অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ডাক – বিশ্বকাপে এর চেয়ে বাজে শুরু হতে পারতো না রোহিত শর্মার জন্য। ঘরের মাঠে সমর্থকদের সামনে দিয়ে ফিরতে হয়েছিল খালি হাতে, তখনি বোধহয় মনে জেদ জেগেছিল – আর সেই জেদের সামনে স্রেফ খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে আফগানিস্তানের বোলিং লাইনআপ।
৮৪ বলে ১৩১ রানের চোখে লেগে থাকার মত একটা ইনিংস খেলেছেন ভারতীয় ব্যাটার। ওপেনিংয়ে নেমে খেলেছেন ২৬তম ওভার পর্যন্ত, আর তাতেই ১৫৬ স্ট্রাইক রেটে করেছেন এবারের বৈশ্বিক আসরে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। আর সেজন্য ১৬টি চারের পাশাপাশি পাঁচটি বিশাল ছয় হাঁকাতে হয়েছে তাঁকে।
এতে অবশ্য দারুণ এক রেকর্ড লেখা হয়েছে রোহিতের নামের পাশে। আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ছক্কার মালিক এখন তিনি।
২৭২ রানের পুঁজি স্কোরবোর্ডে জমা হতেই রশিদ খানেরা নিশ্চয়ই ভারতকে ভড়কে দেয়ার পরিকল্পনা করে ফিল্ডিংয়ে নেমেছিলেন। জিততে না পারলেও অন্তত বিরাট কোহলিদের কঠিন পরীক্ষা নিতে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু কোথায় কি, হিটম্যানের হিটিংয়ের কোন জবাবই দিতে পারেনি দলটির বোলাররা; বলতে গেলে তাঁর একক ব্যাটিং নৈপুণ্যেই শুরুতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে আফগানিস্তান।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ফজল হক ফারুকীকে বাউন্ডারি মেরে শুরু রোহিত শর্মার দানবীয় ব্যাটিংয়ের। এরপর প্রতিটি ওভারেই চার ছয়ের পসরা সাজিয়েছিলেন তিনি। তাঁর টি-টোয়েন্টি ঘরানার ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিলো কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি রেখে এসেছেন বুঝি।
ফারুকীর উপর দিয়েই ঝড়টা বেশি গিয়েছে, অবশ্য নাভিন উল হক, আজমতউল্লাহরাও ছাড় পাননি কোন। মাত্র ৩০ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি পূর্ণ করেন ভারত কাপ্তান – দলের মোট রান তখন মাত্র ৬৮। হাফসেঞ্চুরি করার পর আরো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন তিনি, পরের ১৩ বলে করেন ২৬ রান।
এরপর অবশ্য খানিকটা দেখে শুনে খেলতে শুরু করেন এই ওপেনার। সেঞ্চুরি তুলে নিতে তাই অপেক্ষা করতে হয় ৬৩ বল পর্যন্ত, আর এতেই বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাতটি শতক ঝুলিতে পুরেন তিনি। তাতে বনে যান বিশ্বকাপে ভারতের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান।
দুর্দান্ত এক মাইলফলক স্পর্শ করেও থামার কোন লক্ষ্মণ ছিল না রোহিত শর্মার। তবে রশিদ খানের এক গুগলিতে বোল্ড হয়ে থামতে হয় তাঁকে – যদিও সাজ ঘরে ফেরার আগে কাজের কাজটা করে গিয়েছেন ঠিকই। তাঁর এই অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে শুধু দলই বড় জয় পায়নি, তিনি নিজেও পেয়েছেন পুরো টুর্নামেন্টে রান করার জ্বালানি।