জ্যাক পোর্টার, আর্সেনালের বিস্ময়কর এক বালক গোলরক্ষক

বয়স মাত্র ১৬। এ সময়ে ম্যানেজার আরতেতার ওপর এক প্রখর দায়িত্ব বর্তায়। কিভাবে এই তরুণকে গড়ে তুলবেন তার উপরেই নির্ভর করবে ভবিষ্যৎ!

১৬ বছর বয়সে আপনি কি করছিলেন! – ধারাভাষ্যে এমনটাই বলেছিলেন পিটার ড্রুরি। কেন বলেছিলেন? ১৬ বছরের কিশোর বিস্ময় লামিন ইয়ামালের প্রদর্শনেই মুগ্ধতায় ফেটে পড়েন তিনি। তাও ইউরোর মতো বড় পর্দায়। হয়তো আন্তর্জাতিক কাপে নয়। তবে ইংলিশ ফুটবলেও দেখা মিলল এমনই এক কিশোরের। সেটিও কিনা ইএফএল কারাবাও কাপের মতো প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে।

কে এই বিস্ময় বালক? তিনি হচ্ছেন ইংলিশ গোল রক্ষক জ্যাক পোর্টার। জন্ম তাঁর ২০০৮ সালের ১৫ই জুলাই। বয়স মাত্র ১৬ বছর। আর্সেনাল ইতিহাসের কনিষ্ঠতম গোলরক্ষক হিসেবে অভিষেকের (১৬ বছর ৫২ দিন) রেকর্ড গড়লেন এই কিশোর। এখানে আরেকটা চোখে পড়ার মতো জিনিস হচ্ছে তিনি গোলরক্ষক। ভাবা যায় এত ছোট বয়সে এরকম বড় মাপের দলের জার্সিতে অভিষেক!

পোর্টার বাবার দিক থেকে আইরিশ বংশোদ্ভূত। যদিও অনূর্ধ্ব-১৬ এবং ১৭-তে তিনি ইংল্যান্ড দলের গোল সামাল দিয়েছেন। আর্সেনাল অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন ২০২০ সালে। কোচদের কাছে পরিচিতি লাভ করেন, ‘মাঠের ভিতরে ও বাইরে আত্মবিশ্বাসী গোলরক্ষক’ হিসেবে। প্রতিপক্ষ বা দলে বলের অবস্থানের ভিত্তিতে অবস্থান নেবার ক্ষমতা দিয়েই আর্সেনাল কোচিং স্টাফের নজরে আসেন তিনি। এ বছরের জুলাই মাসে অ্যাকাডেমির খেলোয়াড় হিসেবে বৃত্তি পান তিনি। সেই সাথে তকমা পান ‘দ্রুতগামী এবং শট স্টপার’ হিসেবে।

এ বছরে আগস্ট মাসের শেষ দিকে আর্সেনাল অনুর্ধ্ব-২১ দলে অভিষেক করেন তিনি। সেখানে উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্স এর বিরুদ্ধে ৩-১ ব্যাবধানে জয় পায় তাঁর দল। অনুর্ধ্ব- ২১ দলের কোচ মেহমেট আলী জানান যে, তারা যোগ্য খেলোয়াড় দেরই সুযোগ দেন। তিনি আরও জানান জ্যাক অনুর্ধ্ব-১৮ দলেও বেশ ভাল খেলছিলেন। 

জ্যাক আর্সেনালের মূল দলে প্রোমোশন পান এ বছরেরই সেপ্টেম্বর মাসে। এখানে ভাগ্য আসলে কিছুটা সহায় ছিল। আর্সেনালের তৃতীয় গোলরক্ষক ১৮ বছর বয়সী টমি সেটফোর্ড ইনজুরিতে পড়ে। এতে দলে ডাক পান তিনি। আর্সেনালের ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ দলের সাথে তিনিও আতালান্তার বিরুদ্ধে খেলায় উপস্থিত ছিলেন। তবে মূল একাদশে ডাক পাননি।

এরপর আর্সেনাল দলের খেলা পড়ে প্রিমিয়ার লিগ টপার ম্যানচেস্টার সিটির সাথে। ইনজুরি ছিটকে পড়েন ডেভিড রায়া। যিনি দলের মূল গোলরক্ষক। অন্যদিকে, টুর্নামেন্টে প্রথম খেলাতে বোর্নমাউথের সাথে খেলায় খেলেন ২য় কিপার নেটো। কিন্তু কাপ-টাই আইনে বাদ পড়েন তিনি। এমন সময়ে কারাবাও কাপে ডাক পড়ে আরতেতার ‘থার্ড চয়েজ’ গোলরক্ষক জ্যাকের।

৯২ নম্বর জার্সি গায়ে বোল্টন ওয়ান্ডারার্সের বিরুদ্ধে অভিষেক ঘটে পোর্টারের। দিনটি ছিল ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রথম খেলায় ৫-১ ব্যাবধানের বড় জয় পায় তার দল।  নি:সন্দেহে বছরের অন্যতম বিস্ময়কর সন্ধান হতে যাচ্ছে জ্যাক পোর্টার। তবে বয়স মাত্র ১৬। এসময়ে ম্যানেজার আরতেতার ওপর এক প্রখর দায়িত্ব বর্তায়। কিভাবে এই তরুণকে গড়ে তুলবেন তার উপরেই নির্ভর করবে ভবিষ্যৎ!

Share via
Copy link