আটটি উইকেট। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনের সারসংক্ষেপ। মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন শেষ চালকের আসনেই ছিল বাংলাদেশ। ৩৬২ রান স্কোরবোর্ডে, পাঁচ উইকেট হাতে।
স্বস্তিই ছিল টাইগারদের শিবিরে। সেই স্বস্তি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নামে। লক্ষ্য মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে ভর করে সংগ্রহ বাড়িয়ে নেওয়া।
কিন্তু প্রথম ঘন্টাও টিকতে পারেনি বাংলাদেশের শেষের দিকের ব্যাটাররা। মাত্র ২০ রান যোগ করে প্যাভিলিয়নে শেষ পাঁচ ব্যাটার। আফগানিস্তানের পেস আক্রমণ যেন এদিন হয়ে ওঠে ভয়ংকর।
মেঘলা আকাশ আর পিচে থাকা ঘাস। দুইয়ের মিশেলে বিপাকে পড়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটাররা। মেহেদী হাসান মিরাজের আউট হয়ে যাওয়াটা যেখানে দৃষ্টিকটু।
বাকিদের দ্রুতই প্যাভিলিয়নে ফেরার তাড়া। সবাই যেন এলেন, দেখার আগেই চলে গেলেন। অন্যদিকে, মুশফিক পরাস্ত হয়েছেন হঠাৎ ওঠা এক বাউন্সারে। বেশ তালবেতাল এক পরিস্থিতিতে সমাপ্তি ঘটে বাংলাদেশের। ৩৮২ রানে অলআউট বাংলাদেশ।
তবে প্রথম সেশনের গল্প সেখানেই শেষ নয়। বাংলাদেশি বোলাররাও তুলে নিয়েছেন কন্ডিশনের ফায়দা। আফগান টপ অর্ডারে হামলা শরিফুল-এবাদতদের। শুরুর আঘাতটা করেন শরিফুল ইসলাম। তুলে নেন ইব্রাহিম জাদরানের উইকেট।
এরপর আবদুল মালিক ও রহমত শাহকে ফেরান এবাদত হোসেন। ৩৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপ মাথায় নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় আফগানিস্তান। স্বস্তি আবার ফেরে বাংলাদেশের ডেরায়।
যেই চাপটা মধাহ্নের আগে প্রয়োগ করা গেছে, সেই চাপটা আর কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পায়নি আফগানিস্তান। দ্বিতীয় সেশনে পাঁচটি উইকেটের পতন আফগানদের। এবাদত আগের সেশনের দুই উইকেটের সাথে আরও দুইটি উইকেট যোগ করেন নিজের নামের পাশে।
শরিফুল, মিরাজ ও তাইজুলের ঝুলিতে যায় একটি করে উইকেট। এদিক থেকে তাসকিন নিজেকে আরও একবার অভাগাই হয়ত ভাবছেন। তার তৈরি করা বেশ কয়েকটি ক্যাচ ফসকে গেছে টাইগারদের হাত।
তাতে এই বোলার দ্বিতীয় সেশন অবধি ছিলেন উইকেট শূন্য। চা-বিরতিতে আফগানদের যেতে হয়েছে ফলো অনের চিন্তার মাথায় নিয়ে।
দ্বিতীয় সেশন শেষে আফগানদের সংগ্রহ ছিল ১৪৪ রানে ৮ উইকেট। সে সংগ্রহ আর বড় করা হয়ে ওঠেনি। হাসমতুল্লাহ শাহীদির সতীর্থদের। চা-বিরতির পর কেবল তিন ওভারে দুই রান যুক্ত করতে পারে আফগান ব্যাটাররা। তাতে দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় সেশনে বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে।
দ্বিতীয় ইনিংসেও দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। যদিও শুরুতেই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে আগের দিনের হাফ সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয়কে। আবারও নাজমুল হোসেন শান্ত চাপটা স্থানান্তর করে দেন আফগনিস্তানের বোলারদের উপর। এবার সাথে সঙ্গী হিসেবে পেয়ে যান জাকির হাসানকে।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন জাকির। তবে এদিন হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যান জাকির হাসান। ঠিক তার পরের বলেই শান্তও পেরিয়ে যান পঞ্চাশ রানের গণ্ডি। দুইজনে মিলে গড়েন ১১৬ রানের জুটি। তাতে বাংলাদেশের লিড গিয়ে দাঁড়ায় ৩৭০ রানে।
দিনের শুরুর বাজে সময়টা ভুলে, ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই ড্রেসিং রুমে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় ব্যতীত অন্যকিছু ভাবার যেন সুযোগই নেই বাংলাদেশের সামনে।
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন সম্ভবত কতদিনে শেষ হবে মিরপুর টেস্ট?