দুয়ারটা দেখা যাচ্ছে

বসন্তের সকালে কুয়াশা ভেদ করে সাগরিকার আকাশে রক্তিম সূর্যটা আজও উঠেছিলো অন্য দিনের মতোই। প্রখর ও তেজোদীপ্ত লাল সূর্য্য যেমন রুটিন বেঁধে আলো ছড়িয়ে দেয় সর্বত্র; তেমনি চট্টগ্রামে বাংলাদেশের টেস্ট মানেই সব আঁধার কাটিয়ে সেই দীপ্তি আলোতে জ্বল জ্বল করবে মুমিনুলের ব্যাট।

সাগরিকায় মুমিনুল হকের দশম টেস্ট সেঞ্চুরি ও প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে টেস্টের চতুর্থ দিনটাও নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম টেস্টে জয় পেতে এখন শুধুই সময়ের প্রয়োজন স্বাগতিকদের।

এই টেস্টে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩৯৫ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। যেখানে বাংলাদেশের মাটিতে ৩১৭ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের রেকর্ডই নেই। বলা চলে নিজেদের নিরাপদ অবস্থানে নিয়েই ইনিংস ঘোষণা করেছে স্বাগতিকরা।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার কম্বেল ও ব্র্যাথওয়েট ভালো শুরু করলেও মিরাজের ঘূর্ণিতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে সফরকারীরা। দলীয় ৩৯ রানে কম্বেল (২৩) ফিরে যাওয়ার পর একে একে ফিরে যান ব্র্যাথওয়েট (২০) ও মসলে (১২)।

তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে বোনারকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশি স্পিনারদের উপর চওড়া হয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন মায়ার্স। শেষ বিকালে নিরাপদে কাটিয়ে দিয়ে এই জুটি সংগ্রহ করে ৫১ রান। মায়ার্স ৩৭ ও বোনার ১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। টেস্টের শেষ দিনে আগামীকাল জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ৭ উইকেট এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার আরো ২৮৫ রান।

এর আগে দিনের শুরুতে ৩ উইকেটে ৪৭ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। শুরুতেই ১৮ রান করে রাহকিম কর্নওয়ালের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান মুশফিকুর রহিম। এরপর বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন মুমিনুল হক ও লিটন দাস। শুরুতে কাছুটা অস্বস্তিতে থাকলেও পরে স্বচ্ছন্দেই ব্যাট করেছেন দুজন।

মুমিনুল হক ও লিটন দাসের ৫ম উইকেটে ১৩৩ রানের জুটিতেই বড় লিড পায় স্বাগতিকরা। ১১৫ বলে ৬৯ রান করে লিটন ফিরে গেলে ভাঙ্গে এই জুটি। সঙ্গী হারিয়ে পরের ওভারেই বিদায় নেন মুমিনুল হকও। আউট হওয়ার আগে ক্যারিয়ারের দশম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল হক। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে টেস্ট সেঞ্চুরির সংখ্যাকে দুই অংকে রূপ দিয়েছেন মুমিনুল হক। তামিমকে ছাড়িয়ে (৯) টেস্টে সর্বোচ্চ এখন মুমিনুল হকের।

১০ চারে ১৮২ বলে ১১৫ রানের ইনিংস খেলার পথে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে ৩ হাজার রানের এলিট ক্লাবেও প্রবেশ করেছেন মুমিনুল হক।

এর আগে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে ৩ হাজারের বেশী রান করেছেন মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। ৪৪৬৯ রান নিয়ে শীর্ষে রয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ৪৪১৪ রান নিয়ে পরের অবস্থানে আছেন তামিম ইকবাল। তৃতীয় স্থানে থাকা সাকিবের রান ৩৯২৮।

এরপর দ্রুত রান তুলতে গিয়ে ওয়ারিক্যানের এক ওভারেই তাইজুল ইসলাম ও প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মেহেদী হাসান মিরাজ আউট হয়ে গেলে ২২৩ রানে মুমিনুল হক যখন ইনিংস ঘোষণা করে তখন বাংলাদেশ লিড পৌছে যায় ৩৯৪ রানে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ওয়ারিক্যান ও কর্ণওয়াল ৩ টি করে এবং গ্যাব্রিয়েল ২ টি উইকেট শিকার করেন। মাঠে আসলেও চোটের কারণে ব্যাট করতে নামেননি সাকিব আল হাসান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৩০/১০ (১৫০.২)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২৫৯/১০ (৯৬.১)

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২২৩/৮ ডি. (৬৭.৫)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১১০/৩ (৪০) (ব্র্যাথওয়েট- ২০, কম্বেল- ২৩, মসলে- ১২, বোনার- ১৫* মায়ার্স- ৩৭*; মিরাজ- ১৬-২-৫২-৩)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link