নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ সিরিজ দেখা যাবে না টিভিতে!

আসন্ন ২০২২ সালের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে দুই টেস্ট সিরিজ খেলার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। তবে এখন পর্যন্ত মিডিয়া স্বত্ব কিনতে আগ্রহ দেখায়নি দেশের লোকাল কোনো সম্প্রচারকারী। যার কারণে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ বাংলাদেশের কোনো চ্যানেলে না দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন বাংলাদেশ দল। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে পহেলা জানুয়ারি সিরিজের প্রথম টেস্ট ও নয় জানুয়ারি দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি হবে দুই দল। বে ওভালে সিরিজের প্রথম টেস্টের মাত্র ৪০ দিন বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো সম্প্রচারকারী এই সিরিজ আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেনি।

বাংলাদেশের স্পোর্টস মার্কেটিং কোম্পানি টোটাল স্পোর্টস মার্কেটিং (টিএসএম) এই সিরিজের সম্প্রচার স্বত্ব পেলেও এখন পর্যন্ত কোনো সম্প্রচারকারী এই সিরিজের জন্য বিড করেনি বলে জানান কোম্পানিটির মালিক মঈনুল হক চৌধুরী।

মইনুল জানান, ‘ নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট ৬ বছরের জন্য তাদের সম্প্রচার স্বত্ব দিয়েছে টিএসএমকে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে জানুয়ারিতে দুই টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। আমি এখন পর্যন্ত সিরিজটি বিক্রির চেষ্টা করছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউই এটি বিড করতে আগ্রহ দেখায়নি। আমি ধারণা করছি এই সিরিজটি হয়তো অবিক্রীত থাকবে। ‘

যদি এই সিরিজের সম্প্রচার স্বত্ব অবিক্রীত থাকে তাহলে বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকরা এবার টেলিভিশনের কোনো চ্যানেলেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচগুলো উপভোগ করতে পারবে না। ভারত সহ আশেপাশের কোনো উপমহাদেশেই দেখানো হবে না সিরিজটি। এমনকি ওটিটি প্লাটফর্ম আমাজন প্রাইমে লাইভ স্ট্রিম দেখানো হলেও বাংলাদেশীরা এই সার্ভিসটি নিতে পারবে না।

মঈনুল জানান, ‘এই সিরিজ অবিক্রীত থাকুক এমনটা আমিও চাইনি। আমি চেষ্টা করছি স্বত্ব বিক্রি করার। তবে যদি কেউই এটা কিনতে আগ্রহ না দেখায়, তাহলে এই সিরিজটি সম্প্রচার করা যাবেনা। আমি সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করতে পারি বা না পারি আমাকে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটকে আইনগত কারণে বাধ্যতামূলক অর্থ প্রদান করতেই হবে।’

বিশ্বকাপের ভরাডুবি আর ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে হতাশাজনক পারফরম্যান্সেই যেনো মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে দেশীয় সম্প্রচারকারীরা। এছাড়াও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এর আগে খেলা ৩২ ম্যাচের সবকটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ দল। টিএসএমের মালিক মঈনুলের মতে বিশ্বকাপ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের হতাশাজনক পারফরম্যান্স, করোনায় ব্যবসায়িক ক্ষতি সব মিলিয়েই এই সিরিজটি কিনতে কেউ আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

মঈনুল আরো বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছিনা কেনো কেউই সিরিজের স্বত্ব কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। বাংলাদেশের পারফরম্যান্স একটা কারণ হতে পারে কিন্তু এর মানে এই না যে নিউজিল্যান্ডে তাঁরা সবসময়ই খারাপ করে এসেছে। করোনা ভাইরাস সম্প্রচার মার্কেটেও বড় প্রভাব ফেলেছে।’

এমনকি দেশের জাতীয় সম্প্রচারযন্ত্র বাংলাদেশ টেলিভিশনও (বিটিভি) দেখাতে পারবে না এই সিরিজটি। বাংলাদেশের সম্প্রচার আইন অনুযায়ী বিটিভি যেনো জাতীয় খেলার ফ্রি সম্প্রচার স্বত্ব পেয়ে থাকে। তবে কোনো স্থানীয় অন্য কোনো সম্প্রচারকারী যদি স্বত্ব না কিনে তাহলে বিটিভিকে সরাসরি সম্প্রচার স্বত্ব কিনতে হবে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট (এনজেডসি) থেকে।

এনজেডসি যদি ফিড সরবরাহ না করে,  তাহলে বিটিভিকে সরাসরি লন্ডনের বিটি টাওয়ারের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। আর এটা বিটিভির জন্য যথেষ্ট ব্যয়বহুল। খরচ হতে পারে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার ডলার। সব মিলিয়ে তাই খেলা দেশের দর্শকদের সামনে আনার জন্য যথেষ্টরকমের ‘যদি-কিন্তু’র পথ পাড়ি দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link