ব্যাট বলের খেলা ক্রিকেটে অলৌকিকতার উপস্থিতি কতটুকু এমন ভাবনা নিশ্চয়ই আপনার মনে এসেছে। এক দু’জন না, সত্যি বলতে অনেক ক্রিকেটভক্তই ভাবেন ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য কিংবা কল্পনাতীত ঘটনা ঘটে কি না – বাবা ছেলের এলবিডব্লু কাণ্ড সম্পর্কে জানলে অবশ্য এই ধারণার পক্ষে যুক্তি জোরালো হবে।
২০০৬ সালের কথা, কেনিয়ার ক্রিকেট দল তখন জায়ান্ট কিলার হিসেবে পুরো বিশ্বে পরিচিত। সেই দলটা সেবার মুখোমুখি হয়েছিল তুলনামূলক নতুন বাংলাদেশের। কেনিয়া বনাম বাংলাদেশের ম্যাচের ফলাফল ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার একটা ডেলিভারি, সেই ডেলিভারিতে লেগ বিফোরের ফাঁদে আটকা পড়েছিলেন হিতেশ মোদি।
এলবিডব্লুর শিকার তো হর-হামেশাই হন ব্যাটাররা, তাহলে সেটা এত আলোড়ন সৃষ্টি করলো কেন? মূলত আউটের সিদ্ধান্ত দেয়া আম্পায়ার আর ব্যাটার হিতেশ সম্পর্কে বাবা-ছেলে। সেজন্যই প্রায় দুই যুগ পরেও এসব নিয়ে গল্পে মেতে ওঠে ভক্ত-সমর্থকেরা।
ক্রিকেটের এত দীর্ঘ ইতিহাসে আর কখনোই এমনটা হয়নি, কখনোই কোন বাবা আউট দেননি নিজের ছেলেকে। সে সময় প্রযুক্তির ব্যবহার খুব একটা ছিল না, প্রযুক্তিও এখনকার মত শক্তিশালী ছিল না। হিতেশের বাবা ইচ্ছে করলেই হয়তো বাঁচিয়ে দিতে পারতেন তাঁকে, কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছেন সততার পথ।
অবশ্য কেনিয়ার এই ক্রিকেটার মনে করেন সেদিন তাঁর বাবা আম্পায়ার না থাকলেই বোধহয় ভাল হতো। তিনি বলেন, ‘আমি আউট ছিলাম এবং আমার বাবার সিদ্ধান্ত জানাতে কোন দ্বিধা করেননি। আমার মনে হয় বাবার ম্যাচের আম্পায়ারিং করা উচিত হয়নি যদিও তাঁকে আইসিসি নিযুক্ত করেছিল। যদিও আমি এটা বলতে গর্ববোধ করি যে, আমার বাবা ক্রিকেটের মহৎ খেলা ভালোবাসেন।’
কখনও টেস্ট বা টি-টোয়েন্টি খেলতে না পারা মোদির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার স্থায়ী হয়েছিল ৬৩টি ওয়ানডে ম্যাচ পর্যন্ত। কোন সেঞ্চুরি করতে না পারলেও পাঁচটি ফিফটি করেছেন তিনি, আর সব মিলিয়ে তাঁর মোট সংগ্রহ ছিল ১১০৯ রান। ২০০৬ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই কেনিয়ার জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন এই ব্যাটার।