সাবাইনা পার্ক। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জঘন্য সিরিজ হেরে ভারতের ক্যাপ্টেন পাল্টানো হয়েছে। অভিজ্ঞ সানিকে সরিয়ে যুবক কপিল নতুন কাপ্তেন। সানি নিজের কিছু ব্যক্তিগত কাজের জন্য দেরি করে টিমের সাথে যোগ দিয়েছেন। ম্যাচ শুরুর মাত্র ৪৮ ঘন্টা আগে।
বিসিসিআই টিমের স্টার প্লেয়ারকে এই সুযোগ করে দেওয়ায় সংবাদমাধ্যমে তুমুল লেখালিখিও চলছে। ভারত তিন স্পিনার নিয়ে নামলো স্পিনারদের বধ্যভূমি সাবাইনা পার্কে। শাস্ত্রী, ভেঙ্কট এবং মনিন্দার। লোমহর্ষক চতুর্থ ইনিংসে চলে যাওয়ার আগে দ্রুত ম্যাচের প্রেক্ষাপট আলোচনা করে নেওয়া যাক। ভারত প্রথমে ব্যাট করে ২৫১।
১২৭ রানে ৭ উইকেট থেকে রোমাঞ্চকর উত্থান। যশপাল আর সাঁধুর অষ্টম উইকেটে ১০৭ রানের জুড়িতে ভর করে। রবার্টস ৬১ রানে ৪ উইকেট। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবশ্য বিশেষ সুবিধে করতে পারলো না। তরুণ যুবা রবি শাস্ত্রী দুর্ধর্ষ নিয়ন্ত্রিত স্পিন বোলিং করে ৪৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দিলেন বিপক্ষকে।
কুড়িয়ে বাড়িয়ে মাত্র ৩ রানের লিড পেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ, সৌজন্যে গর্ডন গ্রিনিজের মাটি কামড়ানো ৭০ রান। পরবর্তী বেস্ট স্কোরার ভিভ মাত্র ২৯ – চোট নিয়ে খেলছেন। বাম কাঁধে তুমুল ব্যাথা। কপিল ল্যাজ ছেঁটে ৪৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে শেষ করলেন।
ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে সুনীল গাভাস্কার প্রথম বলেই নিজের লেগস্টাম্প খোয়ালেন হোল্ডিং এর কাছে। চতুর্থ দিনের খেলা বৃষ্টিতে ধুয়ে গ্যালো। পঞ্চমদিনের টি ব্রেকে ভারত ১৬৮ রানে ৬ উইকেট। বুকিরা সবাই ড্র এর পক্ষে বাজি ধরে বসে আছে। ক্রিকেট দেবতা অলক্ষ্যে হাসলেন এবং অ্যান্ডি রবার্টস জ্বলে উঠলেন। ৩৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ওয়াস্ট ইন্ডিজের চতুর্থ ইনিংসের টার্গেট দাঁড় করলালেন ১৭২।
কিন্তু, হাতে মাত্র ২৬ ওভার। মনে রাখবেন ১৯৮৩ সালের কথা – চল্লিশ বছর আগে এটা অবাস্তব, অসম্ভব, অকল্পনীয় বললেও কম বলা হয়। সদ্য অধিনায়ক কপিল আগুন জ্বালিয়ে দিলেন। ডেস্মন্ড হেন্স এবং ক্লাইভ লয়েডকে দ্রুত ফিরিয়ে দিলেন। ভিভের চোটের কারণে ক্লাইভ আগে ব্যাট করতে নেমেছিলেন। গর্ডন গ্রিনিজের প্রতিআক্রমণে খেলা ঘুরতে শুরু করলো। যদিও ৬৬ রানের দ্রুত সেই পার্টনারশীপ শেষ করে দিলেন, আবার সেই কপিল।
ম্যাচের ইকুয়েশন? শেষ ৩ ওভারে ২৭ রান চাই। ভিভ চুইংগামটা আরেকবার ভালো করে চিবিয়ে নিলেন। অমরনাথের ওভার শুরু হলো। দ্বিতীয় বল কিংস্টন ক্লাভের স্ট্যান্ডে আছড়ে পরলো। পরের বল চার। তার পরের বল, আবার উঁচু শট। কপিল লং অফে ক্যাচ ধরে নিলেন। রাজা বিদায় নিলেন ৩৬ বলে ৬১ রান করে। চতুর্থ ইনিংসে। টেস্ট ম্যাচে। ১৯৮৩ সালে।
এরপরের ঘটনা সংক্ষিপ্ত। ২ ওভারে ১০ রান বাকি। কপিল একটি উইকেট নিয়ে ৫ রান দিলেন। অমরনাথ শেষ ওভার করতে এলেন। অনেকেই মনে করেন শেষ ওভার অমরনাথকে দেওয়া কপিলের ঠিক হয় নি। প্রথম ২ বলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ ৫ রান তুলে ফেললো।
২৫ ওভার ২ বলে অর্থাৎ ১৫২ বল খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৭২ রান করেছিলো। এর মধ্যে ভিভ ৩৬ বল খেলে ৬১, স্ট্রাইক রেট ১৬৯। বাকি টিম ১১৬ বল খেলে ১১১ রান।** স্ট্রাইক রেট ৯৬**। কী বুঝলেন?