ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে মেহেদি হাসান মিরাজ যখন আউট হন তখন কোন দলকে আপনার ফেভারিট মনে হয়েছিল – সত্যি বলতে শ্রীলঙ্কা সেই মুহুর্তে এগিয়ে ছিল। অতীত পরিসংখ্যান ঘাঁটলেও দেখা যাবে এমন চাপের মুখে তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়ে বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডার। তবে আজকের গল্পটা ভিন্ন, কেননা রিশাদ হোসেন নামের কেউ একজন ছিলেন।
তিনি মাঠে এসেছেন, চারপাশে চোখ বুলিয়ে দেখেছেন এরপর একাই গড়ে দিয়েছেন বাঘ আর সিংহের লড়াইয়ের ভাগ্য। তাঁর অবিশ্বাস্য একটা ক্যামিওতে পিছিয়ে থেকেও অনায়াসে জয় পেয়েছে টাইগাররা – ১৮ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলে শেষপর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তিনি।
৩৭তম ওভারের প্রথম বলেই আউট হন মেহেদি মিরাজ। সফরকারীরা বোধহয় ধরেই নিয়েছিলেন আট নম্বর ব্যাটার চোখ কান বুঝে ডট বল খেলবেন। কিন্তু তাঁদের ধারণা ভুল প্রমাণ করতে নেমেই বিশাল একটা ছক্কা হাঁকান রিশাদ। পরের বলে পরাস্ত হলেও ভাগ্যের কল্যাণে বেঁচে যান তিনি। আর সেটার মাশুল দিতে হয় লঙ্কান লেগ স্পিনারকে।
পরের দুই বলে দুইটি বাউন্ডারি হাঁকান এই তরুণ। ততক্ষণে জয়ের সমীকরণ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। তবে ধৈর্য ধরতে চাননি তিনি, তাই তো হাসারাঙ্গার পরের ওভারে তিনটি চার আর দুইটি ছক্কা মেরে জয় পুরোপুরি নিশ্চিত করেন। অর্থাৎ পুরো ম্যাচে নয় ওভার বল করে এই বোলার যেখানে ৬৫ রান খরচ করেছেন সেখানে তাঁর বিপক্ষে ১১ বলেই দিয়েছেন ৪০ রান।
অবশ্য শেষদিকে মুশফিকের ব্যাটে এজ হয়ে চার না হলে হাফসেঞ্চুরি করার সুযোগ পেতেন টাইগার লেগি। হয়তো লাল সবুজ জার্সিতে দ্রুততম ওয়ানডে হাফসেঞ্চুরির মালিক হতে পারতেন তিনি। যদিও আক্ষেপ থাকার কথা নয় তাঁর মনে, কেননা ম্যাচসেরা হিসেবে তাঁকেই নির্বাচন করা হয়েছে।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে একাই দলকে জেতানোর লড়াই করেছিলেন রিশাদ হোসেন। অসম্ভব একটা জায়গা থেকে চেষ্টা করেও সেদিন পারেননি জয়ের হাসি হাসতে। সেই আক্ষেপও মুছে গেলো আজ, সেই সাথে নতুন সম্ভাবনার সূর্য আরো গাঢ় হয়ে উঁকি দিলো বাংলার আকাশে। পাওয়ার হিটার যে ঘাটতি নিয়ে এত হাহাকার বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে সেটা এবার হয়তো মিটতে যাচ্ছে।