মরক্কো রুপকথায় বেলজিয়ামের স্বর্ণালী যুগের অবসান

সোনালী প্রজন্ম বুড়িয়ে গেছে বেলজিয়ামের। তাই বলে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেবে বেলজিয়াম তা বোধহয় কেউ ভাবেননি। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোল শূন্য ড্র করে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলো গতবারের সেমিফাইনালিস্টরা।

টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে জয়ের বিকল্প ছিলো না বেলজিয়ামের। অন্যদিকে ড্র-ই যথেষ্ট ছিলো গতবারের রানারআপ দের জন্য। এমন সমীকরণে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক দুই দল। ম্যাচের ১০ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ পায় বেলজিয়াম। কিন্তু কারাসকোর শট রুখে দেন ক্রোয়েট গোলরক্ষক। ১৩ মিনিটে বেলজিয়ামের হয়ে ম্যাচের সহজ সুযোগ মিস করেন মার্টেনস। ডি ব্রুইনের বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল গোলবারের উপর দিয়ে মারেন তিনি।

এর ঠিক ৩ মিনিট পরেই আলোচিত মুহূর্তটি আসে বেলজিয়ান ডি বক্সের ভেতর। ক্রোয়েশিয়ার ফ্রি কিক থেকে বল ডি বক্সের ভেতর ঢুকলেও সেখানে ক্রামারিচকে ফাউল করে বসেন কারাসকো। রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু ভিএআর এর মাধ্যমে দেখা যায় পেনাল্টির আগেই অফসাইডে ছিলেন লভরেন। যে কারণে পেনাল্টি বাতিল করে দেন রেফারি। ৩৩ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। এবার লিভায়ার শট গোলবার ঘেষে চলে যায়। ৪৪ তম মিনিটে সসার শট আবারো চলে যায় গোলবারের বাইরে দিয়ে ফলে গোলশূন্য ড্র অবস্থাতেই বিরতিতে যায় দুই দল।

বিরতির পর আরো আক্রমণাত্মক বেলজিয়াম। বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ মিস করে বেলজিয়াম। ৬০ তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামা রোমেলু লুকাকুর শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হলে এবারও এগিয়ে যাওয়া হয়নি বেলজিয়ামের। উল্টো ম্যাচে এগিয়ে যেত পারত ক্রোয়েশিয়া। ৬৮ মিনিটে মদ্রিচের শট অসাধারণ দক্ষতায় কর্তোয়া ফিরিয়ে না দিলে এগিয়ে যেত ক্রোয়েটরা। এরপর আরো বেশ কিছু সহজ সুযোগ মিস করেন রোমেলু লুকাকু। ম্যাচের বাকি সময় তাই খেলায় আর লিড নেয়া হয়নি বেলজিয়ামের।

গোল শূন্য ড্র‍য়ে শেষ হয় ম্যাচ। আর প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয় ফিফা র‍্যাংকিংয়ের দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বেলজিয়ামের।

অন্যদিকে একই গ্রুপের আরেক খেলায় মুখোমুখি হয় মরক্কো আর কানাডা। শেষ ষোলতে যেতে হলে কানাডার বিপক্ষে জিততেই হতো মরক্কোকে। ড্র বা হার তাদের ফেলে দেবে অনিশ্চয়তায়। এমন সমীকরণের ম্যাচে দারুণ শুরুই করে আফ্রিকার প্রতিনিধিরা। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই লিড নেয় মরক্কানরা। একটি আক্রমণ ক্লিয়ার করতে গিয়ে কানাডার গোলরক্ষক বক্সের বাইরে গিয়ে ভুল পাস দেন। বল পেয়ে যান হাকিম জিয়েচ।

তখন ফাঁকা কানাডার গোলপোস্ট। বল পেয়ে কোনো ভুল করেননি হাকিম জিয়েচ। ১-০ গোলের লিড নেয় তাঁরা। ২৩ মিনিটে ব্যাবধান দ্বিগুণ করে মরক্কো। ইউসেফ নেসারির শট কানাডার গোলরক্ষকের হাতের নিচ দিয়ে গোল লাইন অতিক্রম করলে ২-০ গোলের লিড নেয় মরোক্কো। কানাডা ব্যবধান কমিয়েছে ৪০ মিনিটে। তাও মরক্কোর আত্মঘাতি গোলে।

বাম দিক থেকে কানাডার স্যামুয়েল আডোকুজবে যে শট নিয়েছিলেন তাতে পা চালিয়েছিলেন মরক্কোর ডিফেন্ডার নায়েফ আগুয়ার্ড। বল গতি পরিবর্তন করে আশ্রয় নেয় জালে। এটি এই বিশ্বকাপের প্রথম আত্মঘাতি গোল।

দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোল না হলে ২-১ গোলের জয় পায় মরোক্কো। এই জয়ে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের পর প্রথম বার গ্রুপ পর্ব পার হলো মরোক্কো। এই শতাব্দী তে প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে গেলো তারা। রানারআপ হিসেবে তাদের সঙ্গী গতবারের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link