আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) স্থগিত অংশ। প্রথম অংশে বেশ কয়েকজন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় মাঝপথেই স্থগিত করা হয় আইপিএলের এবারের আসর। ১৯ তারিখ থেকে আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে আইপিএলের বাকি অংশ।
গতবার বায়োবাবলের মধ্যেও করোনা আক্রান্ত হওয়ায় এবার আরো সতর্ক অবস্থানে থাকবে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে বেশ কয়েকটি শর্ত। আরব আমিরাতে যাওয়ার আগ থেকে টুর্নামেন্ট শেষ হওয়া অবধি খেলোয়াড় থেকে খেলার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককেই মেনে চলতে হবে সব নিয়ম।
নিয়মগুলো একটু দেখা যাক।
- ২০২১ আইপিএলে আরব আমিরাতে যাওয়ার পূর্বশর্ত গুলো কি কি?
আরব আমিরাতে যাওয়ার ৭২ ঘন্টা আগে প্রত্যেকের আরটি-পিসিআর টেস্ট করা হবে। এবং যারা নেগেটিভ থাকবে তারাই তাদের নির্দিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে সেখানে যেতে পারবে।
- যারা ইতোমধ্যেই বায়ো বাবলে আছে (চলতি বিভিন্ন সিরিজ) তাদেরকে কি বাবল থেকে বাবলে ট্রান্সফার করা যাবে?
ভারত-ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) থাকা খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ, ধারাভাষ্যকার এবং ব্রডকাস্ট ক্রিউ যারা আছেন তারা সরাসরি এক বায়োবাবল থেকে আরেক বাবলে যেতে পারবে। সেক্ষেত্রে তাদেরকে আরব আমিরাতে বাধ্যতামূলক কোনো কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে না।
তাদের সিরিজগুলো শেষ হবার পরও তাঁরা বায়োবাবলে থাকবে। এবং সেখান থেকেই দলের সাথে যোগ দিয়ে টিম বাসে করে সরাসরি এয়ারপোর্টে যাবে তারপর ইমিগ্রেশন বা অন্যান্য যেসব কার্যক্রম আছে সেসব সমপন্ন করবে। এবং প্রত্যেক দলই তাদের নির্দিষ্ট চার্টার্ড ফ্লাইটে দুবাইর উদ্দেশ্যে রওনা হবে। এবং দুবাই পৌছানোর পর সেখানে তাদের টিম বাস তাদেরকে নিয়ে হোটেলে পৌঁছে দিবে। এর মাঝে বাইরের কেউই বায়োবাবলে থাকা কারো সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেনা। এরপর সেখানে আরটি-পিসিআর টেস্টে ফলাফল নেগেটিভ আসলেই প্রত্যেকে তাদের দলের সাথে যুক্ত হতে পারবে।
- বাকিদের (বায়োবাবলের বাইরে) জন্য কি ব্যবস্থা?
চলতি কোনো সিরিজে নেই কিংবা বায়োবাবলের বাইরে থেকে যারা আসবে তাদেরকে ৬ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এবং আইপিএলের ম্যাচে অংশ নেবার আগে তিনটি আরটি-পিসিআর টেস্ট দিতে হবে। যথাক্রমে কোয়ারেন্টিনের দ্বিতীয়, চতুর্থ এবং ষষ্ঠ দিনে হবে টেস্টগুলো। পিসিআর টেস্টে নেগেটিভ এলেই বাকিদের সাথে বায়োবাবলে যুক্ত হতে পারবেন কোয়ারেন্টাইনে থাকা খেলোয়াড় বা দলের সংশ্লিষ্ট কেউ।
- আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাওয়ার আগে কি খেলোয়াড়দের ভ্যাক্সিনের পূর্ণ ডোজ নেওয়া বাধ্যতামূলক?
এটা বাধ্যতামূলক না। তবে সবাইকেই জানানো হয়েছে যে আরব আমিরাতে যাওয়ার আগে কোভিডের দুই ডোজ ভ্যাক্সিন দেওয়ার জন্য। ভ্যাক্সিনের ব্যাপারটা বাদে কোয়ারেন্টাইন এবং পিসিআর টেস্টের সবগুলো নিয়মই মানা বাধ্যতামূলক। বায়োবাবলে প্রতি সপ্তাহে দুইবার করে প্রত্যেকের পিসিআর টেস্ট করা হবে।
- এরপরেও যদি কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়। তাহলে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
খেলোয়াড় কিংবা সংশ্লিষ্ট যে কেউই যদি করোনায় আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে কমপক্ষে দশদিনের আইসোলেশনে থাকতে হবে। এবং তাকে নবম ও দশম দিন পুনরায় টেস্ট করানো হবে। করোনার কোনো লক্ষণ না থাকলে এবং টানা দুইটি রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে এরপর তিনি পুনরায় বায়োবাবলে প্রবেশ করতে পারবেন। এছাড়া যদি কারো পূর্বের ইনফেকশন থেকে করোনা পজিটিভের ভুল রিপোর্ট আসে। তাহলে পুনরায় তাকে আরটি-পিসিআর টেস্ট ও সেরোলজি টেস্ট করানো হবে।
- একজন খেলোয়াড় কিভাবে স্ক্যান এবং অন্যান্য ট্রিটমেন্টের জন্য হসপিটালে যাবে। তার জন্য কি নির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) খেলোয়াড়দের জন্য প্রয়োজনীয় সকল মেডিকেল সরঞ্জাম সহ পুরো একটি মেডিকেল টিম বিশেষভাবে প্রস্তুত রাখবে। এছাড়াও কাউকে যদি হসপিটালে যেতে হয় সেটার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। যাতে করে হসপিটালে গেলেও খেলোয়াড়েরা পুনরায় আবার বায়োবাবলে ঢুকতে পারে।
- আরব আমিরাতে মোট কয়টি বায়ো-সিকিউর বাবলস থাকবে?
সব মিলিয়ে মোট ১৪টি বাবল থাকবে। আট দলের জন্য আটটি বাবল, ম্যাচ অফিসিয়ালসদের জন্য তিনটি এবং বাকি তিনটি থাকবে ধারাভাষ্যকার ও ব্রডকাস্ট ত্রুদের জন্য।
- বলে মুখের লালা লাগানো কি নিষিদ্ধই থাকছে?
হ্যাঁ, সেটায় কোনো পরিবর্তন হবে না।
- বল গ্যালারিতে গেলে কি হবে?
যদি এমনটা হয় অথবা বল যদি স্টেডিয়ামের বাইরে যায় তাহলে বল পরিবর্তন করা হবে। এছাড়া বাইরে যাওয়া বিল স্যানিটাইজ করার পর পরবর্তীতে পুনরায় সেই বল ব্যবহার করা হবে।
- যদি কেউ সেখানে বায়োবাবলে ভাঙে তাহলে কি হবে?
কেউ যদি বায়ো বাবল ভাঙে সেটা কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি সদস্য, খেলোয়াড় কিংবা তাঁদের পরিবার। যে হোক না কেনো তাদের বিরুদ্ধে বিসিসিআই এর ডিসিপ্লিনারি কমিটি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।