন তখনই রান করেছেন। ১১ টেস্টে ৪২.০৫ গড়ে করেছেন ৭১৫ রান। ওদিকে ৩৮ ওয়ানডে ম্যাচে ৪০ গড়ে করেছেন ৯৬৬ রান।

  • ক্রিস ওকস (ইংল্যান্ড)

ইংল্যান্ড ক্রিকেটে এমন কয়েকজন ক্রিকেটার আছেন যারা একাই ঘুরিয়ে দিতে পারেন ম্যাচের গতিপথ। বেন স্টোকস, ইয়ন মরগ্যান, জোফরা আর্চার কিংবা জো রুটরা সংবাদমাধ্যমে প্রচুর আলোচিত। ভক্তদের ভালবাসায়ও শিক্ত হতে দেখা যায় তাঁদের। তবে এই সময়ের অলরাউন্ডারদের মধ্যে সবচেয়ে কম আলোচিত ক্রিস ওকস। অথচ ব্যাট ও বল দুই ডিপার্টম্যান্টেই ঝড় তুলতে পারেন এই ক্রিকেটার। ওয়ানডে ক্রিকেটে তাঁর ঝুলিতে ১৪৯ উইকেটের পাশাপাশি আছে ১৩১৫ রান।

  • মেহেদী হাসান মিরাজ (বাংলাদেশ)

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সফলতম বোলার মিরাজ। তবে সাকিব, মুস্তাফিজদের ভীড়ে তাঁকে নিয়ে আলোচনা খুবই কম। অভিষেক সিরিজ থেকেই টেস্ট ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করেছেন মিরাজ। মাত্র ২৬ টেস্টেই নিয়েছেন ১০৪ উইকেট। ওয়ানডে ক্রিকেটেও ৫৪ উইকেটের মালিক তিনি। ওদিকে ব্যাট করার তেমন সুযোগ না পেলেও অসাধারণ ব্যাটসম্যান মিরাজ। টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একটি সেঞ্চুরিও আছে তাঁর ঝুলিতে।

  • ইশান্ত শর্মা (ভারত)

ভারতের পেস অ্যাটাকের কথা বললেই আমাদের মাথায় আসে জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহম্মদ শামি ও ভুবেনেশ্বর কুমারদের নাম। অথচ ২০০৭ সালে অভিষিক্ত হবার পর থেকেই টেস্ট ক্রিকেটের নিয়মিত পারফর্মার ইশান্ত শর্মা। ১০১ টেস্টে ইশান্তের ঝুলিতে আছে ৩০৩ টি উইকেট। আবার ওয়ানডে ক্রিকেটেও ১১৫ উইকেটের মালিক তিনি।

  • অ্যাশটন অ্যাগার (অস্ট্রেলিয়া)

এখনকার অস্ট্রেলিয়া দলের প্রায় প্রতিটি ক্রিকেটারই তারকা। ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অ্যারন ফিঞ্চদের দলে অ্যাশটন অ্যাগারের নাম যেনো উচ্চারিতই হয় না। বাঁহাতি এই বোলারের ছোট ক্যারিয়ার হলেও তিনি নিয়মিত পারফর্মার। ৩২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ৩৮ টি উইকেট। এছাড়া ব্যাট হাতেও টুকটাক রান করতে পারেন তিনি।

  • কেমার রোচ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নিয়মিত খেলার জন্য ক্যারিবীয় ক্রিকেটারদের সাধারণত তারকাখ্যাতি অনেক বেশি থাকে। তবে কেমার রোচের বেলায় তা হয়নি। টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই সফল এই পেসারকে নিয়ে আলোচনা একটু কমই। ৬৩ টেস্টে তাঁর ঝুলিতে আছে ২১৪ উইকেট। আবার ৯২ ওয়ানডে ম্যাচেও ১২৪ উইকেটের মালিক তিনি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...