শাদাব খান, রশিদ খান, মেহেদী হাসান মিরাজ, সন্দীপ লামিছানে ও সালেহ আহমেদ শাওন গাজী – প্রথম নামগুলো তো নিশ্চয়ই অচেনা নয়। কিন্তু, শেষের এই মানুষটা কে? তাঁদের মধ্যে মিল একটাই – সবারই উত্থান হয়েছিল ২০১৬ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে।
সেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। বাঁ-হাতি স্পিনার শাওন গাজী একাই নিয়েছিলেন ১২ টি উইকেট। সতীর্থ মিরাজ, নাজমুল হোসেন শান্ত কিংবা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন যখন জাতীয় দলের বড় তারকা – শাওন তখন অনেকটা হারিয়েই গেছেন।
শুধু বিশ্বকাপই নয়, ভারতের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে। সেখানে ভারতের রশিদ খান ছিলেন, ভারতের ঋষাভ পান্ত ছিলেন। সেখানে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন শাওন। তারপরও তিনি হারিয়েই গেলেন।
না, শাওন ক্রিকেট থেকে দূরে যাননি। ঘরোয়া ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে তাঁর নিয়মিত সুযোগ মেলে না। তবে, প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলেন। আর সুযোগ মিললে খেলেন খ্যাপ ক্রিকেট। আজ চাঁদপুর, কাল নারায়নগঞ্জ তো পরশু কুমিল্লা। এভাবেই চলছে শাওনের ক্রিকেট জীবন। তবে, স্বপ্ন দেখাটা ভুলে যাননি। বিস্তারিত কথা বলেছেন খেলা ৭১-এর সাথে।
শাওনের পথচলাটা সহজ ছিল না। জীবনের বাঁকে বাঁকে তাঁর উত্থান পতন ছিল। পেটের দায়ে এমন কিছু কাজও করতে হয়েছিল, যেটা আসলে একজন ক্রিকেট তারকাকে করতে দেখতে আমরা অভ্যস্ত নই।
বন্ধুদের অনেকেই জাতীয় দলের বড় তারকা। তাঁদের ঘিরে দর্শকদের উচ্ছ্বাস। মিডিয়ার আগ্রহ। শাওন আছেন এই সব কিছুর বাইরে। তবে, বন্ধুদের পারফরম্যান্স তাকে মুগ্ধ করে, অনুপ্রাণিত করে। সেখান থেকে নিজে আরও ভাল করার তাগিদ পান। তাঁদের কাছ থেকে সাহায্যও পান।
শাওন বলেন, ‘হ্যাঁ, ওদের সাথে যোগাযোগ হয়। সম্পর্ক ভাল। তবে, ওরা তো অনেক বড় ক্রিকেটার। চাইলেই তো আর সব সময় ফোন দেওয়া যায়। তবে, হ্যাঁ, প্রয়োজনে সবাইকেই পাশে পাই।’
শাওন এখনও নিজেকে প্রমাণ করতে চান। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে খেলতে চান আবার। সে জন্য দরকার পারফরম্যান্স। আর সেই পারফরম্যান্সের দরজা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট। সেখানেই তিনি দিচ্ছেন নিজের পুরোটা মনোযোগ।
একটু আক্ষেপ তো আছেই। শাওন যেমন বললেন, ‘যতই ভাল খেলেন না কেন, একটু সমর্থন দরকার। হয়তো কেউ পাশে থাকলে হয়তো আমার জন্য আরেকটু সহজ হত সব কিছু।’
বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্নটা এখনও অধরা। তাই পারিবারিক চাপ আছে। কেউ বলে বিদেশ চলে যেতে। কেউ বলে ব্যবসায় মন দিতে। তবে, ক্রিকেটটাকেই আকড়ে ধরে আছেন শাওন। নিজেকে প্রমাণ করে আবারও ফিরতে চান লাইমলাইটে। শাওনের এই ক্রিকেট প্রেম অব্যহত থাকুক।