দ্য ওয়াল, ভরসার প্রতীক কিংবা দ্য আন্ডাররেটেড গ্রেট – তাঁকে অনেক নামেই ডাকা যায়। তাঁকে নিয়ে আলোচনা অনেক। সমালোচনা সেই তুলনায় নেই বললেই চলে। এখানেই তো ভারতীয় ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিড় অনন্য।
ডানহাতি এই ব্যাটার বরাবরই তাঁর ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দলকে এগিয়ে রাখতেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বল মোকাবেলা করার রেকর্ড আজো দ্রাবিড়। ক্রিকেট থেকে অবসরের পর তিনি ভারতীয় অনূর্ধ্ব ১৯ এবং ভারত ‘এ’ দলের কোচ ছিলেন। বর্তমানে তিনি এনসিএ-র প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবুও এই গ্রেট ওয়ালের কত কিছুই আমাদের অজানা।
- অভিষেকের আগেই অবসর!
রাহুল দ্রাবিড় তার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি অভিষেকের আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচটিই হবে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটে ভারতের হয়ে তার প্রথম এবং শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
এইভাবে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান ক্রিকেট ইতিহাসে একজন বিরল খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন, যিনি অভিষেকের আগেই নিজের অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
- হকি খেলোয়াড়
রাহুল দ্রাবিড় কর্ণাটক জুনিয়র রাজ্য দলের সদস্য ছিলেন এই তথ্যটি অনেকেই জানেননা। জীবনের প্রথম দশায় তিনি ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হকিতে ক্যারিয়ার গড়তে চেয়েছিলেন। যদিও পরবর্তীতে ক্রিকেটেই আগ্রহ খুঁজে পেয়েছিলেন এই ব্যাটার।
- এমবিএ ড্রপআউট
ভারতীয় ক্রিকেটের অধিকাংশ তারকা শিক্ষাগত যোগ্যতায় বেশ পিছিয়ে। হার্ডিক পান্ডেয়ার মতো ক্রিকেটাররা তো স্কুলের দশম শ্রেণীর গন্ডীও পেরোতে পারেননি। অন্যদিকে, রাহুল দ্রাবিড় স্নাতক শেষ করে এমবিএ ডিগ্রি নিচ্ছিলেন। যদিও, তিনি তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের কারণে এমবিএ বাদ দিয়েছিলেন।
- টেস্ট খেলুড়ে সব দেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরির রেকর্ড
রাহুল দ্রাবিড় তাঁর সময়ের প্রতিটি টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলির বিপক্ষে টেস্ট সেঞ্চুরিকারী প্রথম ব্যাটসম্যান ছিলেন। ২০০৪ সালে এই অনন্য কীর্তি অর্জন করেছিলেন তিনি। তখন কেবল দশটি দেশ টেস্ট খেলার মর্যাদা পেয়েছিল।
তখনো আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড টেস্ট খেলার মর্যাদা পায়নি। অর্থাৎ বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সবার বিপক্ষেই তাঁর সেঞ্চুরি রয়েছে টেস্টে।
ভারতীয় উইকেটরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে দ্রুততম ফিফটি
ক্যারিয়ারের প্রাথমিক পর্যায়ে একজন উইকেট-রক্ষক ব্যাটসম্যান ছিলেন দ্রাবিড়। এমএস ধোনির ভারতীয় ক্রিকেট দলে আসার পর, তিনি তার উইকেট-রক্ষক দায়িত্ব ধোনিকে দিয়েছিলেন।তবুও, ওডিআইতে ভারতীয় কোন উইকেট-রক্ষকের দ্বারা দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড এখনও দ্রাবিড়ের দখলে।
যদিও অনেক ভক্ত অনুমান করবেন ধোনি এই রেকর্ডটির মালিক। তবে তিনি দ্রাবিড়ের পরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। দ্রাবিড় ২০০৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ বলে ৫০ রান করেছিলেন।
- চারবিহীন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার
তিনিই একমাত্র ভারতীয় ব্যাটসম্যান যিনি কোনো বাউন্ডারি না দিয়েও খেলার সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে সীমানার বাইরে তিনটি বল পাঠান। দ্রাবিড় তার ক্যারিয়ারে একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটিতে পরপর তিনটি ছক্কা মেরেছিলেন। যার ফলে এই অনন্য রেকর্ডটি গড়েছিলেন।
- ১৯৯৯ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ স্কোরার
অনেকে ভেবে থাকবেন যে রাহুল দ্রাবিড় শুধুমাত্র টেস্ট ক্রিকেটেই ভালো পারফর্ম করেছেন। কিন্তু ১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে দ্য ওয়াল অফ ইন্ডিয়া” রাহুল দ্রাবিড় সর্বোচ্চ রান-স্কোরার ছিল। ৪৬১ রান করে পুরো বিশ্বকাপের মঞ্চে তিনি সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবে আবির্ভূত হন।
- স্কটিশ দ্রাবিড়
রাহুল দ্রাবিড় ২০০৩ সালে স্কটল্যান্ডের হয়ে ১১ টি ম্যাচ খেলে ৬৬.৬৬ গড়ে মোট ৬০০ রান করেছিলেন। স্কটিশ সালটিয়ার্স যখন ইংলিশ কাউন্টির ন্যাশনাল লিগে খেলার সুযোগ পেলো তখন তাঁরা শচীন টেন্ডুলকারকে তাঁদের দলে চেয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট রাহুল দ্রাবিড়কে পাঠিয়েছিলো।