আজমতউল্লাহ ওমরজাই, দ্য কমপ্লিট প্যাকেজ

আফগানিস্তানের মতোই অনেকটা রূপকথার গল্প লিখছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। বিশ্বকাপের আগেও যার পরিচিতি ছিল একজন বোলিং অলরাউন্ডার, সেই ওমরজাই বিশ্বমঞ্চে এসে রীতিমত ব্যাটিং সক্ষমতার প্রতিচ্ছবি আঁকছেন। বিশ্বকাপ শুরুর আগেও একটি মাত্র ফিফটি ছিল ব্যাটিংয়ের সুখস্মৃতি, সেই ওমরজাই কিনা বিশ্বকাপে এসে হাঁকালেন দুটি ফিফটি। 

আফগান রূপকথা চলছেই। আগের দুই বিশ্বকাপ মিলিয়ে সঙ্গী মাত্র একটি জয়। তাও আবার সেটি ২০১৫ সালে। এরপর ২০১৯ বিশ্বকাপে তো জয়শূন্যই ছিল আফগানরা। সেই আফগানিস্তান কিনা এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে সেমিফাইনালের দৌড়ে। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে যে রূপকথার শুরু হয়েছিল, সেই রূপকথার ডানা মেলেছে পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে।

আফগানিস্তানের মতোই অনেকটা রূপকথার গল্প লিখছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। বিশ্বকাপের আগেও যার পরিচিতি ছিল একজন বোলিং অলরাউন্ডার, সেই ওমরজাই বিশ্বমঞ্চে এসে রীতিমত ব্যাটিং সক্ষমতার প্রতিচ্ছবি আঁকছেন। বিশ্বকাপ শুরুর আগেও একটি মাত্র ফিফটি ছিল ব্যাটিংয়ের সুখস্মৃতি, সেই ওমরজাই কিনা বিশ্বকাপে এসে হাঁকালেন দুটি ফিফটি।

ভারতের বিপক্ষে ৬৯ বলে ৬২ রানের ইনিংসটা দিনশেষে বিফলে গিয়েছিল। ভারতের জয়ে ম্লান হয়েছিল বিশ্বকাপে ওমরজাইয়ের প্রথম ফিফটি। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ দিন ছাপিয়ে গেলেন আগের ইনিংসকেও। ৬ চার আর ৩ ছক্কায় ৬৩ বলে ৭৩ রানের ইনিংস। আর সেই ইনিংসটাই পৌঁছে দিল আফগানিস্তানের জয়ের দুয়ারে।

শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৪২ রানের লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই ছিল। তবুও বিপত্তি বাড়িয়েছিল ১৩১ রানের মাথায় রহমত শাহর বিদায়ে। ঐ উইকেট আফগানিস্তানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়নি ঠিকই, তবে জয়ের পথে হাঁটা দলটাকে একটা ধাক্কা দিয়েছিল ঠিকই। তবে ক্রিজে নেমেই সকল অনিশ্চয়তা, শঙ্কা যেন দূরে ঠেলে দিলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।

উইকেট হারানোর পর কোথায় লঙ্কান বোলাররা আফগানিস্তানের উপর চড়াও হবে, উল্টো ওমরজাই ব্যাট হাতে দেখালেন তাঁর আগ্রাসী রূপ। আফগানিস্তানকে জয়ের পথে এগিয়ে দেওয়ার জন্য ওমরজাই ঐ আগ্রাসী ব্যাটিংই যথেষ্ট ছিল। তবে এ দিন সবার ভাবনা, প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠে ছেড়েছেন এ অলরাউন্ডার। অপরাজিত থেকেছেন ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। আর তিনি ছিলেন বলেই ২৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান।

অবশ্য আজমতউল্লাহ ওমরজাই শুধু ব্যাট হাতেই চমক দেখাননি। বোলিং ইনিংস তিনি তুলে নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি। লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা যখন ব্যক্তিগত অর্ধশতক ছোঁয়ার দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই তাঁর উইকেটটি তুলে নেন ওমরজাই। বিশ্বকাপ জুড়ে পাঁচটা উইকেটও নেন তিনি। ১৯৮৩ সালে ভারতের কপিল দেব কিংবা ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ল্যান্স ক্লুজনারই যেন হয়ে উঠছেন তিনি।

ম্যাচ সেরার পুরস্কারটা গিয়েছে ৪ উইকেট ফজল হক ফারুকির হাতেই। তবে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কাবধের এই যাত্রায় অন্যতম সারথি হয়েই থাকবেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। তবে আফগান রূপকথার মতোও নিশ্চয়ই সবার প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে যাওয়ার দিকে চোখ রাখছেন আফগান এই অলরাউন্ডার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...