অ্যাশটন ‘অনুল্লেখ্য’ অ্যাগার

তিনি ঠিক বর্ণাঢ্য কোনো চরিত্র নন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ফ্র্যাঞ্চাইজি দুনিয়ায় তাঁর তেমন বাজারদর নেই। তবে, নিজের দিনে তিনি যে যে কাউকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সক্ষমতা রাখেন সেটা আরেকবার প্রমাণ করলেন অ্যাশটন অ্যাগার।

পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে হেরে সিরিজ জয়ের আশা ক্ষীণ হয়ে এসেছিল অস্ট্রেলিয়ার। তাই বাঁচা মরার ম্যাচে সময় মত জ্বলে উঠেছেন এই অজি স্পিনার। দলকে তো জয় এনে দিয়েছেনই পাশাপাশি করেছেন তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।

এমনকি তার আজকের বোলিং ফিগার অজি যেকোনো বোলারের সেরা বোলিং ইনিংস। শুরুতে অ্যারন ফিঞ্চ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২০৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় অজিরা। তবে নিউজিল্যান্ডও বড় রান তাড়া করতে নেমে ভালোই শুরু করে। কিন্তু অ্যাগ্যারের বিধ্বংসী বোলিং এ তাদের জয়ের আশা ভেস্তে যায়।

এস্টন অ্যাগার আজ প্রথম কোনো অজি বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৬ উইকেট পাওয়ার কীর্তি গড়লেন। ছয় উইকেট লাভ করার জন্য তিনি খরচ করেন মোট ৩০ রান। তিনি প্রথম কোনো অস্ট্রেলিয়ান বোলার হিসেবে এক ইনিংসে ছয় উইকেট পেলেন।

মজার ব্যাপার হল, এর আগেও অজিদের সেরা বোলিং ফিগারের মালিক ও তিনিই। সেটি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জোহানসবার্গে। সে ম্যাচে অ্যাগার ২৪ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। যেটিই ছিল আজকের আগে অজি কোনো বোলারের সেরা টি-টোয়েন্টি বোলিং ফিগার। এছাড়া জেমস ফকনার পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। তারা দুজন বাদে আর কোনো অজি বোলারের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫ উইকেট নেয়ার কীর্তি নেই।

তবে বিশ্ব ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টিতে ছয় উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব রয়েছে মোট চার জনের। সেখানে স্পিনারদেরই আধিপত্ত। চার বেলারের মধ্যে চার জনই স্পিনার। ভারতের দীপক চাহার নাগপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র ৭ রান দিয়েই পেয়েছিলেন ছয় উইকেট। এটিই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সেরা বোলিং ফিগার।

এছাড়া ভারতের আরেক স্পিনার যুজবেন্দ্র  চাহালও পেয়েছিলেন ৬ উইকেট। তবে একমাত্র বোলার হিসেবে দুইবার এক ইনিংসে ৬ উইকেট পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার স্পিনার অজন্তা মেন্ডিস। তিনিই  প্রথম ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৬ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন। তার পরের বছরও তিনি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাত্র ৮ রান দিয়ে তুলে নেন ছয় উইকেট।

আর আজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চতুর্থ বোলার হিসেবে এক ইনিংসে ৬ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন অজি স্পিনার এস্টন অ্যাগার। তিনি এক ওভারের তুলে নেন ফিলিপস, কনওয়ে ও নিশামের উইকেট। তার এই বোলিং এ ভর করে সিরিজের প্রথম জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। এর আগে অ্যারন ফিঞ্চ ৪৪ বলে ৬৯ রানের ঝড়ো সূচনা এনে দেন অজিদের। পরে গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েলের ৩৭ বলে ৭০ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ২০৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। ফলে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে তারা ৬৪ রানে জয় লাভ করে।

এই জয়ের মাধ্যমে সিরিজ জয়ের আশা বাচিয়ে রাখলো অস্ট্রেলিয়া। বর্তমানে অজিরা ৫ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে। সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে পাঁচ মার্চ আবার মুখোমুখি হবে দুই দল। ম্যাচটি উইলিংটন স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২ টায় অনুষ্ঠিত হবে।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ছয় উইকেট পাওয়ার ঘটনা নিয়মিত না ঘটলেও, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এই ঘটনা ঘটে নিয়মিত। কেবল সাকিব আল হাসানই দু’বার করে ছয় উইকেট পেয়েছেন।

একজন আছেন যিনি সাত উইকেটও পেয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে। তিনি হলেন কলিন অ্যাকারম্যান। ডাচ এই অফস্পিনার ২০১৯ সালে ভাইটালিটি ব্লাস্টে সাত উইকেট পেয়েছিলেন লিস্টারশায়ারের বিপক্ষে, বার্মিংহ্যাম বিয়ার্সের বিপক্ষে। সব ধরণের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এটাই সেরা বোলিং ফিগার!

 

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link