এশিয়া কাপ শুরুর আগে সবচাইতে গোছানো দল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল পাকিস্তান দলকে। অন্যান্য দলগুলোর মতো ছিল না কোনো ইনজুরি সমস্যা। তাছাড়া মে মাসের পর থেকে ওয়ানডেতে কোনো পরাজয়ের মুখ না দেখা বাবর আজমের দলটা রীতিমত অপরাজেয় হয়ে উঠেছিল।
তবে চলতি এশিয়া কাপের সুপার ফোরে এসেই ঘটলো ছন্দপতন। টানা ২ হারে ফোরেই থামলো এশিয়া কাপ যাত্রা। শুধু তাই নয়, এই এশিয়া কাপেই ইনজুরি নামক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হলো তাঁরা। আসন্ন বিশ্বকাপ খেলার পথে আশঙ্কার মুখে এখন নাসিম সহ। সব মিলিয়ে সাজানো গোছানো দলটা ঠিক বিশ্বকাপের আগেই যেন খেই হারিয়ে ফেলল।
তবে নতুন খবর হলো, এশিয়া কাপে এমন ভরাডুবির পর পাকিস্তান ড্রেসিংরুমেও দ্বন্দ্বের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কা ম্যাচের পর টিম মিটিংয়ে নাকি বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়েছিলেন অধিনায়ক বাবর আজম ও শাহীন আফ্রিদি। যদিও দলের সিনিয়র এক ক্রিকেটারের আবার দাবী, এমন কিছুই হয়নি।
এবারে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। নেপালকে ২৩৮ রানে হারিয়ে শুরু। এরপরের ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যাক্ত হলেও ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ দারুণ ভুগিয়েছিলেন পাকিস্তানি পেসাররা। এরপর বাংলাদেশকে ১৯৩ রানে হারিয়ে সুপার ফোর দারুণ শুরু করে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের জন্য তখন ফাইনাল সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল। তবে সেটি আর হয়নি। ভারতের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অলিখিত সেমিফাইনালেও হেরে বসে পাকিস্তান। ফলত, সুপার ফোরেই আটকে যায় বাবর আজমের দল।
এরপরই মূলত ড্রেসিংরুমে বাবর ও আফ্রিদির বিতণ্ডার খবর ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানের গণমাধ্যম সূত্র জানাচ্ছে, ঐ ম্যাচের অধিনায়ক বাবর নাকি ড্রেসিংরুমে গিয়ে বলেছিলেন, তাঁর দলের খেলোয়াড়েরা দায়িত্ব নিয়ে খেলছেন না।
আর এ কথার উত্তরেই আফ্রিদি বলেন, ‘অন্তত যারা ভালো ব্যাটিং ও বোলিং করেছে, তাদের কৃতিত্ব দাও।’ আফ্রিদির এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে আবার বাঁকা জবাব দেন বাবর। তিনি বলেন, ‘আমি জানি কে ভালো পারফর্ম করেছে।’ এমতাবস্থায় দুজনের এই বাক-বিতণ্ডা থামান মোহাম্মদ রিজওয়ান।
তবে বাবর – আফ্রিদির এমন বিরোধের মুহূর্তটা আবার এক প্রকার উড়িয়েই দিয়েছে পাকিস্তানের এক সিনিয়র ক্রিকেটার। যিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাকিস্তানের গণমাধ্যম ক্রিকেট পাকিস্তানকে বলেছেন, ‘টিম মিটিংয়ে সবাই তাদের চিন্তাভাবনা শেয়ার করেছিল। ঐ সময়ে বাবর-আফ্রিদির এমন কিছু চোখে পড়েনি ৷ এর কোনো সত্যতা নেই। তাছাড়া ওরা তো ফ্লাইটেই পাকিস্তানে ফিরেছে।’
সামনেই বিশ্বকাপ। এমন বৈশ্বিক আসরের আগে এমন কিছুর সত্যতা মিললে পাকিস্তানের জন্য সেটি নেতিবাচকই বটে। তবে ক্রিকেট বিশ্বে সতীর্থদের মধ্যে বিরোধের ঘটনা তো আর নতুন কিছু নয়৷ তবে বাবর-আফ্রিদির মধ্যকার এমন তিক্ত বিতণ্ডা যেন দীর্ঘসূত্রিতা না পায়, সেটিই এখন চাওয়া পাকিস্তানের সমর্থকদের।