ভুলে যাওয়ার সময় হল

শোয়েব আখতার আর বিতর্ক এই দুইয়ে যেন একই সূত্রে গাঁথা।

ক্যারিয়ারে বেশ কয়েকবার তিনি বিতর্কের মুখে পড়েছেন সেই সাথেও শাস্তিও ভোগ করেছেন। এর মধ্যে ২০০৭ বিশ্বকাপের আগে ড্রেসিং রুমে মোহাম্মদ আসিফের সাথে ঘটা বিতর্ক পুরো ক্রিকেট বিশ্বেই সাড়া ফেলে দিয়েছিলো। ক্যারিয়ারে গতির সাথে সাথে বিতর্ক আর ইনজুরি নিয়ে সমান তালে ছুটেছেন তিনি। মোহাম্মদ আসিফকে ব্যাট দিয়ে আঘাত করে বেশ বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ খ্যাত শোয়েব আখতার।

যদিও ২০০৭ সালের সেই ঘটনায় শোয়েব আখতার তাঁর অটোবায়োগ্রাফিতে শহীদ আফ্রিদিকে দোষ দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আফ্রিদি পুরো ড্রেসিং রুমে বেশ বাড়াবাড়ি করছিলো আর আসিফ তাঁকে সমর্থন করছিল। আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ব্যাট ঘুরাই আর আফ্রিদি সরে গেলে তা আসিফের পায়ে আঘাত করে। তবে আমি আমার কাজের জন্য লজ্জিত।’

এরপর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে শোয়েব আখতার এই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। শহীদ আফ্রিদিও তাঁর কথার জবাবে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এমনটা ঘটতে পারে! আসিফ আমার পাশেই ছিলো আমরা মজা করছিলাম আর এরপর এমন কান্ড ঘটে কিন্তু শোয়েবের সুন্দর একটি মন আছে।’

এই ঘটনার পর ২০০৭ বিশ্বকাপের স্কোয়াড থেকেও বাদ পড়েন শোয়েব আক্তার। যদিও তিনি পরবর্তীতে নিজের ভুল স্বীকার করেন, তবে শাস্তিস্বরূপ সেবার বিশ্বকাপের মাঝপথেই তাকে ফিরে আসতে হয়।

তবে শোয়েব আখতারের বার বার মিডিয়ার সামনে এই বিষয়কে আনাটা মোটেও পছন্দ করছেন না সাবেক পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আসিফ। তিনি এই ঘটনা ভুলে যেতে চান এবং শোয়েবকেও এই ঘটনা পেছনে ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন৷ অতীতের ঘটনা টেনে সেটাকে নতুন ইস্যু জন্ম না দিতেই মূলত আসিফ শোয়েবকে বলেছেন। ১৩ বছর আগের সেই ঘটনাকে ভুলে যেতেই শোয়েবকে ডেকে বলেছিলেন আসিফ।

আসিফ সেই বিতর্ক নিয়ে বলেন, ‘শোয়েব আখতারের সাথে ড্রেসিং রুমের ঘটনাটা ২০০৭ সালের। যেটা ১৩ বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। সে এটা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় এখনো মন্তব্য করছে। আমার জন্য যথেষ্ট হয়েছে, তাই আমি তাকে ডেকেছিলাম এবং বলেছি এই ব্যাপারে কথা বলা বন্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে। আমি তাকে বলেছি যেটা হয়েছে ভুলে যাও, এটা এখন অতীত। প্রতিটা সাক্ষাৎকারে এটা নিয়ে কথা না বলে কিভাবে তরুন ক্রিকেটারদের সাহায্যে করা যায় সে ব্যাপারে বলতে বলেছি। সে সবসময়ই স্বপ্ন দেখে! কখনো স্বপ্ন দেখে প্রধান নির্বাচক হবে, কখনো স্বপ্ন দেখে প্রধান কোচ কিংবা পিসিবির চেয়ারম্যান হবে। তাকে এসব স্বপ্ন না দেখে বাস্তবে আসা উচিত হবে এবং ১৩ বছর আগের ঘটনা ভুলে তরুন ক্রিকেটারদের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’

২০০৭ সালে শোয়েব আক্তার ও আসিফের সেই বিতর্ক ক্রিকেট বিশ্বে বেশ হৈচৈ সৃষ্টি করেছিলো৷ এমনকি অনেক পাকিস্তানি ক্রিকেটাররাও শোয়েব আখতারের এমন কাণ্ডে বেশ নাখোশ ছিলো। এজন্য বিশ্বকাপের মাঝ পথেই তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়। অপরদিকে, মোহাম্মদ আসিফ প্রবল সম্ভাবনা নিয়ে এলেও স্পট ফিক্সিং বিতর্কে নিজের ক্যারিয়ার ধূলিসাৎ করে দেন। অন্ধকার জগতে না জড়ালে আজ হয়তো তিনি থাকতেন সেরাদের কাতারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link