ঘরোয়া ক্রিকেট মৌসুম শেষ হতে আর এক মাসেরও কম সময় বাকি। কিন্তু এখনো নিজদের পারশ্রমিক পাননি পাকিস্তানের প্রায় ২০০ ক্রিকেটার।৩০ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ঘরোয়া ক্যালেন্ডারে ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপ, কায়েদ-এ-আজম ট্রফি সহ অন্যান্য ঘরোয়া প্রতিযোগিতা গুলোতে অংশ নেয়া ১৯২ জন খেলোয়াড়রা মাসিক ভাতা বা ম্যাচ ফি কোনোটিই এখনো বুঝে পাননি।
শুধুমাত্র দৈনিক ভাতাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের। খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক জনিত এই সমস্যা মূলত এবার পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্যালেন্ডারে একাধিক নতুন টুর্নামেন্ট যোগ হবার কারণ হিসেবে দেখছেন অনেকেই। পাকিস্তান জুনিয়র লিগ – নামক একটি নতুন টুর্নামেন্টে এবার শুরু করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
এছাড়াও খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি এবং মাসিক বেতন বাড়ানোর নিয়েও আবেদন করা হয়েছিলো পিসিবির কাছে। পিসিবির বোর্ড অফ গভর্নররা সেই প্রস্তাব অনুমোদন দিলেও এখনো বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে পিসিবি। পারশ্রমিক জনিত এই সমস্যার কারণে প্রায় ২০০ ক্রিকেটারের জীবনধারণই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে যাদের জীবনধারণের একমাত্র মাধ্যম ক্রিকেট।
এদিকে পাকিস্তানের অর্থনীতিও টালমাটাল অবস্থায় যাচ্ছে। রূপির মূল্য কমতে শুরু করেছে যার ফলে দেখা দিচ্ছে মুদ্রাস্ফীতির। নভেম্বর মাসে পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফীতি ছিলো ২০ শতাংশের ওপরে। পাকিস্তানের ঘরোয়া মৌসুম মূলত আগস্ট মাসে শুরু হয়। প্রায় ৮০ শতাংশ ক্রিকেটার ই মনে করছেন এ মাসেই তারা তাদের পারিশ্রমিকের কিছু অংশ হাতে পাবেন।
পিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ৩৩ জন ক্রিকেটার তাদের সমস্ত বেতন ভাতা নিয়মিতই পাচ্ছেন। যদিও তাদের ম্যাচ ফি গুলো কয়েক ধাপে দিচ্ছে পিসিবি। ঐতিহাসিক ভাবেই পিসিবি তাদের চুক্তি নিয়ে খেলোয়াড়দের সাথে আলোচনায় বসে না।তারা খেলোয়াড়দের চুক্তি প্রস্তাব করে এবং খেলোয়াড়দেরও সেটা সই করতে হয়।
যদিও এবার খেলোয়াড়দের সাথে আলোচনার পর কেন্দ্রীয় চুক্তিতে কিছু শর্ত শিথিল করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে রমিজ রাজার নেতৃত্বাধীন বোর্ড। আগের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা খেলোয়াড়রা পিসিবির প্রস্তাব করা চুক্তির শর্তসমূহে আপত্তি না করলেও বাবর, রিজওয়ানরা নিজেদের ব্যবসায়িক মূল্য সম্পর্কে খুবই সচেতন এবং তারা চান যে এই বিষয়টি চুক্তিতে আরো গুরুত্ব দেয়া হোক।
পারিশ্রমিক পাবার ব্যাপারটি ঝুলে থাকলেও পিসিবি এবং ঘরোয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে এ নিয়ে চলছে আলোচনা। একাধিক খেলোয়াড় নিশ্চিত করেছেন, এই সাপ্তাহেই ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপ এবং এরপর কায়েদ-এ-আজম ট্রফির পারশ্রমিক পাবার ব্যাপারে পিসিবির পক্ষ থেকে আশস্ত হয়েছেন তারা। ৫ ক্যাটাগরিতে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক দিয়ে থাকে পিসিবি। নতুন আর্থিক মডেল অনুযায়ী কায়েদ-এ-আজম ট্রফি খেলা খেলোয়াড়রা ম্যাচ প্রতি পান ১০০০০০ রুপি। সাদা বলের টুর্নামেন্টে খেলা খোলোয়াড়রা ম্যাচ ফি পান ৬০০০০ রুপি।
দেশের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন আর মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে টালমাটাল অবস্থায় আছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও। পেশাদার ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক দেয়া নিয়ে তাই এখন কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে রমিজ রাজার।