অ্যাডাম জাম্পা, কেন রিচার্ডসন অ্যান্ড্রু টাইরা ফিরে গেছেন। তবে, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) থেকে দেশে ফিরে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের সংখ্যাটা সামনের কয়েকটা দিনে আরো বেশি হওয়ার আশঙ্কা ছিল।
বার্তা সংস্থা আইএএনএস জানিয়েছিল, স্টিভেন স্মিথ কিংবা ডেভিড ওয়ার্নার-সহ শীর্ষস্থানীয় অস্টেলিয়ান ক্রিকেটাররা আইপিএল মাঝপথে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন। স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, প্যাট কামিন্স, ডাগ আউটে রিকি পন্টিং, সাইমন ক্যাটিচ, ধারাভাষ্যে ম্যাথু হেইডেন, ব্রেট লি, মাইকেল স্ন্যাটার – বড় বড় নাম জড়িয়ে আছে আছে। সেই বাস্তবতা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর টিম ম্যানেজমেন্ট ও আইপিএল কর্তৃপক্ষ বুঝতে শুরু করেছিল।
অস্ট্রেলিয়া থেকে আইপিএলে আসা খেলোয়াড়দের সংখ্যা নেহায়েৎ কম নয়। তবে, ভারতের চলমান কোভিড ১৯ পরিস্থিতি সম্প্রতি খুব গুরুতর আকার ধারণ করেছে। রোজ হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যা দিনে লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
তার মধ্যে বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) জানিয়েছে আইপিএল তাঁরা চালিয়ে যাবে। নিজেদের জৈব সুরক্ষা বলয়ে সম্পূর্ণ আস্থা আছে তাঁদের। ক্রিস লিনের মত অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার দাবী করেছেন ব্যক্তিগত চার্টার্ড বিমানে করে হলেও অজি ক্রিকেটারদের দেশে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা উচিৎ সরকারের। তিনি বলেন, ‘আমরা আইপিএল খেললে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া চুক্তির ১০ শতাংশ অর্থ পায়। তাতে ব্যক্তিগত বিমানের ব্যবস্থা করা সম্ভব কি না জানতে চেয়েছি বোর্ডের কাছে।’
অস্ট্রেলিয়ার সরকার শঙ্কিত, তবে ক্রিকেটারদের ফেরত নিয়ে নিজেদের ঝুঁকি বাড়াতে চায় না তাঁরা। ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা চলবে অন্তত আগামী ১৫ মে অবধি। ওই সময় পর্যন্ত সব ফ্লাইটও বন্ধ। অস্ট্রেলিয়া সরকার অবশ্য নিজ উদ্যোগে খেলোয়াড়দের দেশে ফেরাতে চায় না।
কথাটা বলেছেন দেশের স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে যারা আইপিএল খেলতে ভারতে আছেন তাঁরা নিজের দায়িত্বে সেখানে গেছেন। এটা তাঁদের ব্যাক্তিগত ভ্রমণ। এটা অস্ট্রেলিয়া দলের কোনো সফর নয়। নিয়মনীতি সব জেনে বুঝেই তাঁরা ওখানে গেছে। ফলে, আমি বিশ্বাস করি ওরা নিজ উদ্যোগে ফিরেও আসতে পারবে।’
তবে, এই ব্যাপারে ভারতের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, ‘অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার, কোচ, ধারাভাষ্যকার – যারা এই মুহূর্তে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) বিভিন্ন ভূমিকায় দায়িত্বরত আছেন – তাঁদের সাথে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আইপিএল কড়া জৈব সুরক্ষা বলয়ের মাঝে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই ব্যাপারে আমরা অস্ট্রেলিয়া সরকারের নীতিমালা মানছি ও পরামর্শ নিচ্ছি। ভাস্ট্রেলিয়ার ভারতীয় দূতাবাসের সাথেও আমাদের যোগাযোগ আছে। তাঁদের মাধ্যমে আমরা সর্বশেষ অবস্থার ব্যাপারে অবগত আছি। এই কঠিন সময়ে আমরা ভারতের মানুষের পাশে আছি।’
আইপিএল শেষ হলে বিসিসিআই নিজ উদ্যোগে বিদেশি ক্রিকেটারদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করবে। সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী হেমাঙ আমিন বলেন, ‘টুর্নামেন্ট শেষ হলে কীভাবে দেশে ফিরবেন – এমন শঙ্কা অনেক বিদেশি ক্রিকেটারের মনেই অছে। তাঁদের এই দুশ্চিন্তা খুব স্বাভাবিক। তবে তাঁদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। খেলোয়াড়দের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিতে বিসিসিআই সবরকম পদক্ষেপ নেবে।’