সুইপোলজিস্টের চমক এবার মিরপুরের মাটিতে

সুইপ, রিভার্স সুইপ তাঁর সহজাত শট। এমনকি পেসারদের গতিকেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সে সব শট তিনি মারেন অবলীলায়। এজন্যই তো অজি কিংবদন্তি ডেমিয়েন ফ্লেমিং তাঁকে ‘সুইপোলজিস্ট’ আখ্যা দিয়ে ফেলেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে এরপর থেকে অ্যালেক্স রসের পরিচিতি সুইপ মাস্টার হিসেবে।

এবারের বিগব্যাশেও খেলেছিলেন সিডনি থান্ডারের হয়ে। কিন্তু রাউন্ড রবিনের গণ্ডি না পেরোতে পারায় বিগব্যাশের বাকি অংশে তিনি ছিলেন দর্শকদের সারিতে। অবশ্য অজি এই ক্রিকেটারকে বেশিদিন অবসরে থাকতে হয়নি। ডাক পান বিপিএল থেকে। দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে খেলতে আসেন বিপিএলে। বিপিএলে প্রথম, এমনকি বাংলাদেশেও প্রথমবারের মতো খেলতে আসেন এ ক্রিকেটার।

অবশ্য বিগব্যাশের দুঃস্মৃতিও যেন তাঁকে টেনে এনেছে বিপিএলে। তাঁর দল দুর্দান্ত ঢাকা এখন পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে। কিন্তু এরপরেও ব্যাট হাতে খুব একটা মন্দ কাটেনি এ ব্যাটারের। ৮ ম্যাচের ২ টিতে ফিফটি হাঁকিয়েছেন। যার সর্বশেষটি আসল ফরচুন বরিশালের হয়ে। ৫ চার ও ৩ ছক্কায় খেললেন ৩০ বলে ৫২ রানের ইনিংস।

যদিও রসের ফিফটির দিনেও পরাজয় এড়াতে পারেনি ঢাকা। বরিশালের দেওয়া ১৯০ রানের লক্ষ্যে ১৪৯ রানেই গুঁটিয়ে গেছে তাঁরা। তবে ঢাকার হয়ে এ দিন নিঃসঙ্গ লড়াইটা চালিয়েছেন শুধুই রস। যোগ্য সঙ্গ পাননি। তাঁর সাথে তাল মিলিয়ে কেউ ব্যাটিংটাও করতে পারেননি। তাই শ্লথ রানগতি ম্যাচজয়ের দ্বারটাও বন্ধ করে দেয়। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন একমাত্র অ্যালেক্স রস।

অজি এ ব্যাটার প্রায় শেষ পর্যন্ত ক্রিজে ছিলেন। প্রায় নিস্তেজ হয়ে যাওয়া ম্যাচে ঢাকার গ্যালারিতে প্রাণ এসেছিল তাঁর ব্যাটেই। তবুও অধরা জয়টাই আসেনি ঢাকা শিবিরে। অ্যালেক্স রসের অবশ্য রক্তেই রয়েছে ক্রিকেট। বাবা অ্যাশলি রস ছিলেন নিউজিল্যান্ডের নাগরিক। অস্ট্রেলিয়ার একটা ক্লাবে কোচিং করানোর সুযোগ পান তিনি। আর এরপরই পুরো পরিবার নিউজিল্যান্ড ছেড়ে পাড়ি জমায় অস্ট্রেলিয়ায়।

এরপরই অস্ট্রেলিয়ার স্থায়ীভাবে বসবাস করা শুরু করে রস পরিবার। এ সময়কালে অ্যালেক্স রসের বাবা অ্যাশলি রস উপমহাদেশের কয়েকটি সিরিজে নিউজিল্যান্ডের কোচ হিসেবেও এসেছিলেন। যদিও অ্যালেক্স রসের এমন কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতা এবারই প্রথম। এই অ্যালেক্স রসের আবার বাংলাদেশের সাকিবের সাথেও সুখস্মৃতি আছে। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে সাকিব আর তিনি একই দলে একই মৌসুমে খেলেছিলেন।

 

৩১ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটার রসের স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ার অবশ্য এত ঝলমলে নয়। ১২১ ম্যাচ খেলে ২৭.০৮ গড়ে করেছেন ২২২১ রান। স্ট্রাইকরেট ১২৬.৭৬। কোনো পরিসংখ্যানই মোটেই চোখ আটকে যাওয়ার তো নয়। তবুও অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া লিগে তিনি নিয়মিত মুখ। সুইপ শট দিয়ে আলোচনায় এসেছেন তাড়াতাড়িই। সেভাবে হয়তো ডানা মেলতে পারেননি। তবে সময়ের সাথে তিনি হয়ে উঠছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা।

 

 

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link