আফগান পরীক্ষা নাকি পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিরিজ?

ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরেই সেরা দলগুলোর একটি। ওয়ানডে সুপার লিগে বাংলাদেশের অবস্থানও সেটির প্রমাণ দেয়। তাই তো বিশ্বকাপকে ঘিরে সমর্থকদের স্বপ্নও এবার বড়। ট্রফি জয়ের আকাঙ্ক্ষা মুখ ফুটে খুব একটা না বললেও সেমিফাইনালে খেলার ব্যাপারে আশাবাদী সব বাংলাদেশি ভক্ত-সমর্থক।

তবে বিশ্বকাপের আগে আরেকটি বড় মঞ্চ এশিয়া কাপ। বড় কোন আন্তর্জাতিক ট্রফি না জেতা বাংলাদেশ এবার যদি এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারে সেটাও হবে বিশাল কিছু। বাংলাদেশের মত বড় দল না হলেও আফগানিস্তানের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপ। উদীয়মান শক্তি হিসেবে ক্রিকেট বিশ্বকে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়ার জন্য হলেও এসব টুর্নামেন্টে ভাল করতে প্রতিজ্ঞ তারা।

আর এমন প্রত্যাশিত দুইটি ক্রিকেট আসরের আগে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ আর আফগানিস্তান। স্বাভাবিকভাবেই জয়পরাজয় ছাড়িয়ে দুই দলের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে নিজেদের যাচাই করে নেয়া। সম্ভাব্য সেরা স্কোয়াড নিয়ে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে অংশ নিতে এই সিরিজ কাজে লাগাতে চায় উভয় ম্যানেজম্যান্ট।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে বুধবারের ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান দ্বৈরথ, যেখানে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনার দিকেই পাল্লা ভারী। তবে প্রথমবারের মত ওয়ানডে ফরম্যাটে সিরিজ জিততে মুখিয়ে আছে হাসমতউল্লাহ শাহিদির দল।

সংবাদ সম্মেলনে আফগান অধিনায়ক জানান নিজদের লক্ষ্যের কথা। তিনি বলেন, ‘এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপে আমাদের খেলা আছে, তাই বাংলাদেশ দলের মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নিজেদের যাচাই করাটা আমাদের জন্য একটি ভাল প্রস্তুতি হবে।’

এই ব্যাটার আরো যোগ করেন, ‘বাংলাদেশ ঘরের মাঠে খুবই শক্তিশালী দল। বিদেশেও তাঁরা গত কয়েক বছর ধরে ভাল করছে। আমরাও অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে ভাল ক্রিকেট খেলছি।’

এর আগে একমাত্র টেস্টে অবশ্য অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল হাসমতউল্লাহ শাহিদি, রহমত শাহরা। ৫৪৬ রানের জয়ে সে সময় রেকর্ড বইয়ে ঝড় তুলেছিল বাংলাদেশ। তবে সেটা ভুলেই এগিয়ে যেতে চায় দলটি; রশিদ, মুজিবদের মত সুপারস্টাররা দলে ফেরায় আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে আফগান শিবিরে।

তাই তো আফগানিস্তানকে একেবারেই ছোট করে দেখছেন না টাইগারদের হেড কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। বরং সমীহের চোখেই দেখছেন তিনি। তাঁর মতে, দল হিসেবে রশিদ খানেরা বেশ শক্তিশালী। তাই এই লঙ্কানের বিশ্বাস আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচগুলো হতে পারে এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপের জন্য আদর্শ প্রস্তুতি।

এর আগে দুইবার আফগানিস্তানের সাথে সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে দুইবারই ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল টিম টাইগার্স; এবারও সেই আধিপত্য ধরে রাখতে চাইবে তাঁরা। অন্যদিকে, আফগানদের ইচ্ছে পরাজয়ের বৃত্ত ভেঙে সিরিজ জয়।

এ বছরের শেষদিকে, অক্টোবর নভেম্বরে ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত হবে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ; এর আগে পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে আয়োজন করবে এশিয়া কাপ। বর্তমান ফর্ম অনুযায়ী এসব টুর্নামেন্ট ঘিরে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা আকাশ ছোঁয়া। সেই প্রত্যাশার কতটা পূরণ করতে পারবেন তামিম, সাকিবরা সেটার কিছুটা হলেও আভাস মিলবে আফগানদের বিপক্ষে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link