লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, সাকিবের স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরের অযাচিত পোস্ট, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমের প্রেস কনফারেন্স- এগুলো নিয়ে অক্রিকেটীয় আলোচনা হয়েছে অনেক, নানা মানুষের নানা মত নানা দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে, কিন্তু স্পোর্টস ফ্যাক্ট আর বাস্তবে চলে, পারসেপশনে না। যেমন আমার পারসেপশন ছিল- অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ আর ওদিকে ভারত, পাকিস্তান সেমি খেলবে আর অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন হবে। বাংলাদেশের পারফরমেন্স আমার পারসেপশনকে সাপোর্ট দেয় না।
পারসেপশনে আপনি হাঁটতে হাঁটতে বন্ধুর সাথে বলে দিতে পারেন সাকিবকে দিয়ে হয়না, কিন্তু ফ্যাক্ট বলবে সাকিব এই বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটারই। আর সবচেয়ে খারাপ কে তাইলে? যেখানে বাংলাদেশের সাথে অন্য দলের বাস্তবতা ভিন্ন হয়ে গেল, যেখানে অন্য দল বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে আর বাংলাদেশ খেই হারিয়ে তলানিতে পড়েছে?
বাংলাদেশের স্ট্রাইক পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের সামগ্রিক ব্যর্থতা আর সাইফুদ্দিনের বাইশ রান দেয়া একটা ওভার
ভেরি প্রিসাইজলি ও স্পেসিফিকালি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচটা মুস্তাফিজের এক ওভারেই হেরেছে বাংলাদেশ, যেই উইকেটে সাত রান ওভারে করা মুশকিল সেখানে তিনটা ছক্কা!
ক্যাচ মিসের কথা বলতেই পারেন কিন্তু ক্যাচ সব দলই মিস করে। কিন্তু বিশ্ব আসরে আপনার একজন পেসার লাগবেই যে পুরো দলে সেই গতি আর তরঙ্গ খেলাবে। সেদিনের অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে মিশেল স্টার্ক যেমন মিডল ওভারে এসে ছক্কা খাওয়ার পর ব্যাক করলেন, স্টার্ক অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলিংয়ের লিডার, তাঁর মেজাজ আর গতি পুরো দলে সঞ্চারিত হয়, এটা আপনার লাগবেই, ক্রিকেটীয় কিছু নর্মসের মধ্যে একটা এটা।
আর আমাদের বোলার মুস্তাফিজ প্রতি ম্যাচেই ৩০ এর বেশি রান তো দিয়েছেনই, খুব অসময়ে দিয়েছেন। স্কটল্যান্ডের সাথে ৩২, ওমানের সাথে ৩৬, পাপুয়া নিউ গনির সাথে ৩৪, পিএনজির সাথেই বেশি চোখে পড়েছে কারণ এইদিন ২৬/৬ থেকে পাপুয়া নিউ গিনি ৯৭ করে। আর সাইফউদ্দিনের এক ম্যাচেই যথেষ্ট, পাঁচ ওভারে দরকার ছিল ৪৬, সাইফউদ্দিন দিলেন ২২, এরপর লাগে ২৪ বলে ২৪!
ম্যাচ ওভার!
পেস বোলিং নিয়ে আলাদা খেলা হয়, পেসারদের ট্রিপলেট, কোয়াট্রেট তৈরি হয়। পাকিস্তানে শাহীন শাহ আফ্রিদি তো গোটা টুর্নামেন্টের ধারা ঠিক করে দিলেন ভারতের সাথে। শ্রীলঙ্কার ম্যাচে লাহিরু কুমারার আচরণ বাংলাদেশের অনেকের খারাপ লেগেছে কিন্ত এটা প্রয়োজন ছিল শ্রীলঙ্কার জন্য।
ইংল্যান্ড এখনো মানমতো প্রতিপক্ষ পায়নি, ওদের পেসাররাও পরীক্ষিত হননি তেমন। দক্ষিণ আফ্রিকা যদি টুর্নামেন্টে থাকে তাহলে এনরিচ নরকে হবেন টুর্নামেন্ট সেরা পেসার। বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান, রান ঠেকানো, উইকেট এনে দেয়া কোনও জায়গাতেই অবদান রাখেননি। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নিজহাতে একটা ম্যাচ শেষ করে দিয়েছেন।
এখানে আমি আবারো মাশরাফি বিন মুর্তজার স্মৃতিচারণ করবো, ২০১৯ বিশ্বকাপটা বাদ দিলে, মাশরাফি সবসময় সামর্থ্যের চেয়ে বেশি ঢেলে দিয়েছেন, কোনওদিন সফল হয়েছেন কোনওদিন হননি কিন্তু কখনো বলেননি যে, ‘পায়ে সাতটা অপারেশন নিয়ে খেলছি আর আপনারা সমালোচনা করেন।’
এদিক থেকে মাশরাফি সবার চেয়ে আলাদা।