টি-টোয়েন্টির ‘সৌম্য-আফসোস’

ওয়ানডে ও টেস্ট নয়! শুধু টি-টোয়েন্টির কথা বলছি।

প্রপার গাইডলাইন, লোকটার প্রতি ভরসা, প্রতিদিন ক্লিক করবে এই প্রত্যাশা না করে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল নিজেদের পরিকল্পনায় নিজেরা স্টিক থেকে একটা মানুষকে খেলালে বাংলাদেশ একটা বেটার টি-টোয়েন্টি দল হতে পারতো। লোকটার নাম – সৌম্য সরকার।

সৌম্যর মতো একজন ক্রিকেটার যে কোনও টি-টোয়েন্টি দলের ডেপথ বাড়ায়, ভাবার অপশন বাড়ায়, অধিনায়কের চাপ কমায়। তবে শুরুতেই নেতিবাচক দিকটা লিখে নিই।

সৌম্য সরকারের বর্তমান মাইন্ডসেট আমার ভালো লাগে না, সেটা ওনার ব্যক্তিগত আচরণের কারণে। তাঁর মধ্যে আমার মনে হয়েছে ক্রিকেটীয় ভাবনা আর খুব বেশি নেই। তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যক্তিগত জীবন গুরুত্ব পায়, পেশা আর ব্যক্তিগত জীবনের ফাইন লাইনটা মনে হয় উনি টানতে পারেননি, যেটার প্রভাব এখন খেলাতেও রয়েছে।

যা হলে যা হতে পারতো। সৌম্যকে ২০১৭ সাল থেকেই লিটনের সাথে ফ্রি লাইসেন্স দিয়ে টি-টোয়েন্টি দলের ওপেনিংয়ের দায়িত্ব দিয়ে দেয়া দরকার ছিল। এটাই হতো বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের প্রথম ‘রিয়েল ইনটেন্ট ওয়ালা’ সিদ্ধান্ত।

এরপর একে একে সাজাই। মিরাজ (আমার ওয়ান ডাউন) – রোল থাকবে টপ অর্ডারে কলাপ্স সামলানো, উইকেটে ব্যস্ত থাকা, কাইফের মতো রোল, রানিং বিটুইন দ্য উইকেট দিয়ে রানের চাকা সচল রাখা। এরপর -সাকিব, আফিফ, সাব্বির, মোসাদ্দেক, শেখ মেহেদী, নাসুম, তাসকিন,  হাসান মাহমুদ।

সৌম্যকে নিয়ে কথা বলছিলাম, ওখানেই থাকি। অনেকেই বলে অধারাবাহিক। ধারাবাহিকতার মানদণ্ড হচ্ছে এভারেজ- সৌম্যর টি-টোয়েন্টি এভারেজ ১৮, বাংলাদেশে এখন যারা গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার তাদের মধ্যে আফিফ একজন, তার এভারেজও ১৮, মুশির ১৯।

আর টি-টোয়েন্টির আরেকটা নাম্বার মাধ্যম হইলো স্ট্রাইক রেট- বাংলাদেশের এখনকার একাদশের যে কারও চেয়ে সৌম্য সরকারের স্ট্রাইক রেট বেশি – ১২২।

আর দলে এমন কিছু ক্রিকেটার রাখা প্রয়োজন যারা আপনাকে প্রতিদিন সার্ভ করবে না, কিন্তু তারা ম্যাচ উইনার, জাস্ট উদাহরণ হিসেবে ম্যাক্সওয়েলের কথা টানি, ম্যাক্সওয়েল আহামরি কনসিসট্যান্ট না কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মতো দল তাকে দিনের পর দিন রাখছে এবং সে বড় ম্যাচে নিজেকে প্রমাণও করেছে। এমনও গেছে টানা ৫-৬-৭ ইনিংস যে ডাবল ডিজিটেই যেতে পারেননি।

এই আপনার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথাই বলি- ম্যাক্সওয়েলের রান ছিল এমন ১৮, ৫, ৬, ০, ০, ৭! ফাইনালে ১৮ বলে ২৮- গুরুত্বপূর্ণ ক্যামিও। সৌম্য দলে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি সিক্থ বোলারের চাহিদা পূরণ করবে। যেভাবে আভেশ খানের খারাপ দিনে, হার্দিক পুরো চারটা ওভার করে দিলেন।

সৌম্য অন্তত ২ টা ওভারের কোটা পূরণ করতে পারবেন। সাথে মোসাদ্দেকের অপশন তো থাকেই। সাথে সৌম্য দুর্দান্ত ফিল্ডার। বাংলাদেশের দুইজন ক্রিকেটার অক্রিকেটীয় কারণে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন, তাদের দেখ ভাল হয়নি, ভালো নারচারিং হয়নি, উল্টো তারা যখন ভালো খেলেছেন তখন আমরা এই দুজনকে টি-টোয়েন্টি ওয়ানডের পারফরম্যান্স দেখে টেস্ট টিমে নিয়েছি।

একজন সৌম্য সরকার, আরেকজন সাব্বির রহমান!

বর্তমান এশিয়া কাপে বাংলাদেশ স্কোয়াডে সাব্বিরের চেয়ে ভালো টি-টোয়েন্টি এভারেজ ও স্ট্রাইক রেট কারওই নেই! এটা রিয়েলিটি, আপনার মাথায় যেটা ওটা পারসেপশন।
সৌম্যর ছবিটা ক্রিকিনফো থেকে নামানোর সময় ফাইল নেইমে অটোমেটিক লিখেছি- আফসোস! আসলেই, আফসোস।

আফসোস, ওরে নিয়ে সরাসরি আজীবনের জন্য বাদ বলে টিকার দেয়া খুবই সহজ অনেক আনট্রাস্টেড মিডিয়ার জন্য, এতে কাটতিও বাড়ে, ওরা কাটতিই চায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link