আপাতত বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলার পরিকল্পনা সাকিবের!

বাংলাদেশের অন্যান্য ক্রিকেটারদের চেয়ে সাকিব আল হাসান আলাদা। পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা, পেশাদারি মনোভাব কিংবা ক্রিকেটীয় মস্তিষ্ক – সাকিবের প্রতিদ্বন্দ্বী নেই কোন ক্ষেত্রেই। তাই তো সাকিব আল হাসান নিজেকে নিয়ে ভাবেন ব্যতিক্রমী উপায়ে, রেকর্ড তাঁকে আর ভাবায় না, দলের জন্য অবদান রাখাই আপাতত সাকিবের লক্ষ্য।

অবসর নেয়ার ব্যাপারেও সাকিব আল হাসানের চিন্তা চেতনা অনন্য। অফ ফর্ম, দর্শকদের সমালোচনা, নাম ভাঙিয়ে দলে থাকা এসব মোটেই সাকিবের সঙ্গে যায় না; নিজের অবস্থা বুঝে এমন পরিবেশ সৃষ্টির আগেই হয়তো নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার হয়তো বিদায় নিবেন।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসব নিয়েই কথা বলেছেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। ক্যারিয়ার নিয়ে পরিকল্পনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপাতত ইচ্ছে বিশ্বকাপ পর্যন্ত যতবেশি দলের জন্য কন্ট্রিবিউট করতে পারি। এবং এরপর পরের ধাপের প্ল্যান করতে পারবো।’

এই যে নিজেকে নিজেই যাচাই করে নেয়া সেই সংস্কৃতি বাংলাদেশ ক্রিকেটে দেখা যায় না বললেই চলে। তবে সাকিব আল হাসান তো নিজেই পথ তৈরি করেন, তাই তাঁর জন্য ভিন্ন কিছু করা কঠিন কিছু নয়। ক্যারিয়ারের কোন একটা পর্যায়ে পারফরম্যান্স কেমন, শরীর কেমন সায় দিচ্ছে সেসব বিশ্লেষণ করেই হয়তো বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সিদ্ধান্ত নিবেন খেলা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে।

বর্তমানে ওয়ানডে ফরম্যাটেই বেশি মনোযোগী বাংলাদেশ; দলের সবচেয়ে প্রিয় ফরম্যাটও বলা চলে এটিকে। চলতি বছরে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপও হবে পঞ্চাশ ওভারে, স্বাভাবিকভাবেই লাল-সবুজের ক্রিকেট দল নিয়ে প্রত্যাশা একটু বেশি। আর কোটি সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণে বড় দায়িত্ব নিতে হবে সাকিব আল হাসানকেই।

বাংলাদেশ দলের নিউক্লিয়াস ভাবা হয় সাকিব আল হাসানকে। ব্যাটিংয়ে পুরো দস্তুর ব্যাটসম্যান, বোলিংয়েও দলের মেইন বোলারদের জন্য – সাকিব দলে থাকা মানেই তাই বারো জন নিয়ে খেলা। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর নিষেধাজ্ঞার সেই কালো অধ্যায় না থাকলে ওয়ানডে দলের কাপ্তানি এই বামহাতির কাছেই হয়তো থাকতো।

অধিনায়কত্ব না থাকাতে অবশ্য পারফরম্যান্সে ভাটা পড়েনি একটুও; সাকিব আল হাসান এমনই একজন। অধিনায়ক হিসেবে যেমন দলের সেরা পারফর্মারদের একজন, তেমনি সাধারণ খেলোয়াড় হিসেবেও অধিনায়কের আস্থার জায়গা তিনি।

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সাকিব আল হাসান এমন ধারাবাহিক; তাঁর রেকর্ডও সেটার পক্ষে সাক্ষী দেয়। এই যেমন সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪০০০ রান এবং ৬০০ এর বেশি উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েছেন তিনি, আর এই মর্যাদার ক্লাবে প্রথম সদস্যও তিনি। তবে এসব রেকর্ডের চেয়ে লাল-সবুজের পোস্টারবয়ের কাছে দলের গুরুত্বই আগে।

রেকর্ড প্রসঙ্গে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘যেকোনো মাইলস্টোন অবশ্যই ইন্সপায়ার করে। আর এরকম কিছু হলে নিজের কাছে ভাল লাগবেই। আরো বেশি মোটিভেশান কাজ করে ভাল করার জন্য। কিন্তু আমি যেটা সবসময় বলি, দলের জন্য কন্ট্রিবিউট করতে চাই।’

তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা মোটামুটি ২০২৩ বিশ্বকাপের পরে অবসর নিবেন। ফলে নতুন এক পালাবদল ঘটবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে; সাকিব আল হাসান সেই পালাবদলে অংশ নিবেন কি না সেটা জানতে একটু অপেক্ষা করতেই হবে। ২০১৯ বিশ্বকাপ কাঁপানো সাকিব হয়তো এবারের আসরে নিজের পারফরম্যান্স বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link