চোট কাটিয়ে চেনা রূপে

গতি আর বাউন্সার দিয়েই মূলত প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের পরাস্থ করতে পারদর্শী তিনি। তিন ফরম্যাটেই তিনি সেরাদের একজন। কাঁটা আঙুল নিয়েও বল হাতে গতির ঝড় তুলছেন নিয়মিতই। গতি আর বাউন্সারে বরাবরই বল হাতে আগ্রাসী ভূমিকায় থাকেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার প্যাট কামিন্স।

প্রায় দেড় বছর পর ওয়ানডে দলে ফেরা। প্রথম ম্যাচটা বল হাতে আপন রঙে রাঙাতে পারেননি প্যাট কামিন্স। লঙ্কানদের পাহাড়সম সংগ্রহের ম্যাচে উইকেটশূন্য থাকেন এই পেসার। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচটায় দুর্দান্ত কিছু করে দেখাতে পারেননি তিনি। ব্যাট হাতেও ফেরেন শূন্য রানে। প্রথম ওয়ানডে হতশ্রী পারফরম্যান্সের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বল হাতে দাপট দেখিয়েছেন কামিন্স।

দুর্দান্ত বোলিংয়ে ধসিয়ে দিয়েছেন লঙ্কান ব্যাটিং শিবির। তবে নিজের সেরার দিনে দলের ব্যর্থতায় হার নিয়েই মাঠ  ছাড়তে হয়েছে কামিন্সকে।

দানুশকা গুনাথিলাকে দিয়ে শুরু। এরপর একে একে ডি সিলভা, ওয়েলালাগে, ভ্যানডারসের উইকেট শিকার করেন এই অজি পেসার। মাত্র ৩৫ রানে নেন ৪ উইকেট। লঙ্কানদের বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা জাগলেও মিডল অর্ডারে আঘাত হেনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান কামিন্স।

ওয়ানডে ফরম্যাটে সময়টাও ভাল যাচ্ছিল না। ২০২০ সালে নিজের খেলা সর্বশেষ  সিরিজ দু’টিতে ইংল্যান্ড ও ভারতের বিপক্ষে বেধড়ক পিটুনি খেয়েছিলেন তিনি। লম্বা সময় পর নতুন উদ্যমে, নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ভাল কিছুর প্রত্যয়ে ওয়ানডে জার্সিতে ফেরা। কিন্তু, প্রত্যাবর্তনের ম্যাচেও সেই পুরনো রেশ। ক্যালেন্ডারের পাতায় বছর ঘুরলেও, বদলায়নি কামিন্সের ভাগ্য। সাদামাটা বোলিংয়ে লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজ শুরু।

সেখান থেকে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ানো। কামিন্সের মত বোলিংয়ের দেখা মিলছিল না লম্বা সময় ধরেই। প্রায় তিন বছরের বেশি সময় পর ওয়ানডেতে তিনের বেশি উইকেট নিলেন তিনি। ৮.৪ ওভারে ৩৫ রানে ৪ উইকেট। ৫২ বলের মাঝে ৩০ বলই করেছেন ডট। চিরচেনা রূপে দেখা মিলল কামিন্সের।

তবে, ব্যাট হাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি তিনি। আগের ম্যাচে দলের প্রয়োজনেও হাসেনি কামিন্সের ব্যাট। ফিরেছিলেন শূন্য রানেই। একই চিত্র দ্বিতীয় ম্যাচেও। দল যখন জয়ের কাছে গিয়েও ধুঁকছে, কামিন্স তখন ফেরেন মাত্র ৪ রানের ইনিংসে। এইত আইপিএলের পঞ্চদশ আসরে দ্রুততম ফিফটিতে যৌথভাবে নাম লেখান তিনি। আইপিএলের মঞ্চে দেখা মিলেছিল ব্যাটার কামিন্সের বিধ্বংসী এক রূপ।

দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কোমরের নিচের চোট বয়ে বেড়াচ্ছেন প্যাট কামিন্স। চোট পুরোপুরি সেরে উঠেনি, প্রয়োজন বিশ্রামের। তবু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে ফিরেছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিজেকে যতটা সম্ভব ঝালিয়ে নেওয়ার একটা প্রচেষ্টা।

প্রথম ওয়ানডেতে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর বল হাতে ঠিকই দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যাটার কামিন্স এখন অবধি নিজের সামর্থ্যের সিকিভাগও দেখাতে পারেনি এই সিরিজে। আপাতত ইনজুরি কাটিয়ে সেরা ছন্দে কামিন্সের ফেরাই যেন দলের জন্য স্বস্তির নিঃশ্বাস।

অস্ট্রেলিয়ার এই টেস্ট অধিনায়ক নিশ্চয়ই চাইবেন বাকি দুই ফরম্যাটের মতন ওয়ানডেতেও বিশ্বব্যাপি নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে। তবে, সবকিছু ছাপিয়ে এই অজি তারকার মূল লক্ষ্যটা নিশ্চয়ই আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ঘরের মাটিতে দলের জন্য সেরাটা দেওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link