বার্সার কামব্যাকে বেলিংহ্যামের হানা

দুই দফায় পিছিয়ে পড়ে রিয়াল মাদ্রিদের কামব্যাক, গোল লাইন বিতর্ক আর আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণের সংমিশ্রণের এক জম্পেশ লড়াই। সবকিছু মিলিয়ে জাভি হার্নান্দেজ-কার্লো আনচেলত্তি আমলের শেষ ক্লাসিকোটা ছিল মনে রাখার মতই।

টান টান উত্তেজনা আর বিতর্কের মাঝেই শেষ হয়েছে মৌসুমের শেষ এল ক্লাসিকো। ৯১ মিনিটে বেলিংহ্যামের দুর্দান্ত এক গোলে স্বপ্ন ভঙ্গ হয় বার্সেলোনার। মর্যাদার লড়াইয়ে আরো একবার পিছিয়ে পড়ে কাতালানরা। এই নিয়ে মৌসুমে তৃতীয় পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে বার্সেলোনা।

গত কয়েক মৌসুম ধরে এল ক্লাসিকো কেমন একটা আমেজ হারিয়েছিল। তবে রবিবারের ম্যাচটি ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। মাঝখানে উঁকি দিয়েছিল বিতর্ক। তবুও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রিয়াল। আরো একবার লস ব্লাঙ্কোসদের ত্রাতা হিসেবে আগমন ঘটে জ্যুড বেলিংহ্যামের। লা লিগায় প্রথম দেখায় পরাজয়ের পর দ্বিতীয় মোলাকাতে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা ছিল বার্সার।

সে লক্ষ্যে ম্যাচে দুইবার এগিয়েও যায় কাতালান ক্লাবটি। তবে শেষমেষ আর জয়ের দেখা পায়নি তারা। অ্যাওয়ে ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে জাভির শিষ্যরা। দীর্ঘ ৮৮ বছর পর একই মৌসুমে তিনবার কাতালুনিয়ান ক্লাবটি হেরে যায় রিয়াল মাদ্রিদের কাছে।

অবশ্য নিজেদের কিছুটা দুর্ভাগা ভাবতেই পারে বার্সেলোনা। কেননা এই ম্যাচের সবচেয়ে বড় বিতর্ক ২৮ মিনিটে লামিন ইয়ামালের শট। যা কিনা রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিন ফিরিয়েছেন, তবে আপাত দৃষ্টিতে তা গোল লাইনের ভেতর থেকে।

ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবলেও আছে গোললাইন প্রযুক্তি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, সেই একই প্রযুক্তি স্প্যানিশ লা-লিগায় নেই। কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে অতিরিক্ত ব্যয়কে। ইয়ামালের ওই শট লুনিন গোললাইন পেরুবার আগেই ফিরিয়েছেন কি-না তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। গোল লাইন প্রযুক্তি থাকলে হয়ত বার্সার পক্ষে থাকতেও পারত ফলাফল।

এর আগে ম্যাচের ৬ মিনিটের মাথায় লিড পায় কাতালানরা। ডিফেন্ডার আন্দ্রেয়াস ক্রিশ্চেনসেন গোল করেন রাফিনিয়ার কর্নার থেকে। ১২ মিনিট পর ডি-বক্সের ভেতর লুকাস ভাসকেজকে ফাউল করেন পাও কুবার্সি এবং হোয়াও ক্যানসেলো। পেনাল্টিতে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র রিয়ালকে সমতায় ফেরান । ক্রিশ্চিনসেনের বদলি হয়ে নামা ফারমিন লোপেজই বার্সাকে এনে দেন দ্বিতীয় গোল।

৬৯ মিনিটে রিয়াল গোলরক্ষক লুনিন বল ধরতে ব্যর্থ হলে রিবাউন্ডে পাওয়া বল জালে জড়ান লোপেজ। তবে সমতায় ফিরতে রিয়াল সময় নিয়েছে মাত্র চার মিনিট। ৭৩ মিনিটে ভলিতে গোল করেন ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা ভাস্কেজ। পুরো ম্যাচে রিয়ালের তিন গোলের সবকটিতেই ছিলেন ভাসকেজ।

ম্যাচ যখন ড্রয়ের পথে, তখনই বার্সার ত্রাস হয়ে হানা দেন জ্যুড বেলিংহ্যাম। এই মৌসুমে বেশ কয়েকবার শেষ সময়ে গোল করে রিয়ালের ত্রাতা হয়েছেন তিনি। তাঁর ৯১ মিনিটের গোলে স্বপ্নভঙ্গ হয় বার্সার। লুকাস ভাস্কেজের দারুণ এক ক্রস থেকে বল পান বেলিংহ্যাম। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগান এই ইংলিশ তারকা।

গাণিতিক হিসাব বলছে ৩৬ তম লিগ শিরোপার দ্বার প্রান্তে রিয়াল মাদ্রিদ। সেই সাথে লিগ জয়ের স্বপ্নটা রাফিনিয়া, ইয়ামালদের জন্য আরও ফিকে হয়ে গেল। আবারো আশায় বুক বাঁধতে হবে এই কাতলানদের। তবে দর্শকরা চাইবে এমন ক্লাসিকো বারবার ফিরে আসুক। আর উত্তেজনা ছড়িয়ে যাক ফুটবল বিশ্বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link