অথৈ সাগরে বিসিবি, কোচ খুঁজতে হিমশিম!

একটা লম্বা যাত্রার পর বিরতি। খানিকটা নিশ্চুপ চারিদিক। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে পালা বদলের গান। সেই গানে বিষাদ রয়েছে, রয়েছে নতুন দিনের সুর। তবে তার কতটুকু বাস্তবতায় রুপ নেবে সে নিয়ে রয়েছে বেশ সংশয়। শীতের দিনের কুয়াশার মত একটা আবছায়া আবরণও ঘিরে রেখেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে।

সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় কোচিং বহর ছিল বাংলাদেশের। প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে ছিলেন দিগগজ এক একজন কোচ। তবে সবারই মেয়াদ ফুরিয়েছে। নতুন করে অধিকাংশের সাথেই চুক্তিবদ্ধ হতে চাইছে না। অস্ট্রেলিয়ার সাথে বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচের পরই দায়িত্ব ছেড়েছেন পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড।

তাছাড়া দলে দীর্ঘদিন ধরে থাকা অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরণও সেই ম্যাচের পরই ছেড়েছেন বাংলাদেশের ড্রেসিং রুম। মেয়াদ শেষ হচ্ছে স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথেরও। তার প্রতিও আগ্রহ দেখাচ্ছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

এমন এক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ দলকে একসাথে অনুসন্ধান অভিযান পরিচালনা করতে হবে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ দল একটা ট্রানজিশন পিরিয়ড এর মধ্য দিয়ে যেতে শুরু করেছে। আর এমন একটা সময়ে অভিজ্ঞ কোচদেরই প্রয়োজন হবে বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে।

এখন প্রশ্ন জাগতেই পারে, বিসিবি এতগুলো বিকল্প একসাথে কি করে খুঁজে পাবে? সে প্রশ্নের উত্তর অজানা। তবে বিশ্বকাপের মাঝপথে সাকিব আল হাসান দেশে ফিরেছিলেন। তার শৈশবের কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সাথে ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলন করেছেন।

এরপর থেকেই জাতীয় দলের কেন দেশীয় কোচদের প্রাধান্য দেওয়া হয় না, সে নিয়ে প্রশ্ন ছড়িয়েছে চারিদিকে। বিসিবি হয়ত এ দফা দেশীয় কোচদের দিকেই ছুটতে চাইবে। সে যাত্রায় প্রথম পদক্ষেপ অবশ্য দিয়েই ফেলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

রঙ্গনা হেরাথের মেয়াদ শেষ হবে এই মাসের শেষের দিকে। তবে এখনও তিনি বাংলাদেশে ফেরেননি। তাইতো আসন্ন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হওয়া প্রথম টেস্ট ম্যাচে স্পিন বোলিং কোচের দায়িত্বে থাকছেন সোহেল ইসলাম। দেশীয় এক কোচের অধীনের বিশ্বকাপের আগে ক্যাম্প করেছে জাতীয় দলের বিবেচনায় থাকা বেশ কিছু ক্রিকেটার।

তিনি সংযুক্ত হলেও দীর্ঘস্থায়ীভাবে হচ্ছেন সে নিশ্চয়তা এখনই মেলেনি। তবে সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের একটা সুতোয় বাঁধতে হবে। চারজন খেলোয়াড় বছর দুয়েকের মধ্যে ছেড়ে দেবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তাইতো নতুন এক সেট ক্রিকেটারদের গড়ে তুলতে হবে। বেজায় জটিল এক পরিস্থিতির মধ্যে আছে এখন দেশের ক্রিকেট।

এসব কিছুর আগে যোগ্য এক কোচিং প্যানেল গড়ে ফেলা প্রয়োজন। এমনকি জোর গুঞ্জন রয়েছে ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে কাজ করা জেমি সিডন্সও তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিতে পারেন। সেদিক বিবেচনায় জাতীয় দলের জন্যে খেলোয়াড় প্রস্তুত করতে প্রয়োজন হবে মানসম্মত কোচদের। সেদিকটাও ভাবতেই হচ্ছে বিসিবিকে।

অন্যদিকে জাতীয় দলের বর্তমান হেড কোচ চাণ্ডিকা হাতুরুসিংহের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা মহলে অভিযোগ। সেসবের সমাধান করে দীর্ঘমেয়াদে কোচিং প্যানেল নিয়োগ দেওয়াই বিসিবির এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে অথৈ সাগরে পড়ে যাওয়া ক্রিকেট বোর্ড সেখান থেকে পরিত্রাণ কি করে পাবে, সে পথ খোদ বিসিবি-কেই খুঁজে বের করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link