বল বয় থেকে বিশ্বকাঁপানো নায়ক

কেউ কেউ বলে, ফুটবল জীবনের চেয়েও বড়। কিংবা, ফুটবল জীবনের চেয়েও রঙিন, রোমাঞ্চকর। এটা অনেকটা সিনেমার মত। এখানে হাসি, কান্না, আনন্দ-বেদনা, রোমাঞ্চ, থ্রিলার, ট্র্যাজেডি – সবই আছে। ফুটবলের যে বিরাট মঞ্চ – তাঁর সাথে টেক্কা দেওয়ার সাধ্য আর কোনো খেলারই নেই।

ফুটবলারদের জীবনগুলোও ফুটবলের মতই। এখানে গল্পের কোনো শেষ নেই। তাই তো, অনেক ফুটবলারকেই আমরা ইতিহাসের পাতায় পাই যারা উঠে এসেছেন একেবারে শূন্য থেকে। এদের মধ্যে কেউ কেউ বল বয় ছিলেন, নিজের পছন্দের তারকাদের একটু কাছ থেকে দেখেছেন, ছবি তুলেছেন – কালক্রমে সেই ক্ষুদে কিশোররাই হয়ে উঠেছেন মাঠের বিরাট তারকা। এবারকার গল্পটা তাঁদের নিয়ে।

  • রাউল গঞ্জালেস (স্পেন)

ইনি হলেন রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কিংবদন্তিদের একজন। স্পেনের হয়েও তাঁর অর্জনের শেষ নেই। তবে, রিয়ালে অ্যাকাডেমিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি বছর দুয়েক ছিলেন শহরের প্রতিপক্ষ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে। তখন বল বয়ের কাজ করেন। ছবিতে নব্বই দশকের গোঁড়ায় তাঁকে অ্যাটলেটি ফরোয়ার্ড মানোলো’র সাথে দেখা যাচ্ছে।

  • ওয়েন্সলি স্নাইডার (নেদারল্যান্ডস)

ডাচ এই কিংবদন্তি ফরোয়ার্ড ১৯৯১ সালে আয়াক্সের যুব অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন। তখন তাঁর বয়স মাত্র সাত বছর। তখন বল বয়ের কাজ করেন। পরে নেদারল্যান্ডসের হয়ে ১৩১ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন। ছবিতে তাঁকে আরেক গ্রেট ফ্র্যাঙ্ক রাইকার্ডের সাথে দেখা যাচ্ছে।

  • কার্লোস তেভেজ (আর্জেন্টিনা)

আর্জেন্টাইন এই যোদ্ধা ফুটবলারের জীবনে গল্পের কোনো শেষ নেই। একদম আর্জেন্টিনার বস্তি থেকে উঠে এসেছেন তিনি। প্রথমে ঠাঁই হয় বোকা জুনিয়র্সে। স্বভাবতই সেখানে বল বয় ছিলেন। ছবিতে হুয়ান রোমান রিকুয়েলমের সাথে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। ছবিটা নব্বইয়ের শেষ ভাগ কিংবা এরপরের দশকের গোঁড়ায়। মজার ব্যাপার হল এই বোকাতেই পরে খেলোয়াড় হিসেবে কাটানো তেভেজ জাতীয় দলেও এক সময় সতীর্থ হিসেবে পেয়েছেন রিকুয়েলমেকে।

  • ম্যাটেও কোভাচিচ (ক্রোয়েশিয়া)

স্টিভেন জেরার্ড যদি জানতেন তাঁর সাথে কথা বলতে চাওয়া এই ‘পিচ্চি’টাই এক কালে রিয়াল মাদ্রিদ কিংবা চেলসির মত ক্লাবে খেলবে – তাহলে হয়তো এই ইংলিশ গ্রেট এভাবে এড়িয়ে যেতেন না। ছবিটা কোনো এক সময়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচের।

  • আর্দা তুরান (তুরস্ক)

তুরস্কের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার তিনি। বার্সেলোনা থেকে ধারে এখন তিনি খেলেন স্বদেশি ক্লাব ইস্তানবুল বাসাকসেহিরে। ২০০০ সালের গোঁড়ায় তাঁর এই ছবিটা পাওয়া যায়। তিনি গ্যালাতাসারের গোল উদযাপন করছিলেন গোল বারের পেছন থেকে। তাঁর হাতের বলই সেদিন মাঠে তাঁর পরিচয়টা বুঝিয়ে দেয়।

  • আলভারো মোরাতা (স্পেন)

রাউলের মত মোরাতাও ছিলেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের যুব দলে। তিনিও রাউলের মতই এক সময় খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদে। এরপর সেখান থেকে জুভেন্টাস, চেলসি হয়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে ফিরেছিলেনও।

  • পেপ গার্দিওলা (স্পেন)

একদম কিশোর বয়স থেকেই যে পেপ গার্দিওলা বার্সেলোনার ব্যাপারে খুবই ‘প্যাশনেট’ সেটা এই ছবিগুলোই প্রমাণ করে। কাতালান যুব অ্যাকাডেমিতে যখন ছিলেন তখন বল বয় ছিলেন, এরপর দলের হলে লম্বা সময় খেলেছেন, পরে কোচ হয়ে বিশ্বজয় করেছেন। তিনি যেন মিশে আছেন বার্সেলোনার সাথে।

প্রথম ছবিতে তাঁকে বার্সেলোনার শিরোপা উদযাপন করতে দেখা যাচ্ছে ভিক্টর মিউনোজের সাথে, পরের ছবিতে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন কোচ টেরি ভেনাবেলসের পেছনে। ভেনাবেলস আশির দশকের মধ্যভাগে বার্সার কোচ ছিলেন।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link