‘সেঞ্চুরিয়ান’ লঙ্কান

ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সংস্করণ নি:সন্দেহে সাদা পোশাকের টেস্ট ক্রিকেট। জন্মলগ্ন থেকেই টেস্ট ক্রিকেটের আবেদন একই আছে দর্শক-সমর্থকদের মাঝে। আভিজাত্যের এই ফরম্যাটে পারফরম্যান্স করে অনেকেই পেয়েছেন কিংবদন্তির খ্যাতি। তাই লাল বলে একশ ম্যাচ খেলার মাইলফলক অর্জন করা অনেক বড় কিছু।

এখন পর্যন্ত মোট ৭২ জন ক্রিকেটার পেরেছেন শততম টেস্ট ম্যাচ খেলতে। এদের মধ্যে মাত্র ৬ জন শ্রীলঙ্কান। লঙ্কান এই ছয় তারকাকে নিয়েই আজকের আয়োজন। 

  • মাহেলা জয়াবর্ধনে

ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার মাহেলা জয়াবর্ধনে। নিজের ক্যারিয়ারে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপের মেরুদণ্ড ছিলেন তিনি। ১৯৯৭ সালে টেস্ট অভিষেকের পর থেকে অবসর পর্যন্ত বাইশ গজে দুর্ভেদ্য একজন ছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

এ সময় মোট ১৪৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন তিনি। পঞ্চাশের কাছাকাছি গড়ে ১১৮১৪ রান করেছিলেন মাহেলা, অর্ধশতকের অর্ধশতকের পাশাপাশি ৩৪টি শতক আছে তাঁর নামের পাশে। শ্রীলঙ্কান এই কিংবদন্তির শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য এসব সংখ্যাই যথেষ্ট।

  • কুমার সাঙ্গাকারা

বিশ্বের সর্বকালের সেরা উইকেটরক্ষকের তালিকা করা হলে কুমার সাঙ্গাকারা রাখতে বাধ্য হবেন যে কেউ। তবে উইকেটের পিছনেই শুধু নয়, সাঙ্গাকারা উইকেটের সামনেও ছিলেন দুর্দান্ত। ২০০০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ক্যাপ মাথায় উঠেছিল তাঁর।

এরপর থেকে শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডারে অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছিলেন তিনি। অবসরের আগ পর্যন্ত মোট ১৩৪টি টেস্ট খেলা কুমার সাঙ্গাকারা ১২৪০০ রান করেছেন। এছাড়া নিজের ক্যারিয়ারে ৫২টি ফিফটি এবং ৩৮টি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। তাঁর ৫৭.১৪ ব্যাটিং গড় বিস্মিত করার মতই।

  • মুত্তিয়া মুরালিধরন

সাদা পোশাকে ৮০০ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়া একমাত্র বোলার শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরন। নিজের স্পিন মায়াজালে কত কত নামীদামী ব্যাটাররা কাবু হয়েছে তার ইয়াত্তা নেই।

১৯৯২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবার লাল বল হাতে দেখা গিয়েছিল মুরালিধরনকে। এরপর ১৮ বছরের ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১৩৩ ম্যাচ। মাত্র ২২.৭৩ বোলিং গড়ে ৮০০ উইকেট শিকার করা মুরালি ৬৭ বার ফাইফারের দেখা পেয়ছিলেন।

  • চামিন্দা ভাস

সুইং কিংবা গতিতে একেবারে তুখোড় ছিলেন চামিন্দা ভাস। কিন্তু নিজের ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় তিনি ছিলেন ধারাবাহিকতার প্রতীক। ১৯৯৪ সালে টেস্ট ক্রিকেটে পা রাখার পর থেকে লঙ্কান পেস বিভাগকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।

সবমিলিয়ে মোট ১১১টি টেস্ট ম্যাচ খেলা ভাসের ঝুলিতে আছে ৩৫৫ উইকেট। ত্রিশের কম বোলিং গড় টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর কার্যকারিতার প্রমাণ।

  • সনাথ জয়াসুরিয়া

আক্রমনাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য বিখ্যাত সনাথ জয়াসুরিয়া টেস্ট ক্রিকেটে নিজের চিহ্ন রেখে যেতে ভুল করেননি। ১৯৯১ সালে অভিষেকের পর থেকে ব্যাটিিং এবং বোলিং উভয় দিক থেকেই দলের জন্য সেরাটা দিয়েছেন তিনি।

ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে মোট ১১০ ম্যাচ খেলা জয়াসুরিয়া ৬৯৭৩ রান করেছেন। চল্লিশের বেশি গড় এবং ৬৫.২৭ স্ট্রাইক রেটের পাশাপাশি ৩১টি হাফসেঞ্চুরি এবং ১৪টি সেঞ্চুরি আছে তাঁর নামের পাশে। এছাড়া বল হাতে ৩৪.৩৫ গড়ে ৯৮ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।

  • অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস

সর্বশেষ শ্রীলঙ্কান হিসেবে শততম টেস্ট ম্যাচ খেলার কীর্তি অর্জন করেছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। তবে ইনজুরি যেভাবে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছিল তাতে অবাক হতেই হয় কিভাবে এই রেকর্ড গড়লেন তিনি। ১৩ বছর আগে প্রথম টেস্ট খেলা ম্যাথুস ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ভিন্নরকম সেঞ্চুরি পূর্ণ করলেন

এখন পর্যন্ত ৬৯৫৩ রান করা ম্যাথুসের ব্যাটিং গড় ৪৫.১৫। ৩৮টি ফিফটি ছাড়াও ১৩টি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। আবার বল হাতে অনেকদিন নিয়মিত দেখা না গেলেও ৩৩টি টেস্ট উইকেট আছে তাঁর পকেটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link